ঐতিহ্য |
• ভারতীয় জাদুঘরের দ্বিশতবার্ষিকী পূর্তি |
সম্প্রতি কলকাতায় ভারতীয় জাদুঘরের দু’শো বছর পূর্তি অনুষ্ঠান হল মহা সমারোহে। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। এ ছাড়াও ছিলেন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শিক্ষাবিদ রোমিলা থাপার, জাদুঘরের বর্তমান কিউরেটর-সহ বহু বিশিষ্ট জন।
বিশ্বের প্রতিটি প্রাচীন শহরের মতো ভারতীয় জাদুঘরও যেন তার প্রাচীনত্ব ও বিশালত্ব নিয়ে আগামী দিনে শহরের এক বিশেষ দ্রষ্টব্যস্থল হয়ে ওঠে, সে কথাই বলেন প্রধানমন্ত্রী। ভারতীয় জাদুঘর প্রাচীন ইতিহাস, শিল্পকলা ও সমাজ জীবনের এক অমূল্য রত্নাগার। উপযুক্ত পরিকাঠামো ও রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে তাকে আরও আকর্ষণীয় ও উন্মুক্ত করতে হবে বলে ওই দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাই অভিমত প্রকাশ করেন।
১৮৯৪ সালে এশিয়াটিক সোসাইটির একটি অংশে এই জাদুঘর স্থাপন করা হয়। এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম কিউরেটর ছিলেন ন্যাথানিয়েল ওয়ালিচ নামে এক ড্যানিশ ভদ্রলোক। এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা স্যর উইলিয়াম জোন্সের সহায়তায় সোসাইটিরই একটি অংশে ১৭৯৬ সালে জাদুঘর তার আদল পায়। অনেক পথ পেরিয়ে ১৯০৫ সালে চৌরঙ্গীতে বর্তমান ঠিকানায় স্থায়ী ভাবে গঠিত হয় জাদুঘর। প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে হাল আমলের নানা অমূল্য সব সংগ্রহ স্থান পেয়েছে এখানে। বিশেষ করে জিওলজিক্যাল ও জুলজিক্যাল সংগ্রহের জন্য এর বিশ্ব জোড়া খ্যাতি আছে। ইতালীয় নির্মাণশৈলীতে তৈরি এই স্থাপত্য আজ মহীরূহতে রূপান্তরিত হয়েছে। জীবাশ্ম ও স্টাফড প্রাণীর সংগ্রহ— বিশেষ করে তিমির চোয়াল, অতিকায় কচ্ছপের জীবাশ্ম, কুমিরের কঙ্কাল ছাড়া সংস্কৃতির ক্রম পর্যায় বিভাগের প্রদর্শিত বস্তুও এখানে প্রদর্শিত হয়েছে। চার হাজার বছর পুরনো মমি, গৌতম বুদ্ধের অস্থির আধার, ১২ ফুট কাঁকড়ার খোলস, শাহজাহানের পান্নার পেয়ালা, ঘর জোড়া বৃহত্ উল্কাপিণ্ড, নানা যুগের নানা সময়ের মুদ্রার সুবিশাল সংগ্রহ সবই রয়েছে এখানে। বিষয় বৈচিত্রের পাশাপাশি সংগ্রহকরণেও এই জাদুঘর এক বিশেষ মর্যাদা পেয়েছে।
|
• ঐতিহ্যশালী কেন্দ্রের নয়া তালিকায় জায়গা পেতে পারে ব্রিটেনের দু’টি স্থান |
বিশ্বের ঐতিহ্যশালী কেন্দ্রের তালিকায় নাম তুলতে মনোনয়নপত্র জমা দিল ব্রিটেনের বৃহত্তম জাতীয় উদ্যান ‘লেক ডিস্ট্রিক্ট ন্যাশনাল পার্ক’ ও অসাধারণ স্থাপত্য কীর্তি ‘ফোর্থ ব্রিজ’। দু’টি জায়গাই বহু দিন ধরে মনোরম পর্যটককেন্দ্র রূপে খ্যাত। কবি ওয়ার্ডসওয়ার্থ এবং ১৯ শতকের বিভিন্ন কবির স্মৃতিবিজড়িত এই জাতীয় উদ্যানের খ্যাতির পালকে ঐতিহ্যের তকমা জুড়লে তা আরও নান্দনিক হয়ে উঠবে। প্রতি বছর প্রায় পৌনে দু’লাখ পর্যটক আসেন জঙ্গল, পাহাড়, এবং লেক সমৃদ্ধ এই জাতীয় উদ্যানে।
অন্য দিকে এডিনবরা ও ফিফের মধ্যে যোগাযোগকারী রেল সেতু নামে খ্যাত ‘ফোর্থ ব্রিজ’ এই তালিকার অপর সংযোজন। প্রায় দেড় মাইল লম্বা এই রেলসেতুটি প্রথম ব্রিটিশ স্টিল নির্মিত সেতু। ১৮৮৩ সালে শুরু হয়ে প্রায় সাত বছর ধরে, সাড়ে চার হাজার শ্রমিকের চূড়ান্ত দক্ষতায় নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৮৯০ সালে। এই সেতুর অভিনবত্বের চাবিকাঠিটি হল এর চূড়াটি।
|
• কেমব্রিজ জাদুঘরে প্রদর্শনী |
কেমব্রিজ জাদুঘরের পুরাতত্ত্ব ও নৃতত্ত্ব বিভাগের উদ্যোগে সম্প্রতি প্রথম বার লন্ডনে অনুষ্ঠিত হল এক বিশেষ প্রদর্শনী। এর উদ্যোক্তা ছিলেন কিউরেটর নিক থমাস। তাঁরই উত্সাহে পুরাতত্ত্ব ও নৃতত্ত্বপ্রেমীরা অনেক দুষ্প্রাপ্য ও দৃষ্টিনন্দন জিনিস চাক্ষুষ করার সুযোগ পেলেন। এ সব সামগ্রী দেখতে লন্ডনের অভিজাত ও উত্সাহী মানুষ জন ভিড় করেছিলেন প্রদর্শনীটিতে।
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মোট আটটি জাদুঘরের সংগ্রহে থাকা নানা দুর্লভ জিনিস— যেমন একশো বছর আগে লুপ্ত হয়ে যাওয়া ডোডো পাখির কঙ্কাল, উরুগুয়ের বিয়গ্ল দ্বীপে ভ্রমণ কালে চার্লস ডারউইনের সংগৃহিত টিনামু পাখির ডিম, পোলার জাদুঘরের সংগ্রহে থাকা ১৯ শতকে পিতল নির্মিত এক বৃহত্ টেলিস্কোপ, শতবর্ষ পুরনো নিকোবরি মহিলার নগ্ন দেহের খোদাই চিত্র— সবই এখানে প্রদর্শিত হয়। ১৯৮৪ সালে মহাকাশযান ডিসকভারিতে পাঠানো নানা বস্তু এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জমিতে খনন কার্য চালানোর সময় পাওয়া অতি পুরনো স্বর্ণমুদ্রারও দেখা মিলেছে এই প্রদর্শনীতে।
|
• ফিঙ্গার প্রিন্ট-এর উত্স সন্ধানে |
একশো বছর আগে এক ইংরেজ আধিকারিক উইলিয়াম হার্সেল এবং তাঁর দুই বাঙালি সহযোগী আজিজুল হক ও হেমচন্দ্র বসুর তত্ত্বাবধানে আজকের মহাকরণের একটি অংশে গবেষণা ও কর্মদ্যোগের যে সূচনা হয়েছিল, বহু বাধা বিপত্তি পেরিয়ে আজ সমগ্র পৃথিবীতে তা ‘ফিঙ্গার প্রিন্ট’ পরীক্ষা বলে স্বীকৃত ও পরিচিত। সারাবিশ্বের অপরাধ বিজ্ঞান, শনাক্তকরণ, দলিলপত্র পরীক্ষা ও পুলিশ প্রশাসনের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতির ভূমিকা আজ অপরিহার্য।
১৮৫৭ সালে উইলিয়াম হার্সেল নিজ উদ্যোগে প্রজাদের হাতের ছাপ নেওয়ার এই পদ্ধতিটি সূচনা করলেও সরকারের সদিচ্ছার অভাবে তা পরিপূর্ণতা পায়নি তখন। পরে ১৮৭৮ সালে অবসরের পর ইংল্যান্ডে ফিরে ‘ফিঙ্গার প্রিন্ট’-এর যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ তিনি তুলে দেন শনাক্তকরণ পদ্ধতি নিয়ে গবেষণারত প্রখ্যাত বিজ্ঞানী স্যর ফ্রান্সিস গ্যালটনের হাতে। এর পর ১৮৯২ সালে গ্যালটন তাঁর ফিঙ্গার প্রিন্ট গ্রন্থ প্রকাশ করেন। এ দেশে থাকাকালীন হার্সেলের রাইটার্স বিল্ডিং সংক্রান্ত সব তথ্য তিনি স্বীকার করে নেন। আবিষ্কারটি সিলমোহর পেতে আরও কিছু দিন অপেক্ষা করতে হয়েছিল হার্সেল ও গ্যালটন সাহেবকে। এর পর বহু তথ্যপ্রমাণ দাখিল ও চিঠি আদানপ্রদান করার পর ভারতের গভর্নর জেনারেল অনুমোদন দেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে। অবশেষে ১৮৭৮ সালের ১২ জানুয়ারি সরকারি ভাবে বিশ্বের মধ্যে সর্বপ্রথম ভারতে বাংলার ‘রাইটার্স বিল্ডিং’ ফিঙ্গার প্রিন্টের মুখ্য কার্যালয় হিসেবে আনুষ্ঠানিক ভাবে অনুমোদন পায়।
|
প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার |
• প্যারিসে ম্যামথ উদ্ধার |
প্রায় ৯ ফুট লম্বা উলি ম্যামথের কঙ্কাল পাওয়া গেল প্যারিসের মার্নে নদীর তীরে। একবিংশ শতাব্দীর সেরা প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানগুলির মধ্যে এটি অন্যতম বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের। ম্যামথের দাঁত ও হাড় পরীক্ষা করে প্রত্নতাত্ত্বিকরা জানিয়েছেন, এর অস্তিত্ব ছিল আনুমানিক ২০ হাজার বছর আগে। মৃত্যু কালে এটির বয়স ছিল ৩০। উদ্ধারস্থলের পাশে পড়ে থাকা কয়েকটি ধারাল অস্ত্র থেকে বিজ্ঞানীদের আরও অনুমান, মাংসের জন্য নিয়ান্ডারথালরা ম্যামথটিকে শিকার করে। প্রত্নতাত্ত্বিকরা এর নামকরণ করেছেন ‘হেলমুট’। শিকার তো বটেই, পাশাপাশি জলবায়ুর পরিবর্তন ও সংক্রামক রোগের কারণেই পৃথিবী থেকে ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে গেছে ম্যামথ।
|
• ‘গ্রহান্তরের প্রাণী’র খুলি উদ্ধার |
মেক্সিকোর এক সমাধিক্ষেত্র খুঁড়ে পাওয়া গেল গ্রহান্তরের প্রাণীদের মতো দেখতে পঁচিশটি খুলি। প্রায় হাজার বছরের পুরনো এই সমাধিক্ষেত্রটি আবিষ্কৃত হয় মেক্সিকোর উত্তর-পশ্চিম প্রান্তের ওনাভাস গ্রামে। এলাকায় একটি সেচখাল তৈরির সময়ে স্থানীয়দের নজরে আসে বিচিত্র দর্শনের এই খুলিগুলি। গ্রহান্তরের প্রাণীদের খুলি বলে প্রচারিত হলেও পরীক্ষানিরীক্ষার পর বিজ্ঞানীদের দাবি এগুলি বানানো হয়েছে মানুষের খুলিই দুমড়ে মুচড়ে বিকৃত করে। বিজ্ঞানীদের মতে, প্রাচীনকালে মধ্য আমেরিকায় এই খুলি-বিকৃতির চল থাকলেও উত্তরপ্রান্তে এই ধরনের আবিষ্কার এই প্রথম। পঁচিশটি খুলির মধ্যে তেরোটি খুলির করোটি ও পাঁচটি খুলির দাঁতের বিকৃতি ঘটানো হয়েছে। বিজ্ঞানীদের মতে শ্রেণি বিভাজন এবং বিভিন্ন ধর্মীয় আচার এই খুলি-বিকৃতির প্রধান কারণ। তবে স্থানীয় মানুষেরা এগুলিকে গ্রহান্তরের প্রাণীদের খুলি বলেই মনে করেন। তবে বেশ কিছু খুলিতে অলঙ্কারের অস্ত্বিত্ব ও পঁচিশটি কঙ্কালের মধ্যে মাত্র একটি মহিলার হওয়ার বিষয়টি নিয়ে এখনও অন্ধকারে বিজ্ঞানীরা।
|
• ইউরোপের প্রাচীনতম শহরের খোঁজ |
কৃষ্ণসাগরের উপকূল থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে বুলগেরিয়ার একটি ছোট্ট শহর প্রোভাদিয়া। ইউরোপের প্রাগৈতিহাসিক ধ্বংসপ্রাপ্ত শহরগুলির মধ্যে এটি অন্যতম। সম্প্রতি অধ্যাপক ভাসিল নিকোলভের নেতৃত্বে এক দল প্রত্নতাত্ত্বিক এখানে খননকার্য চালান। অধ্যাপক নিকোলভ জানিয়েছেন, এই শহরের অস্তিত্ব ছিল আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৪৭০০ অব্দে। ৩ মিটার উঁচু ও ২ মিটার পুরু পাথরের দেওয়াল দিয়ে ঘেরা ছিল সমগ্র শহরটি। এ রকম ঘেরা শহর প্রাগৈতিহাসিক ইউরোপে প্রথম। প্রায় ৩০০-৩৫০টি পরিবার এখানে বাস করত। উচ্চবিত্ত এই পরিবারগুলি বাস করত দোতলা বাড়িতে। সমুদ্র থেকে লবণ উত্পাদন ও রফতানিই ছিল এঁদের প্রধান জীবিকা। আর এই লবণ ব্যবসার কারণে এই শহরটিকে বলকানের ‘টাঁকশাল’ বলা হত।
অন্য দিকে, প্রত্নতাত্ত্বিক মার্গারিটা লিউনচেভা জানিয়েছেন, শহরে দুই শ্রেণির মানুষ বসবাস করত— উচ্চবর্গ ও নিম্নবর্গ। শহরে প্রাপ্ত অন্যান্য জিনিস থেকে এটা অনেকটাই স্পষ্ট যে প্রায় ৭ হাজার বছর আগে শহরে শ্রেণিব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল। এ ছাড়া বাঁকানো সূচের মতো তামার কয়েকটি জিনিস থেকে অনুমান করা যায়, মহিলারা চুল বাঁধার ও সাজসজ্জার ক্ষেত্রে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল ছিলেন। সবচেয়ে যে বিষয়টি প্রত্নতাত্ত্বিকদের আশ্চর্য করেছে তা হল, শহরবাসীর শেষকৃত্যের রীতি। একটি সমাধিক্ষেত্র খনন করে দেখা গিয়েছে, কোমরের অংশ থেকে মৃতদেহগুলি দু’ভাগে ভাগ করা। সমাধিস্থ করার সময় কোমরের অংশটি উপরের দিকে রাখা হত ও দেহের উপরি ভাগ নীচের দিকে। তবে সমাধিস্থ করার এই রীতির বিষয়ে কোনও স্পষ্ট ব্যাখ্যা খুঁজে পাননি প্রত্নতাত্ত্বিকরা।
|
• নীলনদের তীরে ফারাওর ‘কর আদায়’ |
নৌকাযোগে রাজা চলেছেন কর আদায়ে। সঙ্গে পাত্র-মিত্র-অমাত্য। রাজার মাথায় সাদা মুকুট। খ্রিস্ট জন্মের প্রায় তিন হাজার বছর আগে মিশরের ছবি। নীলনদের তীরে ১৮৯০ সালে আবিষ্কৃত হয় ফারাও নারমেরের রাজত্বকালের এই চিত্রকলা। সত্তর বছর পর ১৯৬০ সালে মিশরের প্রত্নতাত্ত্বিক লাবিব হাবাশি নিদর্শনগুলির কিছু ছবি তুললেও সেগুলি কখনও প্রকাশ করেননি। প্রায় ১২০ বছর বিস্মৃতির অতলে থাকার পরে ২০০৮ সালে পুনরাবিষ্কৃত হয় নিদর্শনগুলি। দক্ষিণ মিশরের নাগ-এল-হামদুলাব শহরের পশ্চিমপ্রান্তে আবিষ্কৃত এই নিদর্শনগুলি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বেশ দীর্ণ ও ক্ষতিগ্রস্ত। ফারাও আমলের প্রাচীনতম এই ছবির সঙ্গে বেশ কিছু পশুপাখির ছবিও আবিষ্কৃত হয়েছে ওই এলাকা থেকে। প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে ফারাও-যুগের সূচনার ইতিহাসের অনেক অজানা কথা এই ছবিগুলি থেকে জানা যাবে বলে আশা করছেন বিজ্ঞানীরা।
|
পরিবেশ ও বন্যপ্রাণ |
• ছারপোকা মারা মোটেই সহজ নয় |
ছারপোকা মারা সহজ কাজ নয়। মারতে মারতে হাত ব্যথা হয়ে গেলেও, মেরে ওদের শেষ করা যায় না। বিছানা, বালিশ, সোফা— নানা জায়গা থেকে হাজারে হাজারে, লাখে লাখে এমনকী কোটিতে কোটিতেও এদের আগমন ঘটে। তা ছাড়া মারলে এত বাজে গন্ধ ছড়ায়! শহিদ হয়েও এরা এদের কীর্তির সৌরভ রেখে যায়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এত বিপুল সংখ্যায় এদের আগমন ঘটে কোথা থেকে। মাথা ঘামালেন শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী। দীর্ঘদিনের গবেষণায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিজ্ঞানীরা জানালেন, একটি পূর্ণবয়স্ক স্ত্রী ছারপোকা একাই হাজার হাজার ছারপোকা কলোনি তৈরি করতে পারে। আর এই বংশবিস্তারের জন্য একটিমাত্র মানুষের রক্তই যথেষ্ট। বিজ্ঞানীরা জানালেন, হাত ফসকে একটি ছারপোকাও যদি বেঁচে গিয়ে তার গোপন ডেরায় ফিরতে পারে, তা হলে কিছু দিনের মধ্যেই সে শতাধিক ডিম পেড়ে নিজের গোষ্ঠী তৈরি করে ফেলে। শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ ও প্রাণিবিভাগের অধ্যাপক বাটলিনের মতে, এই পদ্ধতি কী ভাবে সম্ভব হয় তা এখনও বিজ্ঞানীদের কাছে অধরা। তিনি জানিয়েছেন, বিংশ শতকের মধ্যভাগে লন্ডন-সহ ইউরোপের বিভিন্ন শহর থেকে ছারপোকার সংখ্যা প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। কিন্তু ১৯৮০-র পর থেকে তাদের সংখ্যা আবার আশ্চর্যজনক ভাবে বাড়তে থাকে। সম্প্রতি লন্ডনের কিছু গবেষকদের সমীক্ষায় ধরা পড়েছে বিগত দশকের তুলনায় ছারপোকার সংখ্যা তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
অধ্যাপক রজার বাটলিন জানালেন, একটি পূর্ণবয়স্ক ছারপোকা দৈর্ঘ্যে ৫ মিলিমিটারের বেশি হয় না। এরা এন্তত এক মাস কিছু না খেয়েও বেঁচে থাকতে পারে। ‘ইকোনমিক এনটোমোলজি’ নামক বিজ্ঞান পত্রিকায় একটি আশ্চর্যজনক তথ্য প্রকাশ পায়। ছারপোকারা অত্যধিক ঠান্ডাতেও দিব্যি বহাল তবিয়তে বেঁচে থাকতে পারে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, দেহরসের তামমাত্রা কমিয়ে এরা হিমাঙ্কের ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচেও অন্তত ৩-৫ দিন বেঁচে থাকতে পারে। পরীক্ষা করার জন্য বিজ্ঞানীরা ছারপোকাদের বেঁচে থাকার জন্য উপযোগী সর্বোচ্চ (সুপার কুলিং পয়েন্ট) ও সর্বনিম্ন (লোয়ার লেথাল টেমপারেচার) তাপমাত্রা রেকর্ড করেন, দেখা যায় তাপমাত্রা হিমাঙ্কের ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে নেমে গেলেও ছারপোকারা তাদের পরিবার-সহ মহানন্দে জীবনধারণ করছে।
|
• আফ্রিকায় কমছে সিংহের সংখ্যা |
স্বরাজ্যে বিলুপ্তির পথে ‘পশুরাজ’। আফ্রিকা মহাদেশে বিশেষ করে পশ্চিম আফ্রিকায় আশঙ্কাজনক ভাবে কমছে সিংহের সংখ্যা। নতুন সমীক্ষায় প্রকাশ, সমগ্র পশ্চিম আফ্রিকা জুড়ে এখন সিংহের সংখ্যা মাত্র ৪০০। এদের মধ্যে পূর্ণবয়স্ক ও প্রজননক্ষম সিংহ রয়েছে মাত্র ২৫০টি। সম্প্রতি ‘প্যান্থেরা’ নামক একটি গবেষণা সংস্থা সেনেগাল থেকে নাইজেরিয়া পর্যন্ত ১৭টি দেশে সমীক্ষা চালিয়েছে। ছ’বছরের এই সমীক্ষায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। গবেষকেরা জানিয়েছেন, পশ্চিম আফ্রিকায় সিংহের বিচরণ ক্ষেত্রের অধিকাংশই এখন কৃষিজমিতে রূপান্তরিত হয়েছে, ফলে মোট পরিসরের মাত্র ১.১ শতাংশ এলাকায় সিংহ দেখা যায়। পশ্চিম আফ্রিকায় সিংহ আছে মাত্র পাঁচটি দেশে— সেনেগাল, নাইজেরিয়া, বেনিন, নাইজার এবং বুরকিনা ফাসোর সীমান্ত অঞ্চলে। তাই কার্যতই বিলুপ্তপ্রায় প্রাণির তকমা এঁটে ‘সিংহ বাঁচাও’ অভিযানের ডাক দিয়েছে ‘প্যান্থেরা’।
ভিন্ন জিনগত বৈশিষ্ট্যের জন্য আফ্রিকার সিংহ বরাবরই পশুসমাজে তাদের স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখেছে। বিজ্ঞানীদের মতে, এই সিংহ বিলুপ্ত হলে পৃথিবী থেকে একটা গোটা প্রজাতিই হারিয়ে যাবে। অবলুপ্তির কারণ খুঁজতে এগিয়ে এসেছে ‘দ্য ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার’ (আইইউসিএন)। গবেষকদের মতে, সিংহদের অবলুপ্তির প্রথম ও প্রধান কারণ, দেশের অর্থনৈতিক সমস্যা। সিংহ সংরক্ষণের জন্য যে বিপুল অর্থভাণ্ডারের প্রয়োজন তা দিতে অক্ষম পশ্চিম আফ্রিকার বেশিরভাগ গরিব দেশগুলিই। উপরন্তু সিংহদের জন্য বরাদ্দ সংরক্ষিত এলাকাগুলির অধিকাংশই চাষবাসের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে, ফলে তাদের শিকারের ক্ষেত্র সঙ্কুচিত হচ্ছে। এ ছাড়াও উপযুক্ত নজরদারের অভাবে বাড়ছে চোরাশিকারিদের দৌরাত্ম্য। ২০০৫ সালের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছিল, পশ্চিম আফ্রিকার ২১টি সংরক্ষিত এলাকায় সিংহ রয়েছে। সম্প্রতি পিএলওএস ওয়ান নামক বিজ্ঞান পত্রিকায় প্রকাশিত সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, সিংহ রয়েছে এখন মাত্র ৪টি সংরক্ষিত এলাকায়। আফ্রিকা মহাদেশে এখন ২৫ শতাংশেরও কম মাত্র ৩৫ হাজার সিংহের দেখা পাওয়া যায়, যার মধ্যে গোটা পশ্চিম আফ্রিকায় ৫০ হাজার বর্গকিলোমিটারেরও কম জায়গায় সিংহের অস্তিত্ব রয়েছে।
|
• হাঙরেরা ‘টুইট’ করে |
পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় তিনশোরও বেশি হাঙর এখন টুইট করে। রীতিমতো ‘মেসেজ’ করে নিজেদের অবস্থান-সহ নাম, ধাম, পরিচয় অবধি খুঁটিনাটি বিবরণ পাঠায়। বাস্তবে হাঙরের উত্পাত থেকে রেহাই পেতে সরকারি উদ্যোগে এমনই পন্থার আশ্রয় নিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সমীক্ষায় দেখা যায়, ২০১২ থেকে অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিম উপকূলে হাঙরের হানায় মৃত্যু হয়েছে ছ’জন ব্যক্তির। এর পরেই ওই অঞ্চল পর্যটকদের জন্য বিপজ্জনক স্থান হিসেবে চিহ্নিত হয়। জারি হয় লাল সতর্কতা। সম্প্রতি সরকারি উদ্যোগে নতুন এক উপায় খুঁজে বের করেন বিজ্ঞানীরা। এগিয়ে আসে ‘সার্ফ লাইফ সেভিং ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া’ (এসএলএসডব্লিউএ)-র মতো বিভিন্ন সংস্থা। বিজ্ঞানীরা ৩২০টি হাঙরকে চিহ্নিত করে তাদের গায়ে বিশেষ ট্রান্সমিটার লাগিয়ে দেন। এই ট্রান্সমিটারের কাজ হল, চিহ্নিত হাঙরের মধ্যে কোনও একটি সমুদ্র সৈকত থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে চলে এলে গ্রাহকদের সারভারে সঙ্কেতমূলক বার্তা পাঠায়। এসএলএসডব্লিউএ-র কর্তারা জানিয়েছেন, ট্রান্সমিটার লাগানো কোনও হাঙর যখনই উপকূল থেকে হাফ মাইলের দূরত্বের মধ্যে চলে আসে ট্রান্সমিটারে লাগানো স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল চালু হয়ে যায় যা সংস্থার কম্পিউটারের সঙ্কেতমূলক বার্তা পাঠায়। হাঙরটির আকার, ওজন-সহ সঠিক অবস্থান কম্পিউটারে নথিবদ্ধ হয়ে যায়। এই বার্তাই সংস্থার কম্পিউটার থেকে দ্রুত টুইটারের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে লোকজনকে সতর্ক করে দেয়। মত্স্য দফতরের অধিকর্তা ডক্টর রোরি ম্যাকালে জানিয়েছেন, এই ট্রান্সমিটারের অপর সুবিধা হল এর কার্যক্ষমতা অন্তত দশ বছর সক্রিয় থাকে। ফলে, হাঙরদের গতিবিধি ও তাদের স্বভাব বৈচিত্র্য-সহ যাবতীয় তথ্য রেকর্ড হয়ে যায়, যা বৈজ্ঞানিক গবেষণার কাজেও অনেকটা সাহায্য করে। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বিশেষ পরিষেবাকে কাজে লাগিয়ে মত্স্যজীবীরা গরমের সময় হাঙরদের পাড়ের দিকে আকর্ষিত করে। তিন মিটারের বেশি দৈর্ঘ্যের কোনও হাঙর ধরা পড়লে তত্ক্ষণাত্ তাকে মেরে ফেলা হয়।
|
• সাপেদের উড়াল-রহস্য |
‘স্নেক অন এ প্লেন’ নামক জনপ্রিয় হলিউড ছবিতে দেখানো হয়েছিল বিভিন্ন প্রজাতির সাপেরা উড়ে এসে যাত্রীদের আক্রমণ করছে। কিন্তু বাস্তবিকই কি উড়তে পারে সাপ? এই প্রশ্ন এত দিন বিজ্ঞানীদের মনে ঘুরপাক খেয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃষ্টি অরণ্যে কিছু প্রজাতির সাপকে যেমন ‘প্যারা ডাইস ফ্লাইং স্নেক’ ও ‘ব্যানডেড ফ্লাইং স্নেক’-কে অন্তত ১০০ ফুট লম্বা গাছ থেকে লাফিয়ে নামতে দেখা গিয়েছে। সম্প্রতি সাপেদের এই উড়াল-রহস্যের জট ছাড়িয়েছেন আমেরিকার ভারজিনিয়া টেক ওয়েক ফরেস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী জেক সোচা। তিনি জানিয়েছেন, ওড়ার সময় সাপেরা তাদের পাঁজরের অস্থি নমনীয় করে দেহ লম্বা ও চ্যাপ্টা আকৃতির করে নেয়। এই ভাবে দেহ হাল্কা হয় ও বায়বীয় গতি লাভ করে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এই ধরনের কিছু বিরল প্রজাতির সরীসৃপের দেখা মেলে যারা উড়তে সক্ষম। সোচা জানালেন, ‘ক্রাইসোপেলিয়া’ গণের অন্তর্গত পাঁচটি প্রজাতির সাপেরা উড়তে পারে। নিজেদের শরীরকে ‘এস’ (অক্ষর) আকৃতিতে বাঁকিয়ে এরা বায়ুগতির সঞ্চার করে। এই ভাবে বাতাসে দেহকে ভাসিয়ে নিয়ে গিয়ে এক গাছ থেকে অন্য গাছে এরা স্থানান্তরিত হয়। তা ছাড়া সোচা জানালেন, ওড়ার সময় বারে বারেই এরা এদের দেহের ভঙ্গিমা পরিবর্তন করে।
এই গবেষণা ‘দ্য জার্নাল অফ এক্সপেরিমেন্টাল বায়োলজি’তে প্রথম প্রকাশিত হয়। গবেষকেরা জানান, গাছ থেকে ঝাঁপ দেওয়ার সময় সাপেরা তাদের মাথা সোজা রেখে , মাথার পিছন থেকে লেজ পর্যন্ত দেহাংশ লম্বা ও চ্যাপ্টা করে নেয়। এর পর বাতাসে ভাসবার সময় লেজ থেকে মাথা অবধি দেহকে ক্রমাগত ‘এস’ অক্ষরের মতো বাঁকাতে থাকে ও একটা ঘূর্ণির রূপ দেয়। এই ভাবে ক্রমশ একটা সম্পূর্ণ বৃত্ত থেকে দেহকে অর্ধবৃত্তের আকারে নিয়ে আসে। এই পুরো প্রক্রিয়াটি ঘটে খুব দ্রুত এবং এই ভাবেই বায়ুর গতির দিকে এরা উড়তে পারে। সোচা জানান, সাপেদের ওড়া দেখে মনে হয় এরা বাতাসে সাঁতার কাটছে। গবেষণার সময় সোচা ও তাঁর সতীর্থেরা একটি প্লাস্টিক রডকে সাপের দেহের আকৃতিতে বাঁকিয়ে জলে ফেলে দেন। যদিও জলের ঘনত্ব বায়ুর চেয়ে বেশি, কিন্তু দেখা যায় রডটি জলে ভেসে যাচ্ছে। এই ভাসার তত্ত্বই সাপেদের ওড়ার সত্যতা প্রমাণ করে।
|
পার্বণ |
• কিলা রায়পুর ক্রীড়া উত্সব |
পঞ্জাবের লুধিয়ানায় ১৯৩০ সালে স্থানীয় ছোট গ্রাম্য ক্রীড়া প্রতিযোগিতা হিসাবে শুরু হয় কিলা রায়পুর ক্রীড়া উত্সব। বছরের পর বছর স্থানীয় মানুষের আন্তরিক উত্সাহে এবং স্বতঃস্ফুর্ত যোগদানে আজ তা পঞ্জাবের বৃহত্তম গ্রামীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আসরে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ভারতের গ্রামীণ অলিম্পিকের মর্যাদা লাভ করেছে। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসের(এর মধ্যে কর্মকর্তাদের মতানুসারে ক্রীড়াসূচি নির্ধারিত হয়) প্রথম সপ্তাহে পঞ্জাব ও হরিয়ানা থেকে কয়েকশো প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন। জাতীয় বা আন্তর্জাতিক স্তরের বড় বড় সব ক্রীড়া প্রতিযোগিতাগুলির মতো এখানেও দৌড়, ভারোত্তলন, কুস্তি, হাই জাম্প, লং জাম্প, পোল ভল্ট ইত্যাদি প্রায় সব রকম বিভাগেরও দেখা মেলে। তবে কবাডি এখানে সবচেয়ে জনপ্রিয়। ১৪ থেকে ৮৪— সব বয়সের প্রতিযোগীরাই স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে অংশ নেন। তবে এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতাকে বিশেষ আকর্ষণীয় করে তোলেন প্রবীণ প্রতিযোগীরা। তাঁদের নানা ধরনের কসরত তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো! ফি বছর এশিয়াড, অলিম্পিক ইত্যাদি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে অংশগ্রহণকারী অনেক ক্রীড়াবিদকেই কিলা রায়পুর ক্রীড়া উত্সবে দেখা যায়। এই প্রতিযোগিতার আসর থেকে অনেক ক্রীড়াবিদ উঠে এসেছেন যাঁরা পরবর্তীকালে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে জনপ্রিয় হয়েছেন। ক্রীড়া উত্সবের কর্মকর্তাদের মতে, দর্শক-প্রতিযোগী নির্বিশেষে আগত প্রত্যেকটি মানুষের মনোরঞ্জনই কিলা রায়পুর ক্রীড়া উত্সবের অন্যতম লক্ষ্য।
|
• আলওয়াড় উত্সব |
আরাবল্লি পর্বতের কোলে রাজস্থানের একটি ছোট শহর আলওয়াড়। শহরটিকে রাজস্থানের প্রবেশদ্বারও বলা হয়। জয়পুর থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত এই শহরটি বর্ণময় ও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে শীতের মরসুমে। কারণ প্রতি বছর ফেব্রুয়ারিতে এখানে তিন দিন ধরে চলে এক বিশাল উত্সব। শহরের নামেই যার নামকরণ আলওয়াড় উত্সব। উত্সবকে কেন্দ্র করে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও লোকসঙ্গীতের আসর বসে। পাশাপাশি, প্রদর্শনী চলে নানা দুষ্প্রাপ্য দ্রব্যের। তিনি দিন ধরে চলা এই উত্সবের টানে দেশ-বিদেশের নানা প্রান্ত থেকে পর্যটকরা ছুটে আসেন। এ বছর ১৩ থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি আরাবল্লি পর্বতের কোলে বসছে উত্সবের আসর। |
• তাজ মহোত্সব |
উত্তরপ্রদেশ তথা ভারতের একটি অন্যতম উত্সবের নাম তাজ মহোত্সব। তাজমহলকে কেন্দ্র করে ১৯৯২ সালে এই উত্সবের সূচনা হয়। কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রকের উদ্যোগে তাজ মহোত্সব বর্তমানে জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছেছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় ৪০০ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পী অংশ নেন। ছোট-বড় অসংখ্য উত্কৃষ্ট শিল্প সামগ্রীতে ভরে ওঠে মেলা প্রাঙ্গণ। যেমন, তামিলনাড়ুর কাঠ এবং পাথরের উপর নিপুণ কারুকাজের সামগ্রী, অসম, মণিপুর, মিজোরামের বাঁশ ও বেতের অপূর্ব সব আসবাব এবং ঘর সাজানোর সামগ্রী। এছাড়াও আগ্রার জরদৌসি শাড়ি ও পোশাকের সম্ভার, খুরজার মাটির জিনিস, মোরাদাবাদের কাঁসা-পিতলের সামগ্রী, লখনউয়ের চিকন, বেনারসের শিল্ক আর জরির পোশাক এমনকি বাংলার ‘কাঁথা স্টিচ’-ও নিজের জায়গা করে নিয়েছে এই মেলায়।
তবে খাদ্য রসিকদেরও নিরাশ করবে না এই মেলা। নানা স্বাদের খাবার নিয়েও হাজির থাকেন বিক্রেতারা। এক কথায় কয়েক দিন ধরে চলা এই উত্সব যেন ‘আনন্দমেলা’র পরিবেশ তৈরি করে। এ বছর ২৩তম তাজ মহোত্সব শুরু হবে ১৮ ফেব্রুয়ারি, চলবে ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। |
• রণ উত্সব |
উপকূলীয় গুজরাতের একটি অন্যতম পর্যটন ক্ষেত্র হল কচ্ছের রণ। বছরের বিভিন্ন সময়ে রণের রুক্ষ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের টানে প্রচুর পর্যটক ছুটে আসেন। তবে প্রতি বছর ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত উত্সবমুখর হয়ে ওঠে রণ অঞ্চল। এই সময় পর্যটকদের থাকার জন্য মেলা প্রাঙ্গণে বিলাসবহুল সুদৃশ্য তাঁবুর ব্যবস্থা করা হয়। লোকসঙ্গীত, লোকনৃত্যের আসর, নানা রকম দুষ্প্রাপ্য সামগ্রীর প্রদর্শনী থেকে শুরু করে প্রায় সব রকম মনোরঞ্জনের উত্কৃষ্ট রসদ মেলে এখানে। একুশ শতকে রাজকীয় মনোরঞ্জনের স্বাদ নিতে, এখানকার লোকসঙ্গীতের সুরের মুর্ছনায় গা ভাসাতে হাজার হাজার পর্যটক ভিড় জমান এই উত্সবে। |
পর্যটন কেন্দ্র |
• কাবিনির অরণ্যে |
শহরের কোলাহলে সরিয়ে যাঁরা প্রকৃতির সান্নিধ্য চান, তাঁরা যেতে পারেন কাবিনিতে। পশ্চিমঘাট ও নীলগিরি পাহাড়ের পাদদেশে বহু দূর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে অরণ্যভূমি। এখানে কেরালা ও কর্নাটকের সীমানায় কাবিনি নদীর তীরে রয়েছে কাবিনির ঘন অরণ্য। শুধুমাত্র বাঘ দেখার জন্য নয়। চেনা ছকের বাইরে বেরিয়ে প্রকৃতির মাঝে যেতে হলে এখানে ছুটি কাটাতে আসা যেতে পারে। কপালজোরে মোলাকাত হতে পারে জংলি কুকুর, লেপার্ড অথবা কোনও অজানা সরীসৃপের। এর কাছেই আছে নাগেরহোল ন্যাশনাল পার্ক। ওয়াইল্ডলাইফ ফোটোগ্রাফারদের জন্য আদর্শ জায়গা। অথবা আসতে পারেন ওয়াটার বা ল্যান্ড সাফারিতেও। ল্যান্ড সাফারিতে দেখা মিলতে পারে হাতি, বাইসন, ময়ূর বা কোনও বিরল প্রাণীর। রিভার সাফারিতে গিয়ে লাভবান হবেন পাখি প্রেমীরা। কারণ কাবিনির তীরবর্তী এলাকা জুড়ে বিশ্রামে থাকে সাধারণের নাম না-জানা বহু পাখি। ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, এখানে শিকার করতে আসতেন মহীশূরের মহারাজা। রাজ্যপাট এখন আর নেই, তবে রিসর্ট রাজে ভরে উঠেছে এলাকা। এখানে রাজসিক ভাবে কয়েক দিন নিশ্চিন্তে তাটানো যেতে পারে। এ ছাড়া, এখানকার বাঁধে প্রায়শই ভিড় জমান পর্যটকেরা। শুধু পর্যটনস্থল হিসেবেই নয়, কাবিনির হস্তশিল্পেরও সুখ্যাতি আছে। ফলে ঘোরাঘুরির পাশাপাশি কেনাকাটাও ভালরকম জমতে পারে। সড়কপথে যেতে হলে চেন্নাই থেকে ১০ ঘণ্টার ড্রাইভে কাবিনিতে পৌঁছনো যায়। এ ছাড়া, ট্রেনে বা বিমানে বেঙ্গালুরু বা মহীশূরে গিয়ে, সেখান থেকেও কাবিনি যাওয়া যেতে পারে।
|
• পক্ষী মেলায় টানে পরিযায়ী-পর্যটক |
বণ্যপ্রাণী সংরক্ষণকে কেন্দ্র করে পর্যটনের প্রসার ঘটাতে উদ্যোগ নিল জয়পুর। শহরের অদূরে অদূরে মানসাগর লেকের ধারে প্রতি বছর পরিযায়ী পাখিরা ভিড় জমায়। আর তা চাক্ষুস করতে হাজির হন দেশ-বিদেশের বহু পক্ষীপ্রেমী পর্যটক। পর্যটকরা জানান, এটা তাঁদের কাছে একটি মূল্যবান অভিজ্ঞতা বটে। এদের ঘিরেই ১৭ বছর ধরে বসছে এই পক্ষীমেলা। প্রতি বছর এই মেলার আয়োজন করে ট্যুরিজম অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া (টিডব্লিউএসআই)। ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেলা চলে। বর্তমানে এই মেলায় ১৮০ প্রজাতির পাখি আসে বলে দাবি আয়োজকদের। মেলায় মূলত পাখিরা মূল আকর্ষণ হলেও আয়োজকরা এর মাধ্যমে বণ্যপ্রাণী সংরক্ষণের বার্তাও ছড়িয়ে দিচ্ছেন। এমনকী, স্থানীয় ফ্লোরা ও ফণা-র সংরক্ষণেও এই মেলাকে কাজে লাগাচ্ছেন তাঁরা। মেলায় বিভিন্ন স্কুলের পাঁচ হাজার ছাত্রছাত্রী ছাড়াও বহু পর্যটক, গাইডরাও আসেন। এমনই এক বিশেষজ্ঞ হলেন আমেরিকার এডওয়ার্ড ম্যাকক্রিয়া। পরিবেশ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে এডওয়ার্ডের প্রায় চার দশকেরও বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে। মেলায় মানসাগর লেকের সংরক্ষণের বিষয়ে কর্মশালারও আয়োজন করেন তিনি।
|
• মালাপ্পুরমের রূপটান |
সেজে উঠবে মালাপ্পুরম শহর। কেরলের এই শহরকে সাজিয়ে স্থানীয় পর্যটকদের কাছে আরও আকষর্ণীয় করে তুলতে এ বার সচেষ্ট হল রাজ্যের পর্যটন দফতর। এর মধ্যে রয়েছে, শহরের অন্যতম আকর্ষণ কেন্দ্র কোট্টাখুন্নু ট্যুরিজম পার্কের সৌন্দর্যায়ন। এ ছাড়া, ভাঁদুরের ভানিয়ামবালম বাজারটিও সাজিয়ে তোলা হবে বলে জানা গেছে। পুরো পরিকল্পনার জন্য সাড়ে ছয় কোটি টাকার ব্যয় বরাদ্দে রাজ্য সরকারের ছাড়পত্র মিলেছে। রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী এ পি অনিলকুমার জানান, শীঘ্রই কোট্টাখুন্নু ও ভানিয়ামবালমের সৌন্দার্যায়নের কাজ শুরু হবে। ভানিয়ামবালম সাজানোর কাজে ব্যয় হবে সাড়ে চার কোটি টাকা। ২০১২-তেই ভাঁদুরে ২ লক্ষ ৭৫ হাজার কোটি টাকার এক প্রকল্পে এখানে সৌন্দর্যায়নের কাজ শুরু হয়েছিল। ওই প্রকল্পের অঙ্গ হিসেবে এখন ভাঁদুরের বাজারটিকেও সাজিয়ে তোলা হবে। মন্ত্রী জানান, চিরাচরিত আঙ্গিকের ধাঁচ বজায় রেখেই সাজানোর কাজ করা হবে। এ ছাড়া, এখানে পার্ক ও অন্যান্য সুযোগসুবিধাও গড়ে তোলা হবে। অন্য দিকে, কেবলমাত্র কোট্টাখুন্নু ট্যুরিজম পার্ক সাজাতে খরচ হবে ২ কোটি টাকা। এখানে ডান্সিং ফাউন্টেন থেকে শুরু করে মাল্টিমিডিয়া শো-এর সাহায্যে পার্কটিকে আরও দৃষ্টিনন্দন করে তোলা হবে। গোটা পরিকল্পনাটি একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করে সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন পর্যটনমন্ত্রী।
|
• নাসিকে পর্যটনের বিকাশ |
নাসিকে পর্যটন শিল্পের বিকাশে সচেষ্ট হল মহারাষ্ট্র সরকার। এ বিষয়ে একটি সবিস্তার পরিকল্পনা গড়ার জন্য জেলা প্রশাসনে নির্দেশ দিয়েছে সরকার। ২০১২ সালের নভেম্বরে ট্যুরিজম ফাইনান্স কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া (টিএফসিআই) নাসিকে পর্যটন বিষয়ক একটি সমীক্ষা করে। সেই রিপোর্টে নাসিক জেলার পর্যটনের পরিকাঠামো নিয়ে কোনও আশানুরূপ মন্তব্য ছিল না। বরং পর্যটকদের জন্য নাসিক যে এখনও অনুপযোগী, তা উল্লেখ করা হয়েছে। রিপোর্টে প্রকাশ, পর্যটকদের জন্য প্রযোজনীয় ন্যূনতম সুযোগসুবিধাও নেই নাসিকে। এমনকী, এ শহর যথেষ্ট ‘অপরিচ্ছন্ন’ বলে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। এই রিপোর্ট হাতে আসার পর নড়েচড়ে বসেছে মহারাষ্ট্র সরকারের পর্যটন বিকাশ দফতর। চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি একটি চিঠিতে নাসিকের জেলা প্রশাসনের কাছে একটি পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা চেয়ে পাঠানো হয়েছে। নাসিকের জেলা পরিকল্পক আধিকারিক জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার তাদের কাছে সাম্প্রতিক অতীতের থেকে পাঁচ গুণ বেশি অর্থমূল্যের পরিকল্পনা চেয়েছে। পর্যটনের বিকাশে গত চার বছরে নাসিক প্রায় ৬০ কোটি টাকার বরাদ্দ পেয়েছে। ওই আধিকারিক জানান, নতুন পরিকল্পনাটি হবে ৩৫০ কোটি টাকার। টিএফসিআই-এর রিপোর্টে গোদাবরী নদীর ধারের অপরিচ্ছন্ন পরিবেশের উল্লেখ করা হয়েছে। এমনকী, পর্যটকদের জন্য শহরে পর্যাপ্ত সংখ্যায় শৌচাগারও নেই বলে আক্ষেপ করা হয়েছে। এই নতুন পরিকল্পনায় এ সমস্ত সুযোগসুবিধা ছাড়াও পর্যটক টানতে বিভিন্ন নির্দেশিকা তৈরি করা হবে। শহরের প্রধান আকর্ষণ কেন্দ্রগুলিকেও সাজিয়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন আধিকারিক।
|
পরিষেবা |
• এতিহাদকে পাঁচটি বোয়িং বিক্রি করবে এয়ার ইন্ডিয়া |
অবশেষে কেন্দ্রের সম্মতি পেয়ে এতিহাদ এয়ারওয়েজকে পাঁচটি বোয়িং ৭৭৭ বিমান বিক্রি করবে এয়ার ইন্ডিয়া। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের নেতৃত্বে ক্যাবিনেট কমিটির একটি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এর আগেও মধ্য প্রাচ্যের এই বিমান সংস্থাটি জেট এয়ারওয়েজের ২৪ শতাংশ শেয়ার কিনেছে। যদিও কত টাকায় এই বিমানগুলি বিক্রি করা হবে, তা নিয়ে কোনও সংস্থাই মুখ খোলেনি। তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বিমানগুলির মূল্য ৩০-৩৫ কোটি মার্কিন ডলার। প্রসঙ্গত, এ মুহূর্তে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা ঋণ রয়েছে এয়ার ইন্ডিয়ার। এই টাকা দিয়ে সেই ঋণের অনেকটাই মেটাতে সক্ষম হবে তারা।
আগামী মার্চ-এপ্রিল মাসে বিমানগুলি হস্তান্তরিত হবে। এক নাগাড়ে প্রায় ১৭,৩০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে পারে বোয়িং ৭৭৭। এতিহাদ ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে, দূরপাল্লার উড়ানে এই বিমানগুলি ব্যবহার করবে তারা।
|
• টিকিটের দাম কমানোর লড়াইয়ে এমিরেটস, এয়ার এশিয়া |
আন্তর্জাতিক উড়ানের টিকিটের দাম কমানো নিয়ে রীতিমতো এক অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামল ফ্লাই এমিরেটস এবং এয়ার এশিয়া। মধ্য প্রাচ্যের বিমান সংস্থা এমিরেটস ইতিমধ্যেই ভারতীয় যাত্রীদের জন্য ভারত থেকে ইউরোপ, আফ্রিকা এবং দক্ষিণ আমেরিকার উড়ানের ক্ষেত্রে ইকনমি ক্লাসের টিকিটের দাম ধার্য করেছে ৪১,৮৬৭ টাকা। এবং বিজনেস ক্লাসের টিকিটের দাম ধার্য করেছে ১ লক্ষ ১৪ হাজার টাকা। গত ২৬ জানুয়ারির পর থেকে এই নতুন দাম কার্যকর হয়েছে। এপ্রিলের ১০ তারিখ পর্যন্ত যাত্রীরা এই দামে টিকিট কাটতে পারবেন।
অন্য দিকে, মালয়েশিয়ার সংস্থা এয়ার এশিয়া কোচি, কলকাতা এবং তিরুচিরাপল্লি থেকে কুয়ালা লামপুর পর্যন্ত উড়ানের টিকিটের দাম ধার্য করেছে মাত্র ৪ হাজার টাকা। চেন্নাই ও বেঙ্গালুরু থেকে টিকিটের দাম ৬,৪৯৯ টাকা। কুয়ালা লামপুর থেকে মালয়েশিয়ার অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্র যেমন— জহর বাহরু, কুয়ালা তেরেঙ্গানু পেনাঙ্গ প্রভৃতি জায়গায় যেতে অতিরিক্ত মাত্র ৭২৪ টাকা দিতে হবে। গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত পর্যটকরা এই নতুন দাম টিকিট কিনতে পারবেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, চলতি অর্থবর্ষে চতুর্থ ত্রৈমাসিকে সংস্থার মুনাফা বাড়াতে টিকিটের দাম কমানোর খেলায় মেতেছে বিভিন্ন বিমান সংস্থাগুলি। কারণ যাই হোক, টিকিটের দাম কমায় পর্যটকেরা লাভবান হবেন।
|
• ‘এ ৩৮০’ বিমান অবতরণের উপর উঠল নিষেধাজ্ঞা |
অবশেষে বিদেশি বিমান সংস্থার ‘এ ৩৮০’ বিমানগুলির অবতরণের উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল কেন্দ্র। এর ফলে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স, ফ্লাই এমিরেটস, লুফথানসার মতো বিমানসংস্থাগুলি তাদের এই বিশালাকৃতি বিমানগুলি ভারতের বিমানবন্দরে অবতরণ করাতে পারবে। ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, এর ফলে এয়ার ইন্ডিয়া প্রচণ্ড প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হবে। তবে, নয়াদিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু ও হায়দরাবাদ মাত্র এই চারটি বিমানবন্দরেই এই বিমানগুলি নামাতে পারবে সংস্থাগুলি। কারণ ভারতের অন্য বিমানবন্দরগুলিতে এই বিমান অবতরণ করানোর মতো পরিকাঠামো নেই।
বিমানমন্ত্রক সূত্রে খবর, এই সিদ্ধান্তের ফলে ভারতে বিমানযাত্রীর সংখ্যা বাড়বে। এয়ার ইন্ডিয়া-সহ বিভিন্ন বিমানসংস্থা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ছিল। কারণ এই বিমানগুলিতে এক বারে প্রায় দেড় হাজার যাত্রী বহন করতে পারে। ফলে আন্তর্জাতিক ও অন্তর্দেশীয় উড়ানে এই বিমানগুলি ব্যবহৃত হলে, এক বারেই প্রচুর যাত্রীরা গন্তব্যে পৌঁছতে পারবেন। নতুন সিদ্ধান্তের ফলে, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স, এমিরেটস, লুফথানসা তো বটেই, ব্রিটিশ এয়ারওয়েজেরও বিমানগুলি ভারত থেকে তাদের উড়ান শুরু করতে পারবে।
|
• আঙ্কলেশ্বর-রাজপিপলা ব্রডগেজ লাইন পাতা সম্পূর্ণ |
আঙ্কলেশ্বর থেকে রাজপিপলা পর্যন্ত প্রায় ৬৩ কিমি লাইন ন্যারোগেজ থেকে ব্রডগেজে লাইনে রূপান্তরিত করল পশ্চিম রেলওয়ে। গুজরাতের ভারুত জেলার আঙ্কলেশ্বর থেকে নর্মদা জেলার রাজপিপলা পর্যন্ত ১২টি স্টেশন রয়েছে। পশ্চিম রেলের বডোদরা ডিভিশনাল ম্যানেজার আশুতোষ গঞ্জাল জানিয়েছেন, লাইনে যত্রীবাহী ট্রেন চালানোর যাবতীয় পরীক্ষাও সম্পূর্ণ হয়েছে। তবে ট্রেন চালানোর বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের বিচারাধীন। ২০০৮ সালে, প্রায় ১১০ বছর পার করার পর লাইনটি ন্যারোগেজ থেকে ব্রডগেজ করার সিদ্ধান্ত নেয় রেল কর্তৃপক্ষ। কাজ সম্পূর্ণ করতে মোট থরচ হয়েছে প্রায় ২০০ কোটি টাকা। পশ্চিম রেল জানিয়েছে, এই অঞ্চলে পর পর বেশ কিছু শিল্পাঞ্চল গড়ে ওঠায় কাঁচামাল আদানপ্রদানে যথেষ্ট সমস্য হচ্ছিল। তার ফলেই লাইনটি ন্যারো থেকে ব্রডগেজ করার কথা ভাবা হয়। তবে তাঁদের দাবি, শুধু কাঁচামাল নয়, খুব শীঘ্রই যাত্রীবাহ ট্রেন চানালোর পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। |
|
|
|
|