|
|
|
|
ভাতা না পেয়ে সমস্যায় মানুষ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আমতা |
তিন মাস আগে থেকে ‘ইন্দিরা গাঁধী জাতীয় বার্ধক্যভাতা’-র টাকা এসে পড়ে রয়েছে ব্যাঙ্কে। অথচ তা প্রাপকেরা হাতে পাচ্ছেন না। টাকার জন্য দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী বয়স্ক মানুষেরা এক বার যাচ্ছেন পঞ্চায়েতে, এক বার যাচ্ছেন ব্যাঙ্কে। গত মার্চ মাস থেকে তাঁরা শুধু আশ্বাসই পেয়ে যাচ্ছেন। চিত্রটি আমতা ১ ব্লকের সিরাজবাটি পঞ্চায়েতের।
একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সিরাজবাটি শাখা থেকেই এই ভাতার টাকা দেওয়ার কথা। ব্যাঙ্ক সূত্রে জানানো হয়েছে, ব্লক প্রশাসন থেকে যে চেক তাদের কাছে পাঠানো হয়েছিল সেটি পাওয়া যাচ্ছিল না। তার ফলেই সমস্যা হয়। ব্যাঙ্কের এই শাখার এক পদস্থ আধিকারিক অবশ্য জানান, চেকটি পাওয়া গিয়েছে। এ বার প্রাপকদের টাকা দিয়ে দেওয়া হবে। যদিও শনিবার পর্যন্ত তেমনটা ঘটেনি।
ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, এই পঞ্চায়েতে দারিদ্রসীমার নীচে রয়েছেন ২২৮ জন বয়স্ক প্রাপক। জেলা পরিষদ থেকে ভাতার টাকার চেক পাঠানো হয় ব্লকে। ব্লক প্রশাসন থেকে সেই চেক পাঠিয়ে দেয় সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কে। গত ২৫ মার্চ ২২৮ জনের তিন মাসের ভাতা বাবদ ২ লক্ষ ৭২ হাজার টাকার চেক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কটির সিরাজবাটি শাখায় পাঠিয়ে দেয় ব্লক প্রশাসন। পর দিনই প্রাপকদের হাতে সরাসরি ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে নামের তালিকা মিলিয়ে টাকা তুলে দেওয়ার কথা। সেই মতো, পঞ্চায়েতের কাছ থেকে খবর পেয়ে প্রাপকেরা ব্যাঙ্কে যান। কিন্তু তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়, টাকা দেওয়া হবে যাবে না।
বিষয়টি পঞ্চায়েতে জানানো হলে তাঁরা ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ব্লক প্রশাসনের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকেরা ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁদের বলা হয়, নামের তালিকায় কিছু ভুল রয়েছে। সেটি সংশোধন করে আনতে হবে। সেই মতো, নামের তালিকাটি ব্যাঙ্ক থেকে তুলে এনে তা সংশোধনের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয় পঞ্চায়েতে। প্রধান সিপিএমের প্রদীপ মণ্ডল বলেন, “আমরা নামের তালিকা সংশোধন করে দ্রুত তা পাঠিয়ে দিই ব্লকে।”
ব্লক থেকে সেই সংশোধিত নামের তালিকা ব্যাঙ্কে পাঠাতে কিছুটা অবশ্য দেরি হয়। এ বিষয়ে ব্লক প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা জানান, ইতিমধ্যে বিধানসভা নির্বাচন চলে আসার ফলেই দেরি হয়েছে। গত ২৫ মে সংশোধিত তালিকা পাঠানো হয় ব্যাঙ্কে। তার পর থেকে শুরু হয় ব্যাঙ্কের গড়িমসি।
প্রধান বলেন, “ব্লকে কিছুটা দেরি হয়। তার পরে যদিও বা ব্যাঙ্কে সংশোধিত তালিকা জমা দেওয়া হল তার পরেও প্রাপকেরা টাকা পাচ্ছে না।” ব্লকের পক্ষ থেকে এই বিষয়টিতে ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক তরুণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি সংশোধিত নামের তালিকা ব্যাঙ্কে জমা দিয়েছিলাম। তার পরে কিছুদিন ছুটিতে ছিলাম। এসে শুনলাম ভাতা পেতে কিছু সমস্যা হয়েছে। কেন হল খোঁজ নেব।”
ব্যাঙ্কের তরফ থেকে জানানো হয়, যে কর্মীর দায়িত্বে চেকটি ছিল তিনি বদলি হয়ে যান। ফলে চেক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তার ফলেই সমস্যা হয়। তবে চেক খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। প্রধান বলেন, “প্রাপকেরা আমাদের কাছে প্রতিদিন টাকার জন্য খোঁজ করতে আসছেন। আমরা তাঁদের কোনও সদুত্তর দিতে পারছি না।” অন্য দিকে কংগ্রেস নেতা আফতাবুদ্দিন মণ্ডল বলেন, “আমরাও শুনেছি ব্যাঙ্ক থেকে চেক হারিয়ে যাওয়ার ফলেই ঘটনাটি ঘটেছে। এটা ন্যক্কারজনক।” |
|
|
|
|
|