সোমবার নদীর উৎসমুখ সংস্কারের দাবি নিয়ে রাজ্যের সেচ ও জলপথ দফতরের প্রতিমন্ত্রী শ্যামল মণ্ডলের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয় পশ্চিমবঙ্গ ইছামতী নদী সংস্কার সহায়তা কমিটির তরফে। যাঁরা ১৯৯৭ সাল থেকে ইছামতীর পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের দাবি নিয়ে আন্দোলন করে আসছেন। এ দিন সংগঠনের তরফে নদীর একটি বেসিন মানচিত্রও তৈরির দাবি জানানো হয়েছে মন্ত্রীর কাছে। শ্যামলবাবু বলেন, “ইছামতী নদীর উৎসমুখ সংস্কারের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটা আমাদের করতেই হবে।” প্রসঙ্গত, নদিয়ার মাজদিয়ার পাবাখালি থেকে উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদ পর্যন্ত প্রায় ২০৮ কিলোমিটার ইছামতী নদী। পাবাখালিতে মাথাভাঙা নদী থেকে ইছামতীর সৃষ্টি হলেও বহুবছর ধরেই কার্যত ইছামতীর কোনও উৎসমুখ নেই। কমিটি এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাবাখালি থেকে স্থানীয় ভজনঘাট পর্যন্ত প্রায় নয় কিলোমিটার অংশে নদীতে জলের কোনও অস্তিত্ব নেই। চরা পড়ে যাওয়ায় তার উপর দিয়ে চলাচল করছেন ওই এলাকার মানুষজন। চলছে যানবাহন। এমনকী চাষবাসও।
কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৪০ সালে পাবাখালিতে রেলের একটি সেতু তৈরি হয়। ওই সময় নদীর মধ্যে লোহার পাত দিয়ে বাঁধ দেওয়া হয়। ১৯৫০ সালে সেতুর উদ্বোধন হলেও সেই বাঁধ আর খুলে দেওয়া হয়নি। ফলে মাথাভাঙা নদী থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ইছামতী নদী।
কমিটির সম্পাদক সুভাষ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “নদীর মালিক রাজ্যের সেচ ও জলপথ দফতর। অতীতে বহুবার রাজ্যে সরকারের কাছে ইছামতী নদীর উৎসমুখ সংস্কারের দাবি জানানো হলেও তারা কর্ণপাত করেনি। উৎসমুখ সংস্কার না করে বিক্ষিপ্ত ভাবে এখানে-ওখানে সংস্কার করা হলে অর্থেরই অপচয় হবে। সমস্যার কোনও সুরাহা হবে না। আমাদের আশা নতুন সরকার এ ব্যাপারে উদ্যোগী হবেন।”
২০০৫ সালে রাজ্য সরকারের তরফে গাইগাটার কালাঞ্চি সেতু থেকে স্বরূপনগরের তেঁতুলিয়া সেতু পর্যন্ত প্রায় ২৪ কিলোমিটার নদীপথের সংস্কার করা হয়। নদীর বুক থেকে পলি তুলে রাখা হয়েছিল নদীর পাড়েই। কিন্তু বর্ষায় সেই পলি ধুয়ে ফের নদীবক্ষে মিশে যায়। ফলে নদী সংস্কারের সুফল নিয়েই উঠে যায় প্রশ্ন। বর্তমানে ওই এলাকায় পলি জমে ফের নাব্যতা হারিয়েছে ইছামতী। সেই সুযোগে ফের নদীবক্ষে বসেছে ভেচাল। |