২ বৈশাখ ১৪১৮ রবিবার ১৫ এপ্রিল ২০১২


সংবাদের পরিভাষায় যাকে ‘হার্ড নিউজ’ বলে তার বাইরেও বিস্তৃত খবর-রাশি প্রতিনিয়ত গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। আর সেই পাহাড়-প্রমাণ খবরের
খনি থেকে কিছু বিষয় ভিত্তিক সংবাদকে বেছে নিয়ে আমরা সাজিয়েছি ‘সংবাদের হাওয়াবদল’। সরাসরি বেড়ানোর কথা না-বললেও এইসমস্ত খবর আসলে
হাওয়াবদলকে কেন্দ্র করেই। সংবাদের মোড়কে পর্যটন, চমকে দেওয়া না-জানা তথ্য, জীবজগতের পাশাপাশি পার্বণ, প্রত্নতত্ত্ব সবমিলিয়ে এক অন্য খবরের জগৎ।


খবর এক মুঠো
এক ঝলকে ঘুরে আসা ভিন্ন স্বাদের খবর-দুনিয়ায়...
ঐতিহ্য
• অনলাইনে আইনস্টাইন
গত ১৯ মার্চ থেকে আইনস্টাইনের সমস্ত লেখা পাওয়া যাচ্ছে ইন্টারনেটে। কাজেই আইনস্টাইন সংগ্রহালয়ের প্রায় ৮০ হাজার ‘আইটেম’ এখন পাওয়া যাবে মাউস ‘ক্লিক’ করলেই। এর মধ্যে রয়েছে তাঁর বিভিন্ন গবেষণাপত্র-সহ বহু ব্যক্তিগত চিঠিপত্র। এমনকী প্রায় ডজনখানেক প্রেমিকার সঙ্গে তাঁর চিঠিপত্রের আদানপ্রদান হয়েছিল। সেগুলো তো পড়া যাচ্ছেই, অসুস্থ মাকে পাঠানো তাঁর পোস্টকার্ডও দেখা যাচ্ছে এখন অনলাইনে। ব্যক্তিগত চিঠিপত্র ছাড়াও সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয়ে বহু চিঠি লিখেছিলেন আইনস্টাইন। এর মধ্যে রয়েছে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ, আরব-ইজরায়েল দ্বন্দ্ব ইত্যাদি বিষয়। এ ছাড়াও গবেষণাপত্রের ‘হাই রেজিলিউশন’ ছবিও এখন থেকে মিলবে। এত দিন জেরুজালেমের হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ছিল আইনস্টাইন সংগ্রহালয়। এর মাত্র কিছু অংশই পাওয়া যেত ইন্টারনেটে। ধীরে ধীরে সমস্তটাই অনলাইনে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ৮০ হাজার বিষয়কে তালিকাভুক্ত করে একটি সূচিপত্রও প্রকাশ করবেন তাঁরা। বিশেষজ্ঞদের মতে পুরো বিষয়ে উপকৃত হবেন বিশ্বব্যাপী গবেষকরা। এখন থেকে অতি সহজেই তাঁরা আইনস্টাইনের লেখার স্বাদ পাবেন।

• বন্ধ হল এনসাইক্লোপিডিয়ার মুদ্রণ
শেষ হল ২৪৪ বছরের এক ‘ইতিহাস’। ছাপার হরফে আর প্রকাশিত হবে না এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা। মার্চের মাঝামাঝি এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন ব্রিটানিকা কর্তৃপক্ষ। ৩২ খণ্ডের এই ‘রেফারেন্স’ বই নতুন করে মুদ্রিত না হলেও অনলাইনে যথারীতি মিলবে এর নিয়মিত সংস্করণ। সংস্থার এই সিদ্ধান্তের পেছনে মূলত রয়েছে আর্থিক দিক। বই প্রকাশের বিপুল খরচ কমাতে এখন থেকে কেবলমাত্র বৈদ্যুতিন মাধ্যমেই প্রকাশিত হবে এনসাইক্লোপিডিয়া। আর্থিক দিক ছাড়াও প্রতিযোগিতার বাজারে উইকিপিডিয়ার মতো ওয়েবসাইটগুলির সঙ্গে লড়াইয়ে টিকে থাকতে নেওয়া হয়েছে এই সিদ্ধান্ত। আগে বাড়ি-বাড়ি ঘুরে বিক্রি করা হত এই সহায়ক বই। কিন্তু দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে সেই ঐতিহ্য বজায় রাখা আর সম্ভব নয়, মনে করছে এই সংস্থা। এই কারণেই সম্প্রতি ট্যাবলেট কম্পিউটারে পড়ার উপযোগী এনসাইক্লোপিডিয়ার নব-সংস্করণ প্রকাশ করা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, এই বই বিক্রির লাভের প্রায় ৮৫ শতাংশই আসে অনলাইন-বিক্রির মাধ্যমে। সংস্থার দাবি, সাম্প্রতিক কালে ছাপার হরফে প্রকাশিত এনসাইক্লোপিডিয়ার বিক্রি কমেছে উল্লেখযোগ্য ভাবে। ফলে এই সিদ্ধান্ত কোনও এক সময় নিতেই হত!

• বিবেকানন্দের স্মৃতি দার্জিলিং রাজবাড়িতে
দার্জিলিঙে পাহাড়ের কোলে নীল গম্বুজ দেওয়া প্রাসাদোপম বর্ধমানের রাজবাড়ি উদয়মহল। এর প্রধান ফটকের বাঁ দিকেই রয়েছে পাথরের তৈরি একটা দোতলা বাড়ি। চন্দ্রকুঠী। তৈরি হয়েছিল ১৮৬০ সালে। তার একতলায় বিশাল হলঘরের ডান পাশের একটি ঘরে, ১৮৯৭ সালের কয়েকটা দিন কাটিয়েছিলেন বিবেকানন্দ। তখন তিনি অসুস্থ। দার্জিলিং থেকে ফিরে ৫ মে আমেরিকাবাসী এক ভক্তকে চিঠিতে লিখলেন, “দার্জিলিঙে থাকতে আমি সম্পূর্ণ রোগমুক্ত হয়েছিলাম; ...দার্জিলিঙে শুধু মানসিক-চিকিৎসা-সহায়েই আমি নীরোগ হয়েছিলাম।” সেই ঘর লাগোয়া উত্তরের ঘেরা বারান্দায় বড় বড় কাচের জানলা। মেঘমুক্ত দিনে সেই জানলা খুললেই সামনে দেখা যায় কাঞ্চনজঙ্ঘা। সেই ঘরে এখন আসবাব নেই। কাঠের মেঝে। এক পাশে ফায়ার প্লেস। এই চন্দ্রকুঠী এখন অতিথি নিবাস করতে চান বর্ধমান রাজবাড়ির বর্তমান কর্তারা। মহারাজ বিজয়চাঁদের অতিথি হয়ে চন্দ্রকুঠীতে উঠেছিলেন বিবেকানন্দ। বিবেকানন্দ ওই একই বছরে দার্জিলিঙের আর একটি বাড়িতেও বেশ কয়েকদিন কাটিয়েছিলেন। সপার্ষদ উঠেছিলেন দার্জিলিঙের সরকারি উকিল এবং তাঁর অনুরাগী মহেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি ‘ব্যালেন ভিলা’-তে। সেই বাড়ির এখন কোনও চিহ্ন নেই। তা ভেঙে অন্য ভবন তৈরি হয়ে গিয়েছে। ওই একই বছরে ১৯ মার্চ এ বাড়িতে বসেই আর এক ভক্তকে বিবেকানন্দ চিঠিতে লিখেছিলেন, “আমার মনে হয়, পর্বতরাজ হিমালয়ের হিমানীমণ্ডিত শিখরগুলি মৃতপ্রায় মানবদিগকেও সজীব করিয়া তোলে।” তিনি দ্বিতীয় ও শেষবার দার্জিলিঙে এসেছিলেন ১৮৯৮ সালের মার্চে। কলকাতায় ফিরে গিয়েছিলেন ২ মে। আর কখনও তিনি দার্জিলিঙে ফেরেননি।

প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার
• খননকার্য শুরু দাঁতনের মোগলমারিতে
ষষ্ঠ পর্যায়ের খননকার্য সম্প্রতি শুরু হয় দাঁতনের মোগলমারিতে। শেষ পর্যায়ের এই খননকার্যে প্রত্নক্ষেত্রটির দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে খনন করা হচ্ছে। এর ফলে সমগ্র বৌদ্ধবিহারের নকশা তৈরি করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন খননকার্যের দায়িত্বে থাকা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রাক্তন প্রধান অশোক দত্ত। তিনি জানান, বৌদ্ধবিহারটির নাম নির্দেশক কোনও লিপি পাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে এ বার। প্রত্নক্ষেত্রের উত্তর-পূর্ব দিকে একটি দিঘির পাড়ে খনন করার সময় নারীমূর্তির মুখের অংশাবশেষ মিলেছে। মূর্তির মাথায় রয়েছে তিন খোঁপার অলঙ্করণ। অশোকবাবুর মতে, খণ্ডিত মূর্তিটি গুপ্তযুগের পরবর্তী সময়ে। অষ্টম শতাব্দীর। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে বৌদ্ধবিহার লাগোয়া কোনও ব্যক্তির বাড়ি বা মন্দিরের দেওয়ালের অলঙ্করণের অংশ এটি। প্রথমে পোড়া মাটির তৈরি নানা সামগ্রীর ভগ্নাংশ উদ্ধার হয়েছে। ২০০৩-০৪ প্রথমবার এই প্রত্নক্ষেত্রের পশ্চিম ও উত্তর ভাগের বসতি এলাকায় খনন হয়। ২০০৬-০৭ সালে পূর্ব ও দক্ষিণ ভাগে খনন চলে। বসতি এলাকা থেকে বুদ্ধের পাশাপাশি পাওয়া গিয়েছে গণেশ, লক্ষ্মীর মূর্তিও। প্রত্নক্ষেত্রের উপরের দিকে পাওয়া গিয়েছে প্রদীপ, অর্ঘ্য পাত্র, মৃৎপাত্র। ২০০৮ সালে তৃতীয় পর্যায়ের খননকার্যে মেলে পাথরের ভাঙা মূর্তি, কারুকার্যবিশিষ্ট ৪৬টি ইট, ৫ বর্গফুট বিশিষ্ট ৬টি কুঠুরি, দেওয়ালে স্ট্যাকোর অলঙ্করণ, বুদ্ধ-মূর্তির গায়ে পালি লিপি। চতুর্থ দফায় ২০০৯ সালে উত্তর দিকে খনন করে মেলে প্রবেশদ্বার। ২০১০ সালে বৌদ্ধ স্থপতির ভূমি নকশা উদ্ঘাটিত হওয়ার পাশাপাশি দু’শোরও বেশি কড়ি, প্রধান মূর্তির ভিত্তিভূমি-সহ নানা সামগ্রী উদ্ধার হয়। অশোকবাবু বলেন, “রাজ্যে যে তিনটি বৌদ্ধবিহারের নিদর্শন মিলেছে (বাকি দু’টি মুর্শিদাবাদের কর্ণসুবর্ণের রক্তমৃত্তিকা, মালদহের নন্দবিহার) তার মধ্যে সবচেয়ে বৈচিত্র্যপূর্ণ এই মোগলমারি।”

• হিউয়েন সাং কথিত বিহারের খোঁজ

চিনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাং দক্ষিণবঙ্গে যে বৌদ্ধ মহাবিহারগুলির কথা বলেছিলেন, তারই কোনও একটির খোঁজ মিলেছে বলে অনুমান করছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতত্ত্ব বিভাগ। পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনের কাছে মোগলমারিতে সম্প্রতি আবিষ্কৃত বৌদ্ধ প্রত্নস্থলটিতে খননকার্যের দায়িত্বে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান অশোক দত্ত। ষষ্ঠ বার উৎখননের পরে তিনি বলেন, “হিউয়েন সাং তাম্রলিপ্ত বন্দরের কাছে যে ১০টি মহাবিহারের কথা বলেছেন, তার সঙ্গে এই বিহারটির মিল আছে। এই এলাকায় এবং এত প্রাচীন আর কোনও বিহার পাওয়া যায়নি।” তবে এখনও ‘বিহার’টির কোনও নামমুদ্রা পাওয়া যায়নি। এত বড় ‘বিহার’ অবশ্য বাংলায় কমই পাওয়া গিয়েছে। মূল বৌদ্ধ মন্দিরটির প্রস্থ ও দৈর্ঘ্য ৬০ মিটার করে। সমসাময়িক নালন্দায় যদিও মূল মন্দিরটির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ ৭০ মিটার করে। মোগলমারির প্রত্নস্থলটির আর একটি বৈশিষ্ট্য হল, তার দেওয়ালের অলঙ্করণের বৈচিত্র্য। চারপাশের প্রাচীরের গায়েও রয়েছে স্টাকো বা চুন-বালির মণ্ড দিয়ে তৈরি অলঙ্করণ। যা খুব কম জায়গাতেই পাওয়া গিয়েছে। মূর্তিতত্ত্ববিদ অনসূয়া দাস ‘বিহার’টি দেখে বলেন, “মূর্তির গঠন থেকে বোঝা যাচ্ছে তা তৈরি হয়েছে পঞ্চম থেকে সপ্তম শতাব্দীর মধ্যে। পাল যুগের শিল্পরীতির কোনও প্রভাব নেই। তাই তার ঠিক আগেই এই বিহার তৈরি হয়েছিল বলে অনুমান করা হচ্ছে।”

• অবহেলায় পড়ে পাল যুগের স্থাপত্য
রাজ্য প্রত্নতত্ত্ব দফতরের গাফিলতিতে পাল যুগের বেশ কিছু স্থাপত্য-ভাস্কর্য মুর্শিদাবাদের আজিমগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে পড়ে থেকেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বছর দুয়েক আগে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের মাটি খুঁড়তে গিয়ে আজিমগঞ্জের বেণিপুর গ্রাম থেকে পাল যুগের ভাস্কর্য পাওয়া যায়। সেই সময়ে পাল আমলের ওই স্থাপত্য, ভাস্কর্য ও অন্য পুরাবস্তু সংগ্রহ করে আজিমগঞ্জে পুলিশ ক্যাম্পে রাখা হয়। পরে জিয়াগঞ্জে রাজ্য পুরাতত্ত্ব দফতরের অধীনে যে জেলা সংগ্রহশালা রয়েছে, সেখানে প্রদর্শনের জন্য নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হলেও তা কার্যকরী হয়নি। সেই সময়ে মন্দিরের প্রবেশ দ্বারের কালো পাথরের দু’টি স্তম্ভ-সহ অন্য স্থাপত্যের অংশ বিশেষ পাওয়া গিয়েছিল। এ ছাড়াও পুরাবস্তু হিসেবে বিভিন্ন মাটির পাত্র, পোড়া মাটির বল এবং দৈনন্দিন ব্যবহারের জিনিসপত্রও প্রত্নস্থল থেকে সংগ্রহ করা হয়। রাজ্য প্রত্নতত্ব দফতরের উপ-অধিকর্তা অমল রায় বলেন, “পাল আমলে প্রচুর পরিমাণে পাথরের স্তম্ভ ব্যবহারের রেওয়াজ ছিল। পাল যুগে পোড়ামাটির শিল্পও জনপ্রিয় ছিল। বৌদ্ধ ধর্মের পৃষ্ঠপোষকতা করার সুবাদে তাঁরা যে বিহার তৈরি করতেন, তার পাশে প্রচুর ছোট ছোট কক্ষ, স্তূপ, মন্দির, শিক্ষাকেন্দ্র, কূপ, স্নানাগার, রন্ধনশালা, ভোজনালয় নির্মাণ, এক সঙ্ঘবদ্ধ জীবনের পরিচয় বহন করে।” তিনি বলেন, “ইতিহাসের দিক থেকে আজিমগঞ্জের এই এলাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

পরিবেশ ও বন্যপ্রাণ
• পুরনো ভুল ভেঙে ম্যামথ হত্যায় কাঠগড়ায় মানুষ
প্রায় ছ’ হাজার বছর আগের কথা। হঠাৎ পৃথিবী থেকে হারিয়ে গেল ম্যামথরা। কিন্তু কেন? সভ্য মানুষেরা ভুলে যায়নি অনেকটা হাতির মতো দেখতে, লোমশ, লম্বা দাঁতের বিশালাকার এই প্রাণীদের। কারণ খুঁজতে বিশ্বের নানা প্রান্তে গবেষণা চলছিলই। জানা গেল, যারা তার অন্তর্ধান-রহস্য সমাধানে নেমেছেন, সেই ‘সভ্য’ মানুষই এদের নিখোঁজ হওয়ার অন্যতম কারণ হতে পারে। ব্রিটেন ও সুইডেনের এক দল বিজ্ঞানী এ রকমই দাবি জানিয়েছেন। ‘মলিকিউলার ইকোলজি’ নামের পত্রিকায় তাঁদের গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। এত দিন মনে করা হত ম্যামথরা নিজেদের গোষ্ঠীর মধ্যেই প্রজননে লিপ্ত হওয়ায় (অন্তঃপ্রজনন) তাদের দেহে জিন বৈচিত্র্য ক্রমশ কমে যেতে শুরু করে। ফলে পৃথিবীর ক্রমাগত পরিবর্তিত পরিবেশে খাপ খাওয়ানোর ক্ষমতাও কমে যেতে থাকে তাদের। এবং এক সময় তারা পৃথিবী থেকে হারিয়ে যায়। কিন্তু সম্প্রতি ব্রিটিশ এবং সুইডিশ বিজ্ঞানীদের গবেষণা বদলে দিয়েছে পুরনো সব ‘সংজ্ঞা’। গবেষণার কাজে বিজ্ঞানীরা বেছে নিয়েছিলেন রাশিয়া থেকে দেড়শো কিলোমিটার দূরে সুমেরু মহাসাগরের রাঙ্গেল দ্বীপকে। পুরনো গবেষণা বলে প্রায় ১০ হাজার বছর আগে ইউরেশিয়া ও উত্তর আমেরিকা থেকে বিলুপ্ত হয়ে যায় ম্যামথরা। এ সময় তাদের জিনের বৈচিত্র্য প্রায় ৩০ শতাংশ কমে গিয়েছিল। শুধু হাজার খানেক ম্যামথ নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখে রাঙ্গেল দ্বীপে। তাই এ বার এই দ্বীপটিকেই বেছে নিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। রাঙ্গেল সুমেরু মহাসাগরের একটা ছোট্ট দ্বীপ। ফলে এই দ্বীপের মধ্যেই আটকে পড়া ম্যামথরা নিজেদের মধ্যেই প্রজননে লিপ্ত হতে বাধ্য হয়েছিল। গবেষকদের ধারণা ছিল অন্তঃপ্রজননই রাঙ্গেল থেকে ম্যামথদের অস্তিত্ব মুছে দেওয়ার কারণ। কিন্তু সেখান থেকে উদ্ধার হওয়া নমুনা বলছে অন্তঃপ্রজনন তাদের মৃত্যু কারণ হতে পারে না। মুখ্য গবেষক লাভ ডেলেনের কথায়, “গবেষণার ফল বলছে পরিবেশের ব্যাপক পরিবর্তন, বিশেষ করে পৃথিবীতে মানুষের রাজত্ব বা আবহাওয়ার বদল এদের অস্তিত্ব লোপের প্রধান কারণ।”

• জলবায়ুর ফাঁসে সুন্দরবন, বলছে রিপোর্ট
সুন্দরবনের দুর্ভোগ বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে জলবায়ুর ক্রমাগত পরিবর্তন। জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে সাগরের জলস্তর ক্রমশ বাড়ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিচ্ছে ঘনঘন, বৃষ্টিপাতের ধরন যাচ্ছে বদলে। এমনকী বদলে যাচ্ছে মাটির চরিত্রও। ফলে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের বেঁচে থাকার লড়াই আরও কঠিন হচ্ছে বলে দিল্লির একটি পরিবেশ সংস্থার সমীক্ষা রিপোর্টে বলা হয়েছে। সুন্দরবনে সমীক্ষা চালিয়ে জলবায়ুর পরিবর্তনের মুখে স্থানীয় মানুষের দুর্ভোগের কথা তাদের রিপোর্টে বিস্তারিত আলোচনা করেছে দিল্লির সংস্থা ‘সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট’ (সিএসই)। সংস্থাটির বক্তব্য, সুন্দরবনের মানুষের প্রাত্যহিক দুর্ভোগে জলবায়ুর পরিবর্তনের ভূমিকা এবং তার জেরে পরিবেশ কতটা বদলাচ্ছে, তা ঠিক মতো না জেনে এই অঞ্চলের উন্নয়নের পরিকল্পনা করা সম্ভব নয়। এমনকী বাঁধ তৈরির প্রকল্প রূপায়নের সময়েও বিষয়টি বিবেচনায় রাখতে হবে বলে তাদের অভিমত। সম্প্রতি প্রকাশিত ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে: • সুন্দরবনে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা প্রতি দশকে ০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস করে বাড়ছে। অথচ এই বিষয়টির আন্তর্জাতিক গড় ০.০৬ ডিগ্রি। • গত ২৫ বছরে সুন্দরবনে জলস্তর বেড়েছে আন্তর্জাতিক গড়ের দ্বিগুণ। • এই অঞ্চলের বৃষ্টিপাতও এখন হয়ে পড়েছে ভীষণ রকম বিক্ষিপ্ত এবং তার তীব্রতাও অনেক বেড়েছে। • বঙ্গোপসাগরের ওপর ঘূর্ণাবর্ত ১২০ বছরে ২৬ শতাংশ বেড়েছে।

• ‘মেথুসেলিনা’র মৃত্যু
ফেব্রুয়ারির শেষে মারা গেল অস্ট্রেলিয়ার লিউইস দ্বীপের উত্তর টুলস্টার গ্রামের ২৫ বছর ১১ মাসের ‘মেথুসেলিনা’। না, কোনও পূর্ণবয়স্ক যুবতী নয়, ‘মেথুসেলিনা’ ছিল অস্ট্রেলিয়া তথা বিশ্বের সবথেকে বেশি বয়স্ক স্ত্রী ভেড়া। ২০০৯ থেকেই তার বয়সের হিসাব রাখা শুরু করেছিলেন তার মালিক জন ম্যাকাইভার। ইচ্ছে ছিল বয়সের বিচারে গিনেস বুকে নাম তোলার। কারণ সে বছরই মারা যায় অস্ট্রেলিয়ার আর একটি ভেড়া ২৩ বছরের ‘লাকি’, সে সময়কার বিশ্বের সবথেকে বৃদ্ধ ভেড়া। ম্যাকাইভার জানিয়েছেন, পাহাড় চূড়া থেকে নীচে পড়ে মৃত্যু হয়েছে ‘মেথুসেলিনা’র। প্রায় একই ভাবে মারা গিয়েছিল ‘লাকি’। অস্ট্রেলিয়ার প্রচন্ড দাবদাহে প্রাণ হারিয়েছিল সে। ম্যাকাইভার বলেছেন, ‘মেথুসেলিনা’ শান্তিপূর্ণ ভাবে মারা গেছে তা বলা যাবে না। এখনও পর্যন্ত বিশ্বের সবথেকে বেশি বয়স্ক ভেড়ার গিনেস রেকর্ড রয়েছে ২৮ বছর ৫১ সপ্তাহ বয়সি ভেড়ার। ১৯৮৯-এ মারা যায় সে। গিনেস বুকের তরফে জানানো হয়েছে যে, তার মৃত্যুর পরে ‘লাকি’ই ছিল সে রেকর্ডের সবথেকে বড় দাবিদার। কিন্তু ২০০৯-এ তার আচমকা মৃত্যুর পরে সে রেকর্ড অক্ষুণ্ণ থাকে। এর পর সে রেকর্ড ভাঙার দিকে এগোচ্ছিল ‘মেথুসেলিনা’। যদিও ম্যাকাইভার সে স্বীকৃতির জন্য গিনেস বুকে আবেদন করেননি কখনও। কিন্তু ‘লাকি’র মৃত্যুর পর থেকে গিনেস বুকের তরফে সবথেকে বৃদ্ধ ভেড়ার খোঁজ জারি ছিল। তারা জানিয়েছেন, এই স্বীকৃতির জন্য ‘উপযুক্ত’ বয়সি ভেড়ার মালিক তাদের কাছে আবেদন করতে পারেন।

• কুমিরের ‘বাইট ফোর্স’-এর পরীক্ষা
যে কোনও প্রাণীর থেকে কুমিরের ‘বাইট ফোর্স’ অনেক বেশি। ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক গ্রেগরি এম এরিকসন সম্প্রতি ২৩ টি প্রজাতির কুমিরের ‘কামড়ানোর শক্তি’ নিয়ে গবেষণা করেন। এই ২৩ প্রজাতির কুমিরের মধ্যে ছিল অ্যালিগেটর, কেইমান্স, ঘড়িয়াল ইত্যাদি। প্রত্যেকটি প্রজাতির আলাদা ভাবে ‘বাইট ফোর্স’ পরীক্ষা করেন তিনি। দেখা যায়, নোনা জলের কুমিরের ক্ষেত্রে এই শক্তির পরিমাণ ৩ হাজার ৭০০ পাউন্ড। এমনও দেখা গেছে, প্রতি বর্গ ইঞ্চিতে ‘বাইট ফোর্স’ ছাড়িয়েছে ৩ লক্ষ ৬০ হাজার পাউন্ড। এরিকসন জানান, ৮৫ লক্ষ বছর আগে থেকে কুমিরদের অস্তিত্ব টিকে থাকার পিছনে রহস্য কী তা জানতে আরও গবেষণা করা হচ্ছে। প্রাচীন কুমিরদের সঙ্গে বর্তমান কুমির-প্রজাতির শারীরিক ও কার্যগত সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য কতটা তাও জানার চেষ্টা চলছে। উল্লেখ্য, প্রাচীন কুমিরদের ‘বাইট ফোর্স’ ছিল ২৩ হাজার পাউন্ড, যা ‘টি রেক্স’ ডাইনোসরের থেকে দু’গুণ বেশি। প্রাণী বিশেষজ্ঞরা জানান, ‘বাইট ফোর্স’ প্রধানত দেহের আকৃতির উপর নির্ভর করে। তবে দাঁতের গঠন, চোয়ালের আকৃতি বা ক্ষমতা ও খাদ্যাভ্যাসও এর জন্য অনেকখানি দায়ী।

পার্বণ
• গাজনের সং
বাংলার লৌকিক উৎসবগুলোর মধ্যে অন্যতম গাজন। গ্রামবাংলায় এটিই শিবের গাজন বা আদ্যের গাজন বলে পরিচিত। কোনও কোনও অঞ্চলে একে নীলের গাজনও বলা হয়। নীল বলতে নীলকণ্ঠ বা শিব। উত্তরবঙ্গে বিশেষ করে মালদহ জেলায় এই গাজনই ‘গম্ভীরা’ নামে পরিচিত। গাজন মূলত সূর্যোৎসব। এটি পক্ষকাল স্থায়ী হয়। চৈত্র-সংক্রান্তির দিন সূর্যের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ‘আয়ন’ বা ‘যাত্রা’ শুরু হয়। সূর্য দ্বাদশ রাশির পরিক্রমা শেষ করে আবার পূর্ব পথে নতুন যাত্রার জন্য নতুন রাশিতে প্রবেশ করে। এই উপলক্ষেই গাজন। গাজনের শেষে শুরু হয় চড়ক। গাজনের সঙ্গেই জড়িয়ে আছে সং। অভিনব কসরত দেখানোর খেলা। যেমন, দেহ তির দিয়ে বিদ্ধ করা, জিভ ফোঁড়া, শাল কাঁটার উপর ঝাঁপ দেওয়া অথবা কাঁটা গাছের ডালের উপর ঝাঁপিয়ে পড়া, ফুল খেলা (জ্বলন্ত অঙ্গার হাতে নিয়ে ছোড়াছুড়ি), গণ্ডদেশ বিদ্ধ করা, আগুনের উপর দোল খাওয়া ইত্যাদি খেলায় দর্শকদের চমকে দেওয়া হয়। এই সব লোকখেলাই উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ। চড়কের সন্ন্যাসীরা তাঁদের পিঠের মেরুদণ্ডে লোহার বড়শি বিঁধিয়ে ফুটো না করে চড়ক গাছের অগ্রভাগে মাটির সঙ্গে সমান ভাবে রাখা একটি লম্বা কাঠের খুঁটি হাত দিয়ে ধরে রাখে। সন্ন্যাসীকে পিঠমোড়া করে তার সঙ্গে বেঁধে দেওয়া হয়। সন্ন্যাসী শূন্যে ঘোরে। এই সব সন্ন্যাসীদের ‘বারনামি’ বলে। চড়কের দিন ভক্ত ডাকিনী, যোগিনী, বুড়া-বুড়ি, হনুমানের মুখোশ পরে নাচ করে। শিব-পার্বতী সেজে নাচ দিনাজপুরের লোক সংস্কৃতির অঙ্গ। অনেকে গায়ে কালি মেখে তার মধ্যে সাদা সাদা ছাপ ফেলে ভূত-পেতনি সাজেন। গ্রাম বাংলার লোক-সংস্কৃতিতে গাজন ও সঙের গুরুত্ব আছে। এরাই নতুন বছরের বার্তা বহন করে আনে।

• অগ্রদ্বীপেই জেলার গঙ্গাসাগর
ভক্ত গোবিন্দ ঘোষের পারলৌকিক কাজ করেছিলেন শ্রীচৈতন্য নিজেই। গোপীনাথ বেশ ধরে গিয়েছিলেন সেই শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে। অগ্রদ্বীপে প্রচলিত কাহিনি এটাই। তবে, চৈতন্যদেবকে ঘিরে এমনই নানা কাহিনি গড়ে উঠেছে। ইতিহাসে সেই সব কাহিনির সমর্থন অনেক সময়েই মেলে না। কিন্তু ভক্তেরা বিশ্বাস করেন। কাটোয়া এমনিতেই চৈতন্যজীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি জনপদ। প্রায় পাঁচ শতাব্দী পরে সেখানে এখন ফি বছর চৈত্র মাসের কৃষ্ণা চতুর্দশী তিথিতে মেলার চেহারা নিয়েছে ওই অনুষ্ঠান। এক সময় এই মেলা কৃষ্ণনগর রাজবাড়ি থেকে পরিচালিত হত। এখন অবশ্য মেলা পরিচালনা করেন গ্রামের বিশিষ্টজনেদের নিয়ে গঠিত মেলা কমিটি। এই মেলা এখন অবশ্য তার নিজের পরিচয় তৈরি করে নিয়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে বৈষ্ণব শিষ্যেরা এসে আখড়া বাঁধেন মেলার মাঠে। পুণ্যতিথিতে ভাগীরথীতে স্নান করেন লক্ষাধিক মানুষ। বসে বাউল গানের আসর। গঙ্গাসাগর মেলায় সাধক বাউল থেকে আমজনতা আখড়া বেঁধে রাতভর অপেক্ষা করেন ‘পুণ্য মুহূর্তে’ স্নান করার জন্য। এখানেও তেমনটাই হয়। এ ছাড়াও যে কোনও গ্রামীণ মেলার মতোই হরেক জিনিসের পসরা সাজিয়ে বসা দোকান আর নাগরদোলা। তবে আখড়া-ই কাটোয়ার অগ্রদ্বীপে গোপীনাথ মেলাকে স্বতন্ত্র করে তুলেছে। স্থানীয়দের কাছে এই মেলা ‘ঘোষ ঠাকুরের মেলা’ বলেও পরিচিত।

• লোকনৃত্য উৎসব দিঘায়
দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির লোকনৃত্য-উৎসব সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হল দিঘার সমুদ্র সৈকতে। ‘কল অব দ্য নর্থ-ইস্ট’ নামে ওই উৎসবের উদ্বোধন করেন নগর উন্নয়ন দফতরের প্রধান সচিব তথা দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন। ভারত সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রকের পূবার্ঞ্চল সাস্কৃতিক কেন্দ্র ও দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের যৌথ উদ্যোগে এই উৎসব আয়োজিত হয়েছিল। পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিউ দিঘার মিনি হলিডে-হোম সেক্টরে চারদিন ব্যাপী এই উৎসবে যোগ দিয়েছিল অরুণাচল প্রদেশ, অসম, মণিপুর, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, সিকিম ও ত্রিপুরার লোকশিল্পীদল। লোকনৃত্য ছাড়া ফ্যাশন-প্যারেড, হস্তশিল্প মেলা ও চিত্র প্রদর্শনীরও আয়োজন ছিল বলে জানিয়েছেন দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের নির্বাহী আধিকারিক সৌমেন পাল। দিঘার সমুদ্র-সৈকতে এই প্রথম এমন অনুষ্ঠানের আয়োজিত হল।

ট্যুরিস্ট স্পট
• ইতিহাসের কামতানগর
কোচবিহার থেকে বাইশ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে দিনহাটা মহকুমার খলিসা গোঁসানিমারি গ্রামে এখনও ঘুমিয়ে আছে কামতাপুর দুর্গ। ইতস্তত বিক্ষিপ্ত ঢিপি ও টুকরো ইটের কোলাজে সীমাবদ্ধ কামতানগর। এক সময় পশ্চিমে করতোয়া নদী থেকে পুবে ব্রহ্মপুত্র আর উত্তরে ভুটান থেকে দক্ষিণে বগুড়া জেলা পর্যন্ত ছিল এই রাজনগরের সীমানা। এখন দুর্গটি গোঁসানিমারিগড় বা ‘রাজপাট’ নাম নিয়েছে। এখানকার ইতিহাস নিয়ে একটি প্রচলিত উপকথা হল গোঁসানিদেবীর নির্দেশে বিশ্বকর্মা রাতারাতি কান্তেশ্বর রাজের সুরক্ষায় এই গড় গড়ে দেন। দেবীর কৃপায় কান্তেশ্বর রাজা হলেন। মূলত গোঁসানিদেবীর মাহাত্ম্য বর্ণনার জন্যই পুরুষ চরিত্র কান্তেশ্বরের জন্ম। তবে আধুনিক ইতিহাস বলে কামতা রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা কামরূপ রাজা সন্ধ্যা রায়। এই রাজপাটের উত্তর-দক্ষিণ ও পশ্চিম ঘিরে দীর্ঘ মাটির প্রাকার এখনও চোখ টানে। বর্তমান প্রাচীর উচ্চতায় প্রায় ৪০ ফুট এবং চওড়ায় ৫৩ ফুট। দুর্গের দক্ষিণ-পূর্বে যে কয়েকটি প্রবেশ দ্বারের অস্তিত্ব পাওয়া যায় সেগুলির বিশেষ কিছু নাম রয়েছে। যেমন, শিলদুয়ার, সন্ন্যাসীদুয়ার, বাঘদুয়ার, জয়দুয়ার, নিমাইদুয়ার ও হেঁকোদুয়ার। মনে করা হয়, প্রস্তরনির্মিত হওয়ায় প্রবেশপথের নাম শিলদুয়ার, আবার প্রবেশপথের উপরে বাঘের মূর্তি খোদিত থাকায় নাম বাঘদুয়ার, যুদ্ধজয়ের পর রণজয়ীরা প্রত্যাবর্তন করতেন, জয়দুয়ার নামের প্রবেশ পথে। কোচবিহারে ধর্মপ্রচারের উদ্দেশ্যে নিমাই এসেছিলেন। তিনি যে পথে এই দুর্গে প্রবেশ করেছিলেন সেটি নিমাইদুয়ার নামে পরিচিত। কিন্তু গোঁসানিমঙ্গল কাব্যে হেঁকোদুয়ার ও নিমাইদুয়ারের উল্লেখ নেই। রয়েছে ধর্মদুয়ার ও অক্ষয়দুয়ার নামের দুটো আলাদা প্রবেশ পথের কথা। শিলদুয়ার ছাড়া রাজপাটের অন্যান্য দুয়ারগুলি লোহা বা কাঠের তৈরি ছিল। প্রাকৃতিক দুর্যোগে অনেক কাল আগে সে সব সিঙ্গিমারি নদীতে ভেসে যায়। ১৮০৮-০৯ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সিস বুকানন প্রথম এ দুর্গ পরিদর্শন করলে ইতিহাসের ঘুম ভাঙে। তাঁর বিবরণ অনুযায়ী, এই পরিদর্শনের কিছু দিন আগেও এই গড়ের বুকে কয়েকটি বেলেপাথরের মূর্তি দেখা যেত। পরবর্তীতে সেগুলো কোচবিহার রাজবাড়িতে সরিয়ে আনা হয়। বুকাননের দেখা নিদর্শনের অধিকাংশই আজ অন্তর্হিত। বর্তমানে শুধুই এক ঢিবির দেখা মেলে।

• কামতেশ্বরী মন্দির
কোচবিহার জেলার দিনহাটা মহকুমার অনন্য এক পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন কামতেশ্বরী মন্দির। মন্দিরের আরাধ্য দেবী মা ভবানী। তাই এটি ভবানী মন্দির নামেও পরিচিত। মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা কে, তা নিয়ে মতভেদ আছে। শোনা যায়, সেনবংশীয় রাজা নীলধ্বজ ছিলেন মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ছিলেন কামতেশ্বরীর ভক্ত। দেবীর নাম অনুসারে রাজ্যের নাম হয় কামতা, রাজধানী হল কামতেশ্বর। সেনবংশীয় আরও দু’জন রাজা চক্রধ্বজ ও নীলাম্বর কামতাপুরের শাসক ছিলেন। কারও মতে নীলাম্বরই এই মন্দিরটি তৈরি করেন। কিংবদন্তি, কামতাদেবীর ভক্ত ছিলেন কামতেশ্বর নামে অন্য এক রাজা। যিনি আদি মন্দিরটি তৈরি করেন। তবে ইতিহাসবিদদের মতে, মহারাজা প্রাণনারায়ণের সময় কোচবিহারের বেশির ভাগ মন্দির তৈরি হয়। সুতরাং কামতেশ্বরী মন্দিরের আদি প্রতিষ্ঠাতা মহারাজা প্রাণনারায়ণ। বর্তমান মন্দিরটি গড়ে ওঠে ১৬৬৫ খ্রিস্টাব্দে। রাজার আদেশে কবি মণ্ডল নামে জনৈক ব্যক্তি মন্দিরের নির্মাণ কাজ করেছিলেন। মন্দিরের জন্য মহারাজা প্রচুর ভূসম্পত্তিও দান করেন। তাঁর মন্দির প্রতিষ্ঠার পাথুরে প্রমাণটি রয়েছে পশ্চিমদিকের প্রবেশপথের দরজার উপরে। মন্দিরের গঠনশৈলী অভিনবত্বের দাবি রাখে। মন্দির প্রাঙ্গণ সুউচ্চ প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। উত্তর ও পশ্চিমদিকে রয়েছে দু’টি প্রবেশ পথ। মন্দিরটি ৪৫ ফুট উঁচু। পশ্চিম দরজার ওপরে রয়েছে নহবৎখানা। গর্ভগৃহে কাঠের সিংহাসনে দেবী বিরাজিত। এ ছাড়া ভেতরে রয়েছে পালযুগের শিল্প-নিদর্শন। পাথরের বিষ্ণু মূর্তি, সূর্য মূর্তি, ব্রহ্মা ও শিবলিঙ্গ। মূল মন্দিরের উত্তরপূর্ব কোণে রয়েছে শিবমন্দির। মন্দির চত্বরে রয়েছে ভোগ ঘর, হোম ঘর ইত্যাদি। মন্দিরের বিশেষ উৎসবটি হয় মাঘ মাসে। কোচবিহার দেবোত্তর ট্রাস্ট বর্তমানে মন্দিরটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে।

• ভূপালপুর রাজবাড়ি
উত্তর দিনাজপুর জেলায় ভূপালপুর গ্রামে ৩৪ নং জাতীয় সড়কের পাশে অবস্থিত ভূপালপুর রাজবাড়ি। পাশ দিয়ে বইছে লুপ্তপ্রায় বীণা নদী। এক সময় এই নদী পথেই দূর-দূরান্তের বহু মানুষ এই রাজবাড়িতে আসতেন। এই সুবিশাল ঐতিহ্যবাহী দ্বিতল বাড়িটি মনোরম কারুকার্যখচিত শিল্প নিদর্শনে ভরা। আর সুরম্য অট্টালিকার প্রথম তলাটি ব্রিটিশ সরকার উনিশ শতকের গোড়ার দিকে এবং দ্বিতীয় তলাটি জমিদার ভূপালচন্দ্র রায়চৌধুরী তৃতীয় দশকে গড়ে তোলেন। উপরতলা ও নীচতলা মিলিয়ে বাড়িটিতে মোট চল্লিশটি ঘর। বড় বড় দরজা-জানলা শাল-সেগুনের। জমিদারি আমলে সব ঘরই ব্যবহার করা হত। এ বাড়ির পূজা-পার্বণে যোগ দিতেন হিন্দু-মুসলমান নির্বিশিষে সকল প্রজা। ভূপালচন্দ্র রায়চৌধুরী প্রজাবৎসল জমিদার ছিলেন। প্রতি বৃহস্পতিবার দিনাজপুর কোর্টে জেলাশাসকের পদ অলঙ্কৃত করতেন এবং নিয়মিত ‘প্রবাসি ভারতবর্ষ’ পড়তেন। এক কথায় তিনি অত্যন্ত দরদি বিদ্যোৎসাহী ও ধর্মপ্রাণ মানুষ ছিলেন। তাই ব্রিটিশ সরকারের কাছ থেকে অর্থের বিনিময়ে ‘রাজা’ উপাধি গ্রহণ করেননি। তবুও স্থানীয় অঞ্চলের মানুষজনের কাছে তিনি রাজা বলেই পরিচিত ছিল। আজও এই বাড়ি রাজবাড়ি বলে অভিহিত। রাজবাড়ির সামনের একটি সুসজ্জিত জলাধারের জলে এক সময় গোটা রাজবাড়ির ছবি ফুটে উঠত। সেই সঙ্গে মূল প্রবেশ পথের দু’ধারে সুশোভিত বৃক্ষরাজি রাজবাড়ির শোভাকে বাড়িয়ে তুলত।

পরিষেবা
• সেবক থেকে রংপো নতুন রেলপথ
মহানন্দা নদীর পাড় বরাবর ৪৫ কিলোমিটার দীর্ঘ রেললাইন তৈরি করা হবে। সেবক থেকে রংপো পর্যন্ত ওই রেললাইনের একটি অংশ নিয়ে যাওয়ার জন্য তৈরি হবে সুড়ঙ্গ। তবে তার জন্য খুব বেশি সবুজ ধ্বংস হবে না বলেই আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্যের বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন। তিনি বলেন, “উত্তরবঙ্গের সঙ্গে সিকিমের যোগাযোগ বাড়াতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” রংপো থেকে ওই রেললাইনের সিকিমে যাওয়ার কথা। মহানন্দার পাড় দিয়ে বর্তমানে ন্যারো গেজ রেললাইন রয়েছে। সেটিই ব্রডগেজ করে সেবক পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হবে। এখনকার রেললাইনটি হাতিদের যাতায়াতের পথের উপর দিয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন সময়ে ওই পথে ট্রেনের ধাক্কায় বহু হাতি মারা গিয়েছে। এই অবস্থায় নতুন রেললাইন বন্যপ্রাণীদের পক্ষে কতটা হানিকর হতে পারে, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও। তবে বনমন্ত্রী জানান, মহানন্দা অভয়ারণ্যের একেবারে সীমানা বরাবর ওই রেললাইন নিয়ে যাওয়া হবে বলে সমীক্ষার পরে জানিয়েছে রেল। শুধু রেললাইন নয়, সেবক থেকে রানিপুল পর্যন্ত ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কটিকেও পর্যটনের স্বার্থে আট থেকে ১২ মিটার চওড়া করা হবে। হিতেনবাবু আরও জানান, দক্ষিণবঙ্গের সুন্দরবনে নতুন ও সর্ববৃহৎ অভয়ারণ্য তৈরির প্রস্তাবটিও রাজ্যের ছাড়পত্র পেয়েছে। সেখানকার চুলকাটি ও দুলিভাসানি ব্লক দু’টিতে ওই অভয়ারণ্য হবে। ৩৬২ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে অভয়ারণ্য হবে বলে বন দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এখন ওই অঞ্চলের লুথিয়ানে ৩৮ বর্গ কিলোমিটার এবং হ্যালিডেতে ছয় বর্গ কিলোমিটারের দু’টি অভয়ারণ্য রয়েছে।

• দিল্লি-নাইরোবি বিমান পরিষেবা মে মাস থেকে
মুম্বইয়ের পর এ বার ভারতের দ্বিতীয় শহর হিসেবে দিল্লি থেকে সরাসরি নাইরোবি পর্যন্ত বিমান পরিষেবা চালু করছে কেনিয়া এয়ারওয়েজ। আগামী মে মাস থেকে সাপ্তাহিক ৪টি বিমান প্রাথমিক ভাবে এই পরিষেবার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। বিমান গুলিতে ২০টি বিজনেস ক্লাস এবং ১৮৯টি ইকোনমি ক্লাসের আসন থাকবে। দিল্লি ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট লিমিটেডের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক প্রভাকর রাও কেনিয়া এয়ারওয়েজের এই নতুন ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, এতে দু’ দেশের অর্থনৈতিক এবং পর্যটন ক্ষেত্র দুই-ই বিকশিত হবে। সরাসরি কোনও বিমান পরিষেবা না থাকলেও বছরে প্রায় ২৭,০০০ যাত্রী দিল্লি থেকে নাইরোবিতে যাতায়াত করেন। ২০১০ সালের তুলনায় ২০১১-তে যাত্রী সংখ্যা ১৫.৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। শ্রী রাও আরও জানিয়েছেন, আফ্রিকা এবং ভারতের মধ্যে বছরে প্রায় ৭ শতাংশ হারে এই বিমান পরিষেবার চাহিদা বাড়বে। দিল্লির পর দক্ষিণ এশিয়ায় আরও চারটি নতুন শহরে এ পরিষেব শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন কেনিয়া এয়ারওয়েজের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক টিটাস নাইকুনি।

• দিল্লি মেট্রো স্টেশনে এ বার ওয়াই-ফাই পরিষেবা
দিল্লির দ্রুতগতি সম্পন্ন মেট্রো (এয়ারপোর্ট মেট্রো এক্সপ্রেস লাইন) যাত্রী পরিষেবা বাড়াতে ছ’টি মেট্রো স্টেশনকে ওয়াই-ফাই ক্ষমতা সম্পন্ন করল। রিলায়েন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার এই নতুন পরিষেবা কার্যকর করতে ইউ ব্রডব্যান্ডের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। এই ছ’টি স্টেশন হল যথাক্রমে- নিউ দিল্লি, শিবাজি স্টেডিয়াম, ধউলা কুয়াঁ, দিল্লি এয়ারো সিটি, ইন্দিরা গাঁধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং দ্বারকা সেক্টর ২১। এই স্টেশন গুলিতে যাত্রীদের জন্য বিনামূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহার করার সুবিধা থাকবে। বিমান ধরার জন্য যাত্রীরা প্রায় ২ থেকে ৩ ঘন্টা আগেই সেখানে পৌঁছে যান, মূলত তাঁরা সেই সময়ে যাতে এই সুবিধা উপভোগ করতে পারেন তার দিকে নজর রেখে এই পরিষেবা চালু করা হয়েছে। ২৩ কিমি জুড়ে এই ছ’টি স্টেশনে ওয়াই-ফাই পরিষেবা চালু করতে ৫,৭০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।


চৈত্র মাসের শেষ ক’টা দিন গ্রাম বাংলা ডুবে থাকে নানান লোকাচারে। বঙ্গ দেশের হৃদয় থেকে কিছু মুহূর্ত...

Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player


মরুভূমিতে পরিণত বনভূমি
হিসেবে মেলানো কঠিন। আজ থেকে বারো-পনেরো বছর আগে যে জায়গাটা ছিল শাল গাছের গভীর অরণ্য, সেখানে আজ একটাও শালগাছ নেই। শুধু উত্তরের পুকুরে মাঝারি ধরনের একটি শিমুল গাছ ঠায় দাঁড়িয়ে। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার একেবারে প্রান্ত সীমায় কুশমণ্ডি ব্লকের ২ নং করঞ্জি গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তরে প্রাচীন মান্ডাহার বনভূমি শূন্যতায় পরিণত হয়েছে। প্রায় ১০০ একরের শালবাগানে কোনও শালগাছের চিহ্ন নেই। টাঙন নদীর কয়েক কিলোমিটার পশ্চিমে উত্তর দিকে উত্তর দিনাজপুরের সীমানা ঘেঁষা এই শালবাগান এক সময় অরণ্যসম্পদে বিপুল ভাবে সমৃদ্ধ ছিল। শাল-সেগুনের সঙ্গে ভেষজ গাছ, বন্য পশুপাখির আস্তানা ছিল। কিন্তু কাঠ চোরাচালানকারীদের চক্রান্তে মান্ডাহারের বনভূমি আজ মরুভূমিতে পরিণত। শুধু শীতের মরসুমে সেখানে চলে কিছু চাষবাস। বনভূমির মাটি বিক্রি করে দেওয়া হয়। এমনকী পুকুরের মাটি তুলেও বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। বনভূমির মাঝে তৈরি হয়েছে একটি খেলার মাঠ। যে মাঠে চলে ধান ঝাড়াই-মাড়াইয়ের কাজ। বছর কয়েক আগে পর্যন্ত এখানে পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকত। ধীরে ধীরে প্রশাসনের অবহেলায় এবং মানুষের লোভে শালবাগান শ্মশানের রূপ নেয়। এখান থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে রায়গঞ্জের বনদফতরের আধিকারিকরা এই ব্যাপারে উদাসীন। প্রাকৃতিক সম্পদ সুরক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরকে অনুরোধ জানাচ্ছি।
শিরীষ গাছের গণমৃত্যু
শ্যামল বঙ্গপ্রকৃতির এক অতিপরিচিত বৃক্ষ শিরীষ। সমভূমি থেকে পার্বত্য অঞ্চল সর্বত্র এই ঝাঁকড়া ছায়াপ্রদায়ী বৃক্ষের উপস্থিতি। গত এক-দেড় বছর ধরে অত্যন্ত বেদনা ও আতঙ্কের সঙ্গে লক্ষ করছি, শিরীষ বৃক্ষগুলি শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। কোনা এক্সপ্রেসওয়ের ধারে এ রকম অনেক শিরীষের কঙ্কাল চোখে পড়ে। জগাছা প্রেস কোয়ার্টার্সের একদা দৃষ্টিনন্দন শিরীষবন বর্তমানে বীভৎস কঙ্কাল-উদ্যানে পরিণত। আমতা শাখার বাঁকড়া নয়াবাজ প্ল্যাটফর্ম ও রেললাইন বরাবর সার দিয়ে দণ্ডায়মান বৃহদাকার শিরীষের জীর্ণ কঙ্কাল, পিজি হাসপাতালের উল্টো দিকে বিবেকানন্দ উদ্যানে সারিবদ্ধ শুষ্ক মৃত বৃক্ষগুলি মানব জাতিকে উপহাস করার জন্যই যেন দাঁড়িয়ে আছে। গ্রামগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে একই দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।
শিরীষ অন্যান্য গাছের তুলনায় বেশি আলোকসংবেদী। হয়তো এদের দূষণ-সহ্যক্ষমতা অন্যান্যদের তুলনায় কম। হয়তো বাতাসে বিশেষ কোনও পদার্থের উপস্থিতি বা কোনও উপাদানের অতিরিক্ত উপস্থিতি এরা সহ্য করতে পারছে না। পরিবেশ বিজ্ঞানী ও উদ্ভিদবিদদের কাছে অনুরোধ, এই উদ্ভিদ-মৃত্যুর প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে সচেষ্ট হন। প্রশাসনের কাছে অনুরোধব্যাপারটি গুরুত্ব সহযোগে বিবেচনা করা হোক।
ইন্টারনেট থেকে নেওয়া ও নিজস্ব চিত্র।
 
 


রোজের আনন্দবাজারএ বারের সংখ্যা • সংবাদের হাওয়াবদল আপনার রান্নাঘর • খানা তল্লাশি স্বাদবদল পুরনো সংস্করণ