লালগড়ে নেতাই গ্রামের হত্যাকাণ্ডেও ফেরার অভিযুক্তেরা সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারে বলে আদালতে আশঙ্কা জানিয়েছে সিবিআই। আর সেই সূত্রেই নেতাই মামলাতেও উঠে এসেছে ছোট আঙারিয়ার প্রসঙ্গ।
মঙ্গলবার ঝাড়গ্রাম আদালতে নেতাই মামলার শুনানি ছিল। শুনানি চলাকালীন নেতাইয়ের হত্যাকাণ্ডে এখনও পলাতক আট অভিযুক্তের কথা ওঠে। আর তখনই ছোট আঙারিয়ার ঘটনার উল্লেখ করেন সিবিআইয়ের আইনজীবী তাপস বসু। তিনি আদালতকে জানান, ছোট আঙারিয়ার ঘটনায় দীর্ঘদিন ধরে পালিয়ে থাকা অভিযুক্তেরা বাইরে থেকে সাক্ষীদের প্রভাবিত করেছে। তার ফলে আদালতে ওই সাক্ষীরা অন্য রকম বয়ান দেন। তার জেরে ওই মামলায় গ্রেফতার হওয়া আট জন বেকসুর খালাসও পেয়ে যায়। সিবিআইয়ের আশঙ্কা, নেতাইয়ের ঘটনায় ফেরার আট জনও একই ভাবে সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারে।
সিবিআইয়ের আইনজীবী এ দিন ঝাড়গ্রাম আদালতে জানান, ছোট আঙারিয়ার মতো নেতাই মামলাতেও আট অভিযুক্ত পলাতক রয়েছে। ফলে তারাও বাইরে থেকে এই মামলার সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারে। তাই অবিলম্বে ওই ফেরার অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা প্রয়োজন। ওই আট জনের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই হুলিয়া জারি করেছে ঝাড়গ্রাম আদালত। তাদের ধরার জন্য ছবি দিয়ে লালগড়-সহ বিভিন্ন জায়গায় পোস্টারও পড়েছে। তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার জন্য আদালতের কাছে আর্জি জানাতে তৈরি হচ্ছে সিবিআই।
নেতাই-কাণ্ডে অভিযুক্ত ১২ জনকে এ দিন আদালতে তোলা হয়। তাদের আইনজীবীরা অভিযুক্তদের জামিনের জন্য আর্জি জানিয়ে বলেন, অকারণে ওই ১২ জনকে নেতাই মামলায় জড়ানো হয়েছে। সিবিআইয়ের আইনজীবী আদালতে বলেন, “নেতাইয়ের ঘটনা এক কথায় নজিরবিহীন। রাজ্যে তখন যে-রাজনৈতিক দল সরকার পরিচালনার দায়িত্বে ছিল, তারা নিজেদের দলের সদস্যদের হাতে অস্ত্র তুলে দেয় এবং গত ৭ জানুয়ারি নেতাইয়ে সাধারণ ন’জন গ্রামবাসীকে গুলি চালিয়ে খুন করা হয়।”
আদালতে তাপসবাবুর মন্তব্য, এখানেই শেষ নয়। এত বড় ঘটনার পরে পুলিশ ও রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত পরিচালনা করতে ব্যর্থ হয় বলেই ১৮ ফেব্রুয়ারি এই তদন্তের ভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বিচারক অভিযুক্তের জামিনের আবেদন নাকচ করে ধৃতদের ফের জেল-হাজতে পাঠিয়েছেন। ১৪ জুন তাদের ফের আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।