বন্ধ নির্মাণ
বিকল্পের সন্ধানে
বিকল্প ব্যবস্থাও বন্ধ হয়ে গেল।
দীর্ঘ দিন বেলিলিয়াস রোডে নিকাশি সংস্কারের কাজ চলছে। যান চলাচল বন্ধ। ফলে প্রচণ্ড সমস্যায় পড়েছেন ছাত্রছাত্রী থেকে ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দাবি মেনে ইস্ট-ওয়েস্ট রোড ও বেলিলিয়াস রোডের সংযোগকারী বিকল্প রাস্তা তৈরির কাজ শুরু করেছিল এইচআইটি। কিন্তু সে কাজও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এইচআইটি কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, স্থানীয় বাসিন্দাদের আপত্তিতে কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন
স্থানীয় বাসিন্দারা।
২০০৭-এ বেলিলিয়াস রোডের ভূগর্ভস্থ নিকাশি নালা তৈরির কাজে হাত দিয়েছিল এইচআইটি। ২০১০-এর মে-এর মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনও সেই কাজ শেষ হয়নি। ফলে স্থানীয় বাসিন্দা, ব্যবসায়ী ও ছাত্রছাত্রীরা প্রচণ্ড সমস্যায় ভুগছেন। বেলিলিয়াস রোডের ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য মানস দাস বলেন, “প্রায় চার বছর বেলিলিয়াস রোডে বড় লরি ও ট্রাক ঢুকতে পারছে না। ঠেলাগাড়ি, রিকশা, ট্রলি ভ্যানে করে ইস্ট-ওয়েস্ট রোডের বেলিলিয়াস পার্কের কাছে দাঁড়ানো লরি থেকে মাল আনাতে হয়। ফলে, খরচ অনেক বেড়ে গিয়েছে। খরচ সামলাতে না পেরে অনেকে ব্যবসা বন্ধ রেখেছেন।” ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক জগদীশ শর্মা বলেন, “একটি বিকল্প রাস্তা গড়ে তোলার জন্য এইচআইটি এবং পুরসভার কাছে বহু বার
আবেদন করেছিলাম।”
বন্ধ রয়েছে এই রাস্তা তৈরির কাজ

বেলিলিয়াস রোড হাওড়া পুরসভার ২১, ২২ এবং ২৩ নম্বর ওয়ার্ড ছুঁয়ে গিয়েছে। এলাকায় রয়েছে বেশ কয়েকটি স্কুল এবং একটি কলেজ। স্থানীয় কলেজ ছাত্রী চুমকি খাতুনের কথায়: “আগে বেলিলিয়াস রোড দিয়ে বাস চলত। এখন ইস্ট-ওয়েস্ট রোডে টিকিয়ারপাড়া-বেলিলিয়াস পার্ক স্টপে নেমে হেঁটে আসতে হয়। সামান্য বৃষ্টিতেই জল-কাদায় ভরে যায়।” এইচআইটি-র চিফ ইঞ্জিনিয়ার শিখরেশ দত্ত বলেন, “২০০৭-এ জেএনএনইউআরএম-এর আওতায় প্রকল্পটি অনুমোদন পায়। কাজের অগ্রগতি আশানুরূপ না-হওয়ায় নির্মাণকারী সংস্থার টেন্ডার বাতিল করে নতুন করে টেন্ডার ডাকা হয়। তার পরে আবার কাজ
শুরু হয়েছে।”
এইচআইটি সূত্রে খবর, স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি মেনে বিকল্প রাস্তা তৈরির কাজে হাত দেওয়া হয়। পরিকল্পনা অনুসারে এই রাস্তা ৬০০ মিটার লম্বা এবং ৭ মিটার চওড়া হওয়ার কথা ছিল। রাজ্য সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রক থেকে রাস্তাটি তৈরির জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছিল। ব্যয় ধরা হয়েছিল ২৯ লক্ষ ২২ হাজার টাকা। মে মাসে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাসিন্দাদের আপত্তিতে কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “কোনওমতে কাজ হচ্ছিল। কাজের মান নিয়েও সংশয় ছিল। তবে আমরা রাস্তা তৈরির কাজ বন্ধ করার কথা বলিনি। এইচআইটিই কাজ বন্ধ করে দেয়।” ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূলের গোপাল পাত্র বলেন, “ভোটের আগে লোক দেখানোর জন্য কাজ শুরু হয়েছিল। ভোট মিটে যাওয়ার পরে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।” ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিপিএমের প্রণতি পাখিরা বললেন, “আমাকে কিছু না জানিয়ে এইচআইটি কাজ শুরু করেছিল। ফলে এই রাস্তা সম্পর্কে আমি কিছু জানি না।”
অভিযোগ অস্বীকার করে শিখরেশবাবু বলেন, “বাসিন্দাদের আপত্তিতেই কাজ বন্ধ রয়েছে। সমস্যা সমাধানের জন্য চিন্তা-ভাবনা চলছে।” মেয়র মমতা জয়সোয়াল বলেন, “এ সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।”

ছবি রণজিৎ নন্দী
Previous Story

Howrah

Next Story




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.