টার্মিনাস সুনসান, রাস্তার উপরেই ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকে দুর্গাপুরে
রাস্তার পাশে সার দিয়ে লরি দাঁড়িয়ে থাকায় বেড়েছে যানজট। এই যানজটের সমস্যার সমাধানের জন্যই দুর্গাপুরে বছর পাঁচেক আগে বানানো হয়েছিল দু’টি ট্রাক টার্মিনাস। কিন্তু টার্মিনাসে ট্রাক রাখার ‘ফি’ বাঁচাতে তা ব্যবহারই করছেন না অধিকাংশ লরি ও ট্রাক চালক। ফলে, যানজটের সমস্যা তো কমেইনি, উপরন্তু যে কারণে ট্রাক টার্মিনাস গড়া হয়েছিল তা বিশ বাঁও জলে। টার্মিনাস সুনসান। অথচ রাস্তা জুড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে সার সার ট্রাক। যানজটে জেরবার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, চালকেরা যাতে টার্মিনাসে ট্রাক ও লরি রাখেন সেই নিয়ে একাধিক সচেতনতা শিবির করা হয়েছে। তবে তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বাধ্য হয়েই এবার টার্মিনাসের বাইরে ট্রাক রাখা হলে জরিমানা ধার্য করার কথা ভাবছে পুরসভা।
শিল্পায়নের হাত ধরে ঘুরে দাঁড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দুর্গাপুরে লরির সংখ্যা এক ধাক্কায় বেড়ে গিয়েছে বহুগুণ। একের পর এক কল-কারখানা গড়ে উঠেছে। কারখানায় কাঁচামাল ও উৎপাদিত পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য প্রতি দিন শ’য়ে শ’য়ে লরি শহরে যাতায়াত করে। তা ছাড়া বিভিন্ন বাজারে রোজকার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও সব্জি সরবরাহ করার জন্যও লরি রয়েছে। এই সব লরি শহরের বিভিন্ন রাস্তার ধারেই দাঁড়িয়ে থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এর ফলে রাস্তায় বাড়ছে যানজট। ভারি লরি দাঁড়িয়ে থাকায় এবং লরি জল দিয়ে ধোওয়ার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় রাস্তার পিচও। এই সমস্যা মেটানোর জন্য বছর পাঁচেক আগে পুরসভার পক্ষ থেকে দু’টি ট্রাক টার্মিনাস গড়ে তোলা হয়। একটি সগরভাঙায় এবং অন্যটি ডিপিএলের উল্টোদিকে, বিসি রায় রোডে।
ছবি: বিকাশ মশান।
কিন্তু টার্মিনাসে লরি প্রায় ঢোকেই না বলে জানালেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অভিযোগ, ট্রাক টার্মিনাসে লরি রাখার ভাড়া বাঁচাতে লরিগুলি দাঁড়িয়ে থাকে রাস্তাতেই। সারা দিন ওই সব রাস্তায় যানজট লেগেই রয়েছে। রাস্তায় লরিগুলি দাঁড়িয়ে থাকার ফলে রাস্তাও অনেক সময়ে বসে যায় বলে দাবি করলেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
অবিলম্বে এই পরিস্থিতি বদলের দাবি জানিয়েছেন এলাকার মানুষ। সগরভাঙার টার্মিনাসে গিয়ে দেখা গিয়েছে, টার্মিনাসটি একেবারেই ফাঁকা। তবে সংলগ্ন রাস্তায় দাঁড়িয়ে রয়েছে বহু লরি। দু’টি পোট্রোল পাম্প চত্বরেও দাঁড়িয়ে রয়েছে বেশ কয়েকটি লরি। বিসি রায় রোডের ট্রাক টার্মিনাসের ছবিটাও কার্যত একই রকম।
পুরসভার কাছ থেকে টেন্ডার নিয়ে টার্মিনাস চালানো ঠিকাদার সংস্থা সূত্রে জানানো হয়েছে, লরিগুলি টার্মিনাসে না ঢোকায় তাদের পক্ষে টার্মিনাস চালানো সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। টার্মিনাসে লরি রাখার জন্য ৫০ থেকে ৭০ টাকা দিতে হয়। কিন্তু সেই টাকা বাঁচাতে চান লরির চালকেরা। ফলে তাদের লোকসান হচ্ছে। অন্য দিকে, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রাস্তাঘাট। অসুবিধায় পড়ছেন শহরবাসী। অবিলম্বে এই পরিস্থিতি পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছে ঠিকাদার সংস্থা।
পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, দুর্গাপুরের রাস্তাঘাট চওড়া ও ফাঁকা। ফলে বছরের পর বছর রাস্তার ধারেই লরি দাঁড় করিয়ে রাখতেন চালকেরা। তাতে এত দিন খুব একটা অসুবিধা হয়নি। কিন্তু শিল্পায়নের ফলে যেমন শহরে লরির যাতায়াত বহুগুণ বেড়েছে তেমনই বেড়েছে শহরের জনসংখ্যাও। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মোটরবাইক ও অন্য যানবাহনের সংখ্যা। ফলে রাস্তায় লরি দাঁড়িয়ে থাকায় তৈরি হচ্ছে যানজট। অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
ট্রাক টার্মিনাসে লরি রাখার বিষয়টি নিয়ে চালকদের সড়গড় করতে তাঁদের নিয়ে বেশ কয়েকবার সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করা হয়। সেখানে অনেক লরিচালকই ট্রাক টার্মিনাসে লরি রাখার পক্ষে মত দিয়েছিলেন। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে সেভাবে সাড়া মেলেনি। রাস্তায় লরি দাঁড়িয়ে থাকায় যানজট তৈরি ও সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা স্বীকার করে মেয়র রথীন রায় বলেন, “বহুবার বলেও কোনও লাভ হয়নি। বাধ্য হয়েই পুরসভা এ বার জরিমানা আদায়ের মতো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের কথা চিন্তা-ভাবনা করছে।”
Previous Story Bardhaman Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.