বঙ্গ-রঙ্গ
নূন্যতম
চার দিকে অফ-হোয়াইট দেওয়াল। এক পাশে অশ্বক্ষুরাকৃতি টেবিল। তার রং-ও সাদাটে। টেবিলের উল্টো দিকে এক কোণায় স্ট্যান্ডের উপর বসানো পেল্লায় এলইডি টিভি। স্বাভাবিক যে, তাতে সারাক্ষণ নিউজ চ্যানেল চলছে। নিজের বসার চেয়ারটি তো কাঠের বটেই। অতিথিদের চেয়ারও। দফতরের সচিব গৌতম সান্যালের ঘরে যাওয়ার দরজার পাশে অ্যাকোরিয়াম। নীল রংয়ের জলের বাসিন্দা আপাতত চারটি রঙিন মাছ। এক পাশের দেওয়ালে নিজের বাড়ি থেকে খুলে এক গুণগ্রাহীর এনে দেওয়া পূর্ণাবয়ব এবং অপেক্ষাকৃত তরুণ রবীন্দ্রনাথ। অতিথিরা যে দরজা দিয়ে ঢোকেন, তার উপর একটা গোলাকৃতি সাদা ডায়ালের বড়সড় দেওয়াল ঘড়ি। ঘরের অন্য কোণায় একটা সাদা পেডেস্টাল ফ্যান। এই হল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতর। তাঁর মতোই প্রায় ‘নিরাভরণ’। জাপানি রাষ্ট্রদূত এসে নাকি দেখে চমৎকৃত। বলে গিয়েছেন, এমন কোনও মুখ্যমন্ত্রীর ঘর ভারতে আর দেখেছেন বলে মনে করতে পারছেন না। তাঁর কথায়, “মিনিম্যালিস্টিক!”

আপন খেয়ালে
অদ্ভুত দর্শন একটা জিপ। আজকাল বড় একটা দেখা যায় না এমন মডেল। তায় আবার ঝাড়খণ্ডের নাম্বার প্লেট! চালকের পাশে একটিই আসন। যেখানে বসছেন তিনি। পিছনে আড়াআড়ি দু’টো লম্বা সিট। সামনের বাঁ দিকের আসনের মাথার কাছে ‘টানা-পাখা’। আসলে পুঁচকে ফ্যান। কিন্তু ‘টানা’। কারণ, দড়ি দিয়ে টানলে পাখা চালু হয়! মন্ত্রিত্ব থাকাকালীন বরাদ্দ শীতাতপ-নিয়ন্ত্রিত এসইউভি চলে যাওয়ার পরে এমনই জিপে চেপে সিপিএম রাজ্য কমিটির বৈঠকে হাজির হলেন আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা। কৌতূহলীদের বললেন, “কলটা বেশ ভাল! পানাগড় থেকে আনানো।” এমনিতে স্বভাবসিদ্ধ হাসিখুশিই আছেন। কিন্তু শরীরটা ভোগাচ্ছে। হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। পেসমেকার বসাতে হবে। যথেষ্ট জটিল অস্ত্রোপচার। রেজ্জাককে দেখে অবশ্য বোঝার উপায় নেই। পরিচিত সাংবাদিকরা দলের কাজকর্ম নিয়ে প্রশ্ন করলে বলছেন, “তোমরাই আমাকে মারবে নাকি?”

স্বনির্ভর গোষ্ঠী
স্পিকার নির্বাচনের জন্য সদ্যগঠিত বিধানসভার প্রথম অধিবেশন। বিরোধী দলনেতার ঘরে সূর্যকান্ত মিশ্র। তার লাগোয়া ঘরে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রথম বারের জন্য বামফ্রন্টের বিধায়কেরা। বিধানসভা কক্ষে সূর্যবাবুর পাশে প্রথম সারিতে যাঁরা আসন পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা একটু আগেই বেরিয়ে গিয়েছেন। বাকি দু’জনের মধ্যে প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষ মন্ত্রিসভার আর এক প্রাক্তন সহকর্মী আনিসুর রহমানের দিকে হাত নেড়ে বলে গেলেন, “আসি তা হলে। এখন তো স্বনির্ভর গোষ্ঠী!” আনিসুর বিদায় জানিয়ে সংযোজন করলেন, “হ্যাঁ, হ্যা। স্বনির্ভর গোষ্ঠীই ঠিক!” ব্যাপার কী? রহস্য ভাঙলেন এক বাম বিধায়ক। এলাকায় এলাকায় যে ভাবে মারের মুখে পড়ছেন বাম কর্মী-সমর্থক বা স্থানীয় নেতারা, তাতে টিকে থাকা নাকি দায়! আর এখন তো রক্ষা করার জন্য ‘হেড কোয়ার্টার’ নেই। অতএব ‘স্বনির্ভর গোষ্ঠী’ গড়েই মোকাবিলা করতে হবে!

শুধু সম্মাননীয়
উড়ান ধরার আগে বিমানবন্দরের সংরক্ষিত লাউঞ্জে বসেছিলেন সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ সীতারাম ইয়েচুরি। বিদেশি বাণিজ্যিক দূতাবাসের এক কর্তা চেনা মুখ দেখে এগিয়ে এসে হাত মেলালেন, শুভেচ্ছা বিনিময় হল। একটু পরে চেক-ইন করানোর জন্য সেই কূটনীতিককে নিতে এলেন বিমানবন্দরের এক প্রতিনিধি। সুভদ্র কূটনীতিক ইয়েচুরিকে বললেন, “আপনিও আমার সঙ্গে চলুন না।” হাজির-জবাব ইয়েচুরির তৎক্ষণাৎ সবিনয় উত্তর, “না, না। আপনি ‘হিজ এক্সিলেন্সি’! আপনি যান! আমরা শুধু ‘অনারেব্ল’!”

দিদি-মমতা
মহা ফাঁপরে মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের অফিসারেরা। কেননা, তাঁদের ‘ম্যাডাম’ সম্বোধন করতে বারবার বারণ করছেন মুখ্যমন্ত্রী। করেই চলেছেন। বরং বলছেন, “দিদি বলুন না!” এহ বাহ্য, পরিচিত সাংবাদিক দেখলে অনুযোগ করছেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা কেন লিখছেন? শুধু মমতা লিখুন না!” তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করা গেল, রাজ্যের মানুষের ভোটে তিনি মুখ্যমন্ত্রীই বটে। সম্ভ্রমের ‘ম্যাডাম’ও। আর ‘মমতা’ বা ‘দিদি’ নন। কিন্তু কে শুনছে কার কথা! তিনি বলেই চলেছেন, “এ সব বড্ড ফর্মাল সম্বোধন। আমার ভাল লাগে না। তার চেয়ে দিদি বা মমতা অনেক ভাল। সেটাতেই আমি বেশি স্বচ্ছন্দ!”
Previous Story Rajya First Page



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.