|
একাডেমী অফ ফাইন আর্টস-এর উদ্যোগে রবিবার সকালে একাডেমীর নূতন ভবনে ২৫তম বার্ষিক চারুকলা প্রদর্শনীর উদ্বোধন অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। রাজ্যপাল শ্রীমতী পদ্মজা নাইডু একটি মাটির প্রদীপ জ্বালাইয়া প্রদর্শনীর উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
ভারতের বিভিন্ন অংশ হইতে প্রপ্ত ৪১৭টি চারু ও কারু শিল্পের নিদর্শন প্রদর্শনীতে স্থান পায়। প্রদর্শনীর শিল্পকলা দেখিয়া একাডেমীর প্রসিডেন্ট লেডি রাণু মুখার্জি বলেন যে শিল্পকলার দিক দিয়া তাঁহারা বলিষ্ঠ ও দৃঢ় পদক্ষেপে অগ্রসর হইতেছেন, এই শিল্পকার্যই তাহার প্রমাণ। রাজ্যপাল শ্রীমতী নাইডু প্রতিযোগিতায় উত্তীর্ণ শিল্পীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন। শ্রীকানোয়াল কৃষ্ণ রাজ্যপালের স্বর্ণপদক লাভ করেন। তৈল চিত্র অঙ্কনের দিক দিয়া কৃতিত্বের জন্য মহারাজাধিরাজ বাহাদুর স্বর্ণপদক লাভ করেন শ্রী পি সি সগর, জলরংএ ডঃ এস সি লাহা স্বর্ণপদক পান শ্রীপিরোজ আমেদ, প্রাচ্য ঢংএ অঙ্কনে কৃতিত্বের জন্য শ্রীঅমিতকুমার সরকারকে কুমার বিশ্বনাথ রায় স্বর্ণপদক দেওয়া হয়। আধুনিক শিল্পকলায় কৃতিত্বের জন্য শ্রীভগবান কাপুর কানাইলাল জাটিয়া স্বর্ণপদক,ভাস্কর্যের জন্য শ্রী বি এম স্বর্ণপদক পান শ্রীসুভাস রায়। গ্রফিক আর্টের জন্য দ্বারভাঙ্গার মহারাজাধিরাজে স্বর্ণপদক পান শ্রীবিনোদরায় প্যাটেল। ইহা ছাড়া শ্রীসুনীলকুমার দাস এবং শ্রীঅমিতাভ সেনগুপ্তও তাঁহাদের শিল্প কীর্তির জন্য পুরস্কৃত হন।
বহু বিশিষ্ট নাগরিক, এবং দেশ-বিদেশের শিল্প রসিক ও বৈদেশিক কূটনৈতিক প্রতিনিধিগণ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অভ্যাগতদের স্বাগত সম্ভাষণ জ্ঞাপন করিয়া লেডি রাণু মুখার্জি বলেন যে, একাডেমীর এই নূতন ভবন এক্ষণে কলিকাতার শিল্পকলার কেন্দ্ররূপে পরিণত হইয়াছে। একাডেমীর কার্যাবলীও দিনের পর দিন বাড়িতেছে। একাডেমী এক্ষণে নিয়মিত ভাবে বহির্ভ্রমণের ব্যবস্থা করিবার প্রস্তাব করিয়াছেন। শিল্পীরা বাহিরে গিয়া যাহাতে জীবন এবং প্রকৃতির রূপ সম্মন্ধে চিত্রাঙ্কন করিতে পারেন, তজ্জন্যই এই ব্যবস্থা হইতেছে। তিনি বলেন যে, তরুণ শিল্পীযাহাদের মধ্যে বিরাট সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেখা যায় তাহাদের সর্বতোভাবে সাহায্যদান করাই তাহাদের প্রথম উদ্দেশ্য। শিল্পী শ্রীঅতুল বসু বলেন যে, রবীন্দ্রনাথকেই এই দেশে শিল্পকলার মধ্যে আধুনিক আঙ্গিকের প্রবর্তনের ক্ষেত্রে পথিকৃৎ বলা চলে। তিনি শিল্পী জীবনের সমস্যা ও তাঁহার আদর্শরূপায়ণের যে সব বাধা বিপত্তির সম্মুখীন হইতে হয়, তাহার উল্লেখ করেন। তিনি বলেন যে, শিল্পীদের সম্মুখে যে সব সমস্যার সৃষ্টি হইয়াছে সমাজকেই তাহার সমাধানে আগাইয়া আসিতে হইবে। একাডেমীর অবৈতনিক যুগ্ম সম্পাদক শ্রীরথীন মৈত্র বলেন যে, এইবার আমেদাবাদ, আলিগড়, আমরেলি, অমৃতসর, ঔরঙ্গাবাদ, বম্বে, বরোদা, ভবনগড়, দিল্লি, গোয়ালিয়র, ইন্দোর, জামসেদপুর, মধ্যপ্রদেশ, মাদ্রাজ, মহীশুর, মহারাষ্ট্র, মুসৌরী, ওড়িষ্যা, শিলচর, সিমলা, শ্রীনগর, ত্রিপুরা, বারাণসী, বিজয়নগর, পুরুলিয়া, দার্জিলিং, শান্তিনিকেতন এবং কলকাতা হইতে শিল্পকলার নিদর্শন সমূহ পাওয়া গিয়াছে। ঐগুলির মান খুব উচ্চ পর্যায়ের।
৮ই জানুয়ারী পর্যন্ত অপরাহ্ন ৩টা হইতে রাত্রি ৮টা পর্যন্ত প্রদর্শনী খোলা থাকবে।
|
|