রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গ দু’হাত তুলে মমতাদেবীকে স্বাগত জানিয়েছে এবং বিধানসভায় বামফ্রন্ট প্রায় ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গেছে, তাতে কোনও সন্দেহই নেই। নির্বাচনী প্রচারে বামফ্রন্ট নেতারা যতই অষ্টম বামফ্রন্ট সরকার গঠনের গল্পকথা শোনান না কেন, বামফ্রন্টের পরাজয় প্রত্যাশিতই ছিল। ২০০৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ধাক্কা খাওয়ার পর তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে বি-পি-এল কার্ড বা ১০০ দিনের কাজের মতো জনবাদী কার্যক্রম দিয়ে জমি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা বা ২০০৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর গৌতম দেব কথিত ‘ঘুরে দাঁড়ানো’-র প্রয়াস কোনও কম্মেই লাগেনি। নির্বাচনী ফল প্রকাশের আগে এই পত্রিকাতেই আমি লিখেছিলাম যে ‘বামফ্রন্টের নির্ণায়ক জয়ের অর্থ হল, বিজ্ঞানের পরাজয়, ইতিহাসের পরাজয়। কারণ, ইতিহাসের শিক্ষা হল, যে-সব নেতা ভুল করেছেন, সেই ভুলের দায় তাঁদেরই নিতে হয়। রেজিমেন্টেড কোনও দলে নিজেদের ভুল নেতারা নেতৃত্বে থেকে নিজেরাই সংশোধন করে নিয়েছেন এবং তা লোকগ্রাহ্য হয়েছে, এমন কোনও নজির ইতিহাসে নেই ... রাজ্য জুড়ে যে ভয়ংকর শক্তির উত্থান ঘটছে, তার প্রতিরোধে আমার কাছে বামপন্থীদের জয় কাম্য। কিন্তু দেখেশুনে মনে হচ্ছে, রেজিমেন্টেড পার্টির অবিমৃশ্যকারিতাতেই তা পণ্ড হতে চলেছে।’ (‘এই আতিশয্য উদ্বেগজনক’, ১২-৫) কিন্তু বামফ্রন্টের পরাজয় প্রত্যাশিত হলেও পরাজয়ের এই মাত্রা অভাবিত ছিল, বরং প্রত্যাশিত ছিল এক হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। আমি অন্তত ভেবেছিলাম যে, যে উদার অর্থনীতির প্রকোপে দেশ জুড়ে লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি, অভূতপূর্ব দুর্নীতি, কৃষকদের আত্মহত্যা ইত্যাদি অনিবার্য হয়েছে, রাজ্যে সেই নীতির পক্ষে মমতাদেবীর সুচতুর অবস্থান জোটের সমর্থনভিত্তিকে দুর্বল করবে। বাস্তবে এ সব জনমানসে কোনও দাগ কাটেনি। আসলে এই বিষয়গুলি তেমন ভাবে নির্বাচনী প্রচারেও আসেনি, মানুষের অভিজ্ঞতাতেও ছিল না। ভাবা গিয়েছিল যে, রাজ্যের অর্ধেকের বেশি পঞ্চায়েতে, বিশেষ করে দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের অপদার্থতা, দুর্নীতি, খেয়োখেয়ি ও হামলাবাজিতে যে ভাবে তাদের চরিত্র উন্মোচিত হয়েছে, তাতে তৃণমূল কংগ্রেসের আবেদন দুর্বল হবে। কিন্তু দেখা গেল যে, লোকসভার তুলনায় ভোট কমলেও, তৃণমূল কংগ্রেসের দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৩১টির মধ্যে ২৭টি ও পূর্ব মেদিনীপুরে ১৬টি আসনের মধ্যে সব ক’টিই দখল করেছে। বামফ্রন্ট কোনও লড়াই দিতে পারেনি। আসলে পঞ্চায়েতের ব্যর্থতাকে মানুষজন স্থানীয় নেতাদের দুর্বলতা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন, তৃণমূল কংগ্রেস সামগ্রিক ভাবে কোনও চ্যালেঞ্জের মুখেই পড়েনি।
ক্ষমতাসীন হওয়ার পর এখন কিন্তু জোট সরকার সেই চ্যালেঞ্জের সামনে পড়বে। সরকারের বয়স মাত্র সাত দিন। এখন মধুযামিনী কাল। সঙ্গত ভাবেই এখন কথায় ও কাজে অসঙ্গতির অপ্রিয় প্রসঙ্গ উঠবে না, বা হাসপাতাল অধিকর্তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই আকস্মিক সাসপেনশনের হঠকারী সিদ্ধান্ত ধামাচাপা পড়ে যাবে। তবু প্রাসঙ্গিক থেকে যায় এই প্রশ্ন যে, বিপুল জনাদেশ ও সংবাদমাধ্যমের কুণ্ঠাহীন সমর্থন নিয়েও অঢেল নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ও মানুষের বিপুল প্রত্যাশাজাত চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় মমতাদেবীর সরকারের জয়যাত্রার শুভসূচনা হল কি? প্রভাতেই তো মালুম হয় দিন কেমন যাবে! সংবাদমাধ্যম অবশ্য জোট সরকারের দশ দিনের রিপোর্ট কার্ডকে শুভসূচনা হিসেবেই চিহ্নিত করেছে চ্যানেলের আলোচনায় প্রতিষ্ঠিত সাংবাদিক মমতাদেবীকে ১০-এর মধ্যে ১১ নম্বর দিয়েছেন! |
কিন্তু নিরপেক্ষ ভাবনায় এই যাত্রারম্ভকে খুব একটা শুভসূচনা বলা যাচ্ছে না। একে তো পূর্বঘোষণা মতো ব্রিগেড মাঠে সনিয়া-মনমোহনের উপস্থিতিতে শপথগ্রহণের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত না হওয়ায় এবং ছোট মন্ত্রিসভার প্রতিশ্রুতি রক্ষিত না হওয়ায় জোট সরকারের প্রাথমিক পদক্ষেপ হোঁচট খেয়েছে। তার ওপর মন্ত্রিসভায় দাগ-ধরা লোকজনের বিপুল উপস্থিতি অনেকেরই চোখে পড়েছে। তবে রাজনৈতিক অংক ঠিকই আছে সবচেয়ে অভিজ্ঞ দক্ষ প্রশাসক সুব্রত মুখোপাধ্যায় যেমন ক্ষমতা অনুশীলনের কেন্দ্র মহাকরণ থেকে নির্বাসিত হয়েছেন, তেমনই অধুনা কংগ্রেসের সক্রিয় নেতা মানস ভুঁইয়ার স্থান হয়েছে সেচ ভবনে। মমতাদেবীকে ঘিরে গণউন্মাদনা আগের মতোই বহাল রয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতাদেবীর অতিসক্রিয়তা মানুষজনের নজর কেড়েছে, কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে দক্ষ একটি টিম হিসেবে মন্ত্রিসভা এখনও উঠে আসেনি, অনুসৃত কর্মপদ্ধতিতে তার কোনও অবকাশ নেই। আশংকা এখানেই। শেষমেশ মন্ত্রিসভার সদস্যরা কর্মহীন উদ্ভ্রান্ত দঙ্গলে না পরিণত হয়। অথচ মমতাদেবীর আশু প্রতিশ্রুতি পালনের জটিল দায়ভার নিতে দরকার একটি শক্তপোক্ত অভিজ্ঞ টিমই।
লক্ষণীয় যে, এই সব আশু-প্রতিশ্রুতিগুলি কোনও ছোটখাটো সরল ব্যাপার নয়। এগুলি হল
এক, সিঙ্গুরে ‘অনিচ্ছুক’ কৃষকদের ৪০০ একর জমি ফেরত দেওয়া।
দুই, যৌথবাহিনী প্রত্যাহার তথা জঙ্গলমহলের সমস্যার সমাধান।
তিন, পাহাড়ের সমস্যার সমাধান।
চার, রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি। লক্ষণীয় যে, আইনি জটিলতায় প্রতিশ্রুতি মতো সিঙ্গুর চুক্তি প্রকাশ করা যায়নি। সিঙ্গুরের প্রশ্নে জটিলতা হল অধিগৃহীত জমি ফেরতের কোনও ধারা আইনে নেই। আইন বদলে জমি ফেরতের পথ নিলে রাজ্য জুড়ে অধিগৃহীত জমি ফেরতের দাবি উঠিয়ে যে প্যান্ডোরার বাক্স খুলে দেওয়া হবে, তাতে রাজ্যে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি অনিবার্য। জঙ্গলমহলের প্রশ্নে উন্নয়ন প্যাকেজ দিয়ে সমাধান হবে না, কারণ মাওবাদীদের অ্যাজেন্ডায় উন্নয়ন প্যাকেজের দাবি নেই, আছে রাজনৈতিক ক্ষমতার প্রশ্ন। যৌথবাহিনী প্রত্যাহার অবশ্যই কাম্য। কিন্তু এ ক্ষেত্রে জটিলতা হল, যৌথবাহিনী প্রত্যাহার করা হলে জঙ্গলমহলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েমের কোনও নিশ্চয়তা নেই। যৌথবাহিনী প্রত্যাহারের দায় কেন্দ্রের ঘাড়েও চাপানো যাবে না, কারণ রাজ্য না চাইলে যৌথবাহিনী রাখার কোনও এক্তিয়ার কেন্দ্রের নেই। পাহাড়ে সমস্যার ক্ষেত্রে বর্ধিত উন্নয়ন প্যাকেজ নিয়ে আলোচনা হতেই পারে। কিন্তু গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা জানিয়ে দিয়েছে যে, গোর্খাল্যান্ডের দাবি নিয়ে কোনও সমঝোতা করা যাবে না। রাজনৈতিক বন্দিমুক্তির প্রশ্নটি তুলনায় সহজ। কিন্তু সেখানে জটিলতা হল, ১৯৭৭ সালে বামফ্রন্ট যে ভাবে তখন রাজনৈতিক বন্দির মামলা প্রত্যাহার করে,
সেই পথে রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দিলে সি পি আই এমের নেতা-কর্মীদের মুক্তি দিতে হয়। সে ক্ষেত্রে সূচপুর মামলায় সদ্য সাজাপ্রাপ্তদের মুক্তি অনিবার্য হয়। কোনও রিভিউ কমিটির ছাঁকনি ব্যবহার করলে আমরা-ওরা
বিভাজন ঘটে এবং দলতন্ত্র বনাম গণতন্ত্র আওয়াজটিই অকেজো হয়ে যায়।
আসলে, বিরোধী অবস্থান থেকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া যত সহজ, ক্ষমতাসীন হয়ে তা পূরণের দায়ভার বহন করা ততটাই কঠিন। তাই রাজ্য পরিচালনা দাবি করে টিম স্পিরিট, টিম কালচার। এটি একক ব্যক্তির উদ্যোগ বা অতিসক্রিয়তার ব্যাপার নয়। বোঝার কথা হল, wisdom lies in collectivity. অবশ্য এই নিয়ে শেষ কথা বলার সময় এখনও আসেনি। লক্ষণীয় যে, অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ দফতর মমতাদেবী নিজের হাতেই রেখেছেন। তাই মনে হয় যে, সব দেখেশুনে তিনি একে-একে দায়ভার যোগ্য হস্তে সমর্পণ করবেন। তত দিন এই প্রশ্নচিহ্ন রয়ে যাবে।
আসলে, প্রশাসনিক কর্মসূচি নিয়ে এত মাথাব্যথার কারণ হল, প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড আটকে গেলে রাজনৈতিক কর্মসূচি অনিবার্য হয়ে উঠবে। আর ক্ষমতাসীন হওয়ার পর তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনৈতিক কর্মসূচির কথা আমি আগেই বহু বার বলেছি। যেগুলি হল, এক, বেআইনি অস্ত্র উদ্ধারের নামে বামপন্থী আন্দোলনের জঙ্গি অংশকে দমন করা। দুই, বামপন্থীদের যারা মদত দেয়, বেআইনি অর্থ উদ্ধারের নামে তাদের নিয়ন্ত্রণে আনা। তিন, বামপন্থীদের প্রাসাদোপম পার্টি অফিসগুলি দখল করতে জনসাধারণকে প্ররোচিত করা। ইতিমধ্যেই বেআইনি অস্ত্র উদ্ধারের নামে সারা রাজ্যে বিশেষত গ্রামবাংলায় যে তাণ্ডব চলছে, তার খণ্ডচিত্র প্রায়শই সংবাদমাধ্যমে চুঁইয়ে পড়ছে। অন্য দু’টি অনেকের কষ্টকল্পিত মনে হতে পারে। তাঁদের অবগতির জন্য জানাই, তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় মুখপত্রের প্রতিবেদনে এর সুস্পষ্ট পরিচয় পেয়েছি।
অন্য দিকে, বামফ্রন্ট নেতারা প্রায়শই নির্বাচনে এক কোটি পঁচানব্বই লক্ষ প্রাপ্ত ভোট নিয়ে গর্ব করেন; সেই সংখ্যার দ্রুত অবক্ষয় ঘটে চলেছে। এর অনিবার্য ফল হবে এটাই যে, মমতাদেবী যখন রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন এক বছর এগিয়ে এনে ২০১২-তে করবেন, তখন অর্ধেক আসনে বামপন্থীরা প্রার্থী দিতেই পারবেন না!
এই নির্মম বাস্তবের সামনে বামপন্থীদের করণীয় কী? এক কোটি পঁচানব্বই লক্ষের সমর্থন ধরে রাখার জন্য দরকার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেববাবু, নির্বাচনী প্রচারে পরিচিত মুখ গৌতম দেব, বিরোধী নেতা সূর্যকান্তবাবুদের গ্রামবাংলায় আক্রান্ত মানুষদের পাশে দাঁড়ানো। পরিবতের্ তাঁরা মেট্রো চ্যানেল ও রাসমণি রোডের সুরক্ষিত সভায় ‘প্রতিবাদ’ করে দায় সারছেন। দেখেশুনে মনে হচ্ছে রাজ্যে বাম নেতারা অপেক্ষার লাইন নিয়েছেন মমতাদেবীর ব্যর্থতার জন্য অপেক্ষা। মমতাদেবী ‘ফাউল’ করবেন আর বাম নেতারা রেফারির বাঁশি বাজিয়ে মানুষকে সচেতন করবেন! তৃণমূল কংগ্রেসের নৈরাজ্যে অতিষ্ঠ মানুষ তাঁদের নিয়ে আসবেন! এই চিন্তার ভ্রান্তি হল এটাই যে, রেজিমেন্টেড পার্টিকে মানুষজন যে প্রত্যাখ্যান করেছেন, সেটাকে তাঁরা সাময়িক ভাবছেন। অথচ, সারসত্য হল, পশ্চিমবঙ্গ কেরল নয় এখানে রেজিমেন্টেড পার্টির কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই। দীর্ঘদিন দেখার পর মানুষ তাঁদের বাতিল করে দিয়েছেন। অপেক্ষার পথ ধরে তাঁরা আর কোনও দিনই ক্ষমতায় ফিরবেন না।
সাম্প্রতিক ইতিহাস বিচার করলেই এই বক্তব্যের সত্যতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ২০০৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ব্যর্থতাকে বাম নেতারা এই ভাবেই সাময়িক ভেবেছিলেন। আশা ছিল ২০০৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে সামলে নেবেন। লোকসভার বিপর্যয়ের পর দু’বছর ধরে অপেক্ষায় লাইন দিয়ে তাঁরা কালহরণ করে অবশেষে ২০১১ সালে ধুয়েমুছে গিয়েছেন। আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতাও একই কথা বলে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ও পূর্ব ইউরোপে বিপর্যয়ের পর বাম নেতারা ভেবেছিলেন, নিজেদের অভিজ্ঞতায় পুঁজিবাদের দেউলেপনা বুঝে অচিরেই মানুষ রেজিমেন্টেড পার্টিকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনবে। পুঁজিবাদ এই সব দেশে সংকটে পড়েছে ঠিকই, কিন্তু রেজিমেন্টেড দল আর ক্ষমতায় ফেরেনি। সেখানে বামপন্থী নেতারা নিজেদের চিন্তাভাবনা ও সংগঠনের কাঠামো বদল করেই ফিরে এসেছেন। এই অভিজ্ঞতা, নির্ণায়ক ভাবে বলে দিচ্ছে যে, নিজেদের চিন্তাভাবনার কাঠামোগত পরিবর্তন ছাড়া বামপন্থীদের গ্রহণযোগ্যতা এই রাজ্যে বৃদ্ধি পাবে না। লোক-দেখানো প্রসাধনী পরিবর্তন নয়, অভিজ্ঞতা দাবি করছে কাঠামোগত পরিবর্তন। দলের বাইরে জনসাধারণের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে খবরদারি ব্যবস্থার বদলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, দলের অভ্যন্তরেও হুকুমদারি ব্যবস্থার বদলে গণতান্ত্রিক সম্পর্কের বিস্তার। অন্যথায় দল আর কোনও দিন ক্ষমতায় ফিরবে না। যাঁরাই দলকে ভালবাসেন, বামপন্থা-সমাজতন্ত্র-সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেন, এই নির্মম সত্যকে তাঁদের স্বীকার করতেই হবে যে, গণতান্ত্রিক বামপন্থা ছাড়া বামপন্থা বাস্তবক্ষম হবে না।
মমতাদেবীর ব্যর্থতার অর্থ বামফ্রন্টের আবাহন, এটা ভাবার কোনও কারণ নেই।
মমতাদেবী ব্যর্থ হলে গণতান্ত্রিক বামের অনুপস্থিতিতে মানুষজন কংগ্রেস, বিজেপি’কে ধরে দক্ষিণপন্থী বিকল্প সন্ধানে বাধ্য হতে পারেন। নিষ্ক্রিয় অপেক্ষার লাইনের অনিবার্য নিয়তি হয়তো এটাই। |