দুঃস্থ পড়ুয়াদের নিয়েও সফল সাগরদিঘির স্কুল

মাধ্যমিকে একশো শতাংশ পাশের নজির দেখাল সাগরদিঘি এসএন হাইস্কুল। ওই স্কুলের ১৫৫ জন ছাত্রছাত্রী পরীক্ষা দিয়েছিলেন। শুক্রবার ফল বেরোলে দেখা গিয়েছে তারা সকলেই পাশ করেছে। প্রধান শিক্ষক তামিজুদ্দিন মণ্ডল স্কুলের এই সাফল্যকে শিক্ষকদের ‘আন্তরিক’ উদ্যোগের জন্যই সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছেন।
তবে এসএন হাইস্কুল একা নয়, পরীক্ষার্থীরা সকলেই পাশ করেছেন এমন স্কুল মুর্শিদাবাদ জেলায় অন্তত ১১টি। তবে তাদের অধিকাংশই জেলা সদর বা শহরাঞ্চলে। সেই সব স্কুলের বেশির ভাগেরই গায়ে ‘ভাল স্কুল’-এর তকমা রয়েছে। তবে নিছকই কয়েক জন ছাত্রের সাফল্য নয়, সবার অলক্ষ্যে সমষ্ঠিগত ভাবে ভাল ফলের লক্ষ্যে এগিয়েছে এসএন হাইস্কুল। এ বারই প্রথম নয়, এর আগেও ২০০২ এবং ২০০৫ সালে এমনই ফল করেছিল ওই স্কুলটি।
১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ওই স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ২২০০। মূলত ছেলেদের স্কুল হলেও একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে সদ্য ছাত্রী ভর্তিও শুরু করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলে ৩৯ জন শিক্ষকের অনুমোদন থাকলেও এখন পর্যন্ত স্কুলে রয়েছেন ৩৪ জন শিক্ষক। তাঁরা বাম-ডান দু’পক্ষের শিক্ষক সংগঠনেরই সদস্য। তবে তার ছাপ পঠন পাঠনে পড়েনি। এ ব্যাপারে দুই সংগঠনের সদস্য, ওই স্কুলের শিক্ষকেরা সতর্ক। এমনই দাবি করেছেন স্কুল পরিচালন সমিতির কর্তারা। পরীক্ষা থেকে পঠন-পাঠন সব ক্ষেত্রেই রাজনীতি নয়, স্কুলের স্টাফ কাউন্সিল এবং অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত এখনও চূড়ান্ত বলে গৃহীত হয়ে আসছে। স্কুলের এই নিয়মানুবর্তিতা সাফল্যের অন্যতম কারণ বলেই তাঁরা মনে করছেন। সে কারণেই নকল করার অভিযোগে দ্বাদশ শ্রেণির ৬ ছাত্রকে পাশ না করানোর সর্বসম্মত ‘সাহস’ দেখিয়েছেন তাঁরা।
সাগরদিঘি এলাকাটি শিক্ষার মাপকাঠিতে বেশ পিছিয়ে। স্কুলের প্রধানশিক্ষক বলেন, “এলাকায় মেরেকেটে ৩০ শতাংশ লোক সাক্ষর। তিনি বলেন, “আমার স্কুলে যারা পড়তে আসে তাদের অধিকাংশই নিম্নবিত্র পরিবারের। কেউ দিনমজুরের ঘরের ছেলে। কেউ বা নুন আনতে পান্তা ফোরানো ঘরের মেয়ে। পোপাড়া, সন্তোষপুরের মতো গ্রামগুলি এমনই দুঃস্থ। সেখানকার চেলেমেয়েরা প্রাইভেট টিউশন তো দূরের কথা, অনেকে বই-ও কিনতে পারেন না।” সেই সব গ্রামেরই ছেলে মেয়েদের এমন সাফল্য প্রশংসাযোগ্য তো বটেই।”
স্কুলে ছেলেমেয়েদের আসাটা নিশ্চিত করাই প্রধান লক্ষ্য ছিল শিক্ষকদের। বন্ধ করা গিয়েছে স্কুল পালানো। স্কুলের শিক্ষক, বাম সংগঠনের সদস্য সহকারি প্রধানশিক্ষক মিহির ঘোষ বলেন, “স্কুলের পঠনপাঠনের ক্ষেত্রে কোনও সমঝোতা নয়। সেখানে আমাদের স্কুলে কোনও রাজনীতির রং দেখা হয়না।” অন্য দিকে স্কুলের ডানপন্থী শিক্ষক সংগঠনের সদস্য অসিত মণ্ডলও বলছেন, “আমাদের শেষ কথা স্কুল। সব সময়ে তার ভালটাই দেখা হয়।” আর তারই প্রমাণ এ বারের ফল।

First Page Murshidabad Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad|Medinipur
National | Bidesh| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.