|
|
|
|
দম্পতি খুনে অভিযুক্ত সিপিএম নেত্রী, স্বামী |
সামসুল হুদা ² গোসাবা |
দম্পতিকে পিটিয়ে মারার ঘটনায় জড়িয়ে গেল সিপিএমের লোকাল কমিটির সম্পাদক ও তাঁর স্বামীর নাম।
শনিবার গোসাবা থানার বটতলি গ্রামে নিহত হন স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক তরুণ হালদার (৩৭) ও স্ত্রী কৃষ্ণা হালদার (৩২)। ওই দম্পতির এক প্রতিবেশী থানায় যে অভিযোগ দায়ের করেছেন, তাতে সিপিএমের গোসাবা-২ লোকাল কমিটির সম্পাদক মহরম নেছা ও তাঁর স্বামী হাকিম মোল্লা-সহ আরও কয়েক জনের নাম আছে। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ। দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা বলেন, “হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এলাকায় তল্লাশি চলছে। বাকি অভিযুক্তদেরও ধরা হবে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বটতলি প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক তরুণবাবুর সঙ্গে গ্রাম শিক্ষা কমিটির সভাপতি হাকিম মোল্লার বিরোধ চলছিল। স্কুলের উন্নয়নের টাকা ও মিড-ডে মিলের টাকা তাঁর হাতে তুলে দিতে তরুণবাবুর উপরে হাকিম চাপ দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। সে সময়ে গোটা বিষয়টি জানিয়ে থানায় অভিযোগও করেছিলেন তরুণবাবু। দুর্নীতির অভিযোগে হাকিম মোল্লাকে সিপিএম দল থেকে বহিষ্কার করলেও এলাকায় তাঁর প্রভাব আছে যথেষ্টই। ওই লোকাল কমিটির সম্পাদক এক সময় ছিলেন হাকিমই। পরে তাঁর স্ত্রীকে ওই পদে আনে সিপিএম। |
|
হাসপাতালে দম্পতির দেহ। নিজস্ব চিত্র |
এ দিন নিজের বাড়িতে বসে সদ্য মা-বাবা হারানো নবম শ্রেণির ছাত্র লাবণ্য হালদারের অভিযোগ, “শনিবার আমাদের বাড়িতে প্রতিবেশী শ্যামলী সর্দারের হাঁস ঢুকে পড়াকে ঘিরে গোলমাল হয়। সেই গোলমালের সুযোগ নিয়ে হাকিম মোল্লা দলবল নিয়ে বাড়িতে চড়াও হয়। বাবা-মাকে ওরা বেধড়ক পেটায়। আমাকে মারতে এলে পালিয়ে যাই। হাকিম মোল্লার ভয়েই গ্রামের কেউ বাবা-মাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি।” বলতে বলতে কাঁদতে শুরু করে সে। নিহত তরুণবাবুর বোন মিতা মণ্ডল বলেন, “দাদা সাহসী ও প্রতিবাদী চরিত্রের মানুষ ছিলেন। তাই তাঁকে খুন হতে হল।”
নিহত কৃষ্ণাদেবীর ভাই বলরাম দাস বলেন, “জামাইবাবুর সঙ্গে স্কুলের টাকা নিয়ে একটা সমস্যা চলছিল। তা নিয়ে তিনি খুব চিন্তা করতেন।” স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর বলেন, “এই খুনের ঘটনায় হাকিম মোল্লা জড়িত বলে জানতে পেরেছি। পুলিশকে নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। দুর্নীতিতে সায় না দেওয়ায় পরিকল্পিত ভাবে এক শিক্ষক ও তাঁর স্ত্রীকে পিটিয়ে মারা সত্যিই বর্বরোচিত।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুজন চক্রবর্তীর অবশ্য দাবি, “ঘটনার কথা শুনেছি। তবে দলের কেউ ওই ঘটনায় জড়িত নয়।” হাকিম মোল্লাকে এ দিন এলাকায় পাওয়া যায়নি। তাঁর মোবাইলও বন্ধ ছিল। তাঁর স্ত্রী অবশ্য ফোনে দাবি করেছেন, “সব অভিযোগ মিথ্যা। আমাকে আর আমার স্বামীকে ফাঁসানো হচ্ছে।” |
|
|
|
|
|