ঘটনাস্থল, দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আদ্রা জংশন। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ আদ্রা স্টেশনের তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মে থামে রাজধানী এক্সপ্রেস। বিধি অনুযায়ী ট্রেনটি যখন প্ল্যাটফর্মে ঢুকছিল, তখন প্ল্যাটফর্মের শেষ প্রান্তে বসে ট্রেনটি পরীক্ষা করছিলেন রেলের টেকনিক্যাল বিভাগের দুই কর্মী লক্ষ্মণ সাহু ও নারায়ণ প্রসাদ।
লক্ষ্মণবাবুর কথায়, “আমরা চাকায় কোনও ত্রুটি বা অন্য কোনও অস্বাভাবিকত্ব আছে কি না, তা পরীক্ষা করি। ট্রেন যখন প্ল্যাটফর্মে ঢুকছে তখনই তা দেখতে হয়। এটাকে রেলের পরিভাষায় বলে ‘রোলিং চেকিং’।” নারায়ণ প্রসাদ বলেন, “আমি রেললাইনের এক দিকে ছিলাম, লক্ষ্মণদা ছিলেন উল্টো দিকে প্ল্যাটফর্মে। হঠাৎই একটা অস্বাভাবিক শব্দ শুনে বুঝতে পারি, কোথাও কোনও গণ্ডগোল হয়েছে। ট্রেনটি প্ল্যাটফর্মে থামার পরে কাছে গিয়ে দেখি একটা চাকার অনেকটা অংশ গোল হয়ে ফেটে গিয়েছে। আমরা ছুটে গিয়ে আমাদের বিভাগের ইনচার্জকে খবর দিই।” |
খবর পেয়ে আদ্রার ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম) অমিতকুমার হালদার-সহ পদস্থ আধিকারিকেরা সঙ্গে সঙ্গে স্টেশনে চলে আসেন। রেল সূত্রের খবর, ওই ট্রেনের এসি-২ টিয়ার (এ-১) কামরার একটি চাকা কোনও ভাবে ফেটে গিয়েছিল। রেলকর্তারা ওই কামরাটিকে ট্রেন থেকে আলাদা করার সিদ্ধান্ত নেন। এ-১ কামরার যাত্রীদের অন্য কামরায় বসানোর বন্দোবস্ত করা হয়। ওই কামরাটিকে আদ্রায় রেখে রাজধানী এক্সপ্রেস নির্ধারিত সময়ের প্রায় দু’ঘণ্টা পরে স্টেশন ছাড়ে। ডিআরএম নিজেও দুর্ঘটনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি। তাঁর কথায়, “চাকায় ফাটল-সহ ট্রেনটি কোনও ভাবে স্টেশন ছেড়ে গেলে কী হত, বলা যায় না। তবে টেকনিক্যাল বিভাগের ওই দুই কর্মী সঙ্গে সঙ্গে রিপোর্ট করায় কোনও সমস্যা হয়নি।”
রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার বিনয় মিত্তল লক্ষ্মণবাবু ও নারায়ণবাবুর জন্য ৫০০০ টাকা করে পুরস্কার ঘোষণা করেছেন। আর ওই রেলকর্মীদের কথায়, “আমরা বিরাট কিছুই করিনি। শুধুই নিজেদের কর্তব্য করেছি।” |