|
|
|
|
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনের জের |
|
মমতার নির্দেশে যন্ত্র এনে
প্রাণরক্ষা নবজাতকের
নিজস্ব সংবাদদাতা² কলকাতা |
|
জেলার প্রধান হাসপাতাল। অথচ অসুস্থ সদ্যোজাতের পরিচর্যার ব্যবস্থা নেই। নেই নবজাতকের শরীর গরম করার ‘রেডিয়েন্ট ওয়ার্মার’-ও। কম ওজনের অসুস্থ শিশুর জন্ম হলে রাতবিরেতেই তাকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ‘রেফার’ করে দায় সারছে হাওড়া জেলা হাসপাতাল।
এ ভাবেই জন্মের পরে বিনা চিকিৎসা, বিনা পরিচর্যায় হাসপাতালে পড়ে ছিলেন কৃষ্ণা পোড়েল এবং তার সদ্যোজাত ছেলে। কম ওজনের অসুস্থ শিশুটি জন্মের পরে ১০ ঘণ্টারও বেশি মায়ের দুধটুকুও খেতে পারেনি। আনন্দবাজার পত্রিকায় সেই খবর প্রকাশিত হওয়ার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রবিবার সকালেই হাওড়া হাসপাতালে পৌঁছে যান স্বাস্থ্য দফতরের উচ্চপদস্থ কর্তারা। যন্ত্রপাতি আনিয়ে, চিকিৎসক ডেকে শিশুটির প্রাণ রক্ষা করা হয়।
হাসপাতালের যে-চিকিৎসক শিশুটিকে মেডিক্যালে ‘রেফার’ করেছিলেন, নিজেদের মুখরক্ষায় এখন তাঁকে শো-কজ করে দায় সারতে চাইছেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু অভিযুক্ত সেই চিকিৎসক পাল্টা প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন, হাসপাতালে যখন শিশুদের পরিষেবা দেওয়ার ন্যূনতম পরিকাঠামোই নেই, তখন কোন ভরসায় তিনি অসুস্থ সদ্যোজাতকে সেখানে ফেলে রেখে দেবেন? তাকে অন্যত্র ‘রেফার’ না-করে উপায় কী?
হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষ বা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা এর উত্তর দিতে পারেননি। রাতের বেলা জন্মের পরে হাসপাতালের কোনও শিশু-চিকিৎসক ওই নবজাতককে দেখলেন না কেন? সাকার মেশিন দিয়ে মায়ের দুধ সংগ্রহ করে শিশুকে খাওয়ানোর ব্যবস্থাই বা করা হল না কেন? ওই হাসপাতালের সুপার শুভ্রাংশু চক্রবর্তীর উত্তর, “আমি এর কারণ জানি না। বলতে পারব না।” হাওড়া হাসপাতালে যে নিওনেটাল কেয়ার বা নবজাতকের পরিচর্যার কোনও ব্যবস্থা নেই এবং সেপ্টেম্বরের আগে তা হওয়ারও কোনও সম্ভাবনা নেই, সেটা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্যের পরিবার কল্যাণ অফিসার জ্যোতির্ময় চাকী।
তা হলে ওই হাসপাতালে জন্মের পরে শিশুর সমস্যা দেখা দিলে তার চিকিৎসার কী হবে?
জ্যোতির্ময়বাবু বলেন, “নবজাতক অসুস্থ হলে বা কম ওজনের হলে আপাতত তাকে মেডিক্যালেই পাঠাতে হবে।” যে-প্রসূতি ও নবজাতককে মেডিক্যালে ‘রেফার’ করা হচ্ছে, তাঁদের সেখানে নিয়ে যাওয়ার গাড়ির কী হল? রাজ্যের পরিবার কল্যাণ অফিসার জানিয়ে দিয়েছেন, দরপত্র ডেকে সেই গাড়ি কিনতেও এখনও দেরি আছে। অতএব মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে আপাতত কৃষ্ণাদেবীর শিশুটির প্রাণরক্ষা হলেও হাওড়া জেলার প্রধান হাসপাতালে নবজাতকদের সমস্যা যে-তিমিরে ছিল, সেই তিমিরেই থেকে গেল। |
|
|
|
|
|