|
|
|
|
জঙ্গলমহল |
উন্নয়নের উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন রাজ্যের নতুন সরকার জঙ্গলমহলের সার্বিক উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ করতে চায়। কিন্ত জঙ্গলমহলের প্রধান দু’টি ব্লক— বেলপাহাড়ি ও লালগড়ে উন্নয়ন পরিকল্পনা রূপায়িত করার মতো প্রশাসনিক পরিকাঠামোই নেই। বছরের পর বছর ওই দু’টি ব্লকের বেশির ভাগ আধিকারিক ও কর্মীর পদ খালি রয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত বলেন, “পর্যাপ্ত কর্মী না থাকার বিষয়ে রাজ্য সরকারের কাছে সম্প্রতি বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে ব্লকস্তরে আরও বেশি সংখ্যক আধিকারিক ও কর্মী প্রয়োজন তা-ও জানানো হয়েছে।”
আমলাশোলে অনাহারে মৃত্যুর ঘটনার পর অনুন্নয়নের বেলপাহাড়িতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উন্নয়ন-কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বাম-সরকার। ২০০৪ সালে অনাহারে মৃত্যুর পর কেটে গিয়েছে সাত-সাতটি বছর। এখনও পর্যন্ত প্রশাসনিক পরিকাঠামোই গড়ে তোলা যায়নি আদিবাসী অধ্যুষিত এই ব্লকে। গুরুত্বপূর্ণ একাধিক আধিকারিকের পদ খালি থাকায় উন্নয়ন পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ছে স্থানীয় প্রশাসন। বেলপাহাড়ি ব্লকের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক দরিদ্র আদিবাসী সম্প্রদায়ের। অথচ ব্লকের খাদ্য ও খ্যদ্য সরবরাহ পরিদর্শক পদটি দীর্ঘদিন যাবৎ শূন্য রয়েছে। সপ্তাহ খানেক আগে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বেলপাহাড়িতে এসে খাদ্য সরবরাহ পরিষেবার উন্নতির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। প্রশাসনিক মহলের একাংশের বক্তব্য, ব্লকের খাদ্য পরিদর্শক না থাকায় বিভিন্ন এলাকায় রেশন পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ বাড়ছে। আদিবাসী অধ্যুষিত এই ব্লকে অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ পরিদর্শকের পদটিও খালি থাকায় আদিবাসীদের জাতিগত শংসাপত্র ও সংশ্লিষ্ট পরিষেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে বিলম্ব হচ্ছে। বেলপাহাড়ি ব্লক অফিসে আধিকারিক ও কর্মীর মোট পদের সংখ্যা ৮৪টি। কিন্তু আছে মাত্র ৩৮ জন। গুরুত্বপূর্ণ ৪৬টি পদে আধিকারিক ও কর্মী নেই। কয়েক বছর আগেও ছিলেন দু’জন জয়েন্ট বিডিও। এখন আছেন এক জন। অনগ্রসর এলাকায় একশো দিনের কাজের রূপায়ণ ও তদারকির জন্য বাড়তি এক জন জয়েন্ট বিডিও দেওয়া হয়েছিল। বছর খানেক হতে চলল ওই জয়েন্ট বিডিও বদলি হওয়ার পর পদটিতে নতুন কাউকে পাঠানো হয় নি। পাশাপাশি, একশো দিনের কাজের প্রকল্পের দায়িত্ব প্রাপ্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোগ্রাম অফিসার না থাকায় কাজের গতি মন্থর হচ্ছে বলে অভিযোগ। ব্লকের সিংহভাগ মানুষের স্থায়ী রুজিরুটির বন্দোবস্ত নেই। ত্রাণের চাল, টাকা বা পোষাকের জন্য নিত্যদিনই বহু মানুষ আসেন ব্লক অফিসে। কিন্তু রিলিফ অফিসার পদটি খালি। ফলে ত্রাণের চাল ও টাকা পাওয়ার জন্য আগতদের দীর্ঘক্ষণ প্রতীক্ষা করতে হয়। কৃষিসেচ বিভাগের সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার (এসএই), স্বল্প সঞ্চয় আধিকারিক, সমবায় পরিদর্শকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদগুলি শূন্য।
লালগড় ব্লক অফিসেও বিগত দেড় থেকে দু’বছর যাবৎ রিলিফ অফিসার, অন্যতম এক জয়েন্ট বিডিও (একশো দিনের কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত), একশো দিনের কাজের প্রকল্পের দায়িত্ব প্রাপ্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোগ্রাম অফিসারের পদগুলি শূন্য রয়েছে। ব্লক স্তরের বিভিন্ন বিভাগের সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারের (এসএই) ৫ টি পদ খালি। লালগড়ে ব্লকে আছেন মাত্র ১ জন সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার (এসএই)। এসএই পদগুলি শূন্য থাকার সিংহভাগ প্রকল্পের পরিকল্পনা ও রূপায়নের কাজ কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে।
ওই দু’টি ব্লকের পঞ্চায়েত স্তরের নির্মাণ সহায়কের পদগুলিও ক্রমশ খালি হয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, মাওবাদী প্রভাবিত এলাকায় কাজ করতে না চাওয়ায় বেলপাহাড়ি ও লালগড়ের মতে ব্লকগুলিতে শূন্য পদ গুলি পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। গত বছর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে সংশ্লিষ্ট ব্লক গুলিতে বদলির আদেশনামা জারি হওয়া সত্ত্বেও তা কার্যকর করা যায়নি। তবে প্রশাসন সূত্রে খবর, অবিলম্বে শূন্য পদগুলিতে কর্মী নিয়োগের ব্যাপারে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছে নতুন সরকার। এখন দেখার সেই আশ্বাস কত দিনে বাস্তবায়িত হয়।
ব্যবসায়ীদের দাবি। একগুচ্ছ দাবিতে বুধবার এগরার পুরপ্রধানের কাছে স্মারকলিপি দিল সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড ব্যবসায়ী সমিতি। তাদের অভিযোগ, পূর্ণাঙ্গ বাসস্ট্যান্ড গড়ে না ওঠায় ব্যবসায়ীরা লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছেন না। বাসস্ট্যান্ডে পরিকাঠামোগত প্রচুর সমস্যাও রয়েছে। |
|
|
|
|
|