৫ পৌষ ১৪১৮ বুধবার ২১ ডিসেম্বর ২০১১





ফেরিওয়ালাদের বিধানসভা অভিমুখে অভিযান
উচ্ছেদের নোটীশের প্রতিবাদ




লিকাতার পথিপার্শ্ব হইতে ফেরিওয়ালা উচ্ছেদের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এবং তাঁহাদের জন্য স্থায়ী ব্যবস্থার দাবির প্রতি সরকারে দৃষ্টি আকর্ষণের উদ্দেশ্যে মঙ্গলবার বিকালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা অভিমুখে এক অভিযান পরিচালিত হয়। ‘পশ্চিমবঙ্গ ফেরিওয়ালা সমিতি’ উহা পরিচালনা করেন।

উদ্যোক্তাদের পক্ষ হইতে জানান হয় যে, ইতিমধ্যেই রাসবিহারী এভিনিউ অঞ্চলের বহু ফেরিওয়ালা ৪৮ ঘন্টার মেয়াদে উচ্ছেদের নোটিশ পাইয়াছেন এবং ইহার পর অন্যান্য অঞ্চলেও ঐ জাতীয় নোটিশ জারীর আশঙ্কা আছে। ফেরিওয়ালাদের ‘ন্যায্য উপায় রুজি-রোজগার’ বন্ধের যে কোন প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়িয়া তোলার জন্য তাঁহারা আবেদন জানান।

ঐদিন রাজ্য বিধানসভার অধিবেশনেও বিভিন্ন সদস্য এই মত প্রকাশ করেন যে, ফেরিওয়ালাদের ‘ন্যায্য উপায়ে’ রুজিরোজগারের পথ যাহাতে বন্ধ না হয় সেইজন্য কলিকাতা পৌর আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় সংশোধন করা উচিৎ। প্রয়োজন হইলে ঐ সম্পর্কে এক অর্ডিন্যান্স জারী করা কর্তব্য।

ঐ দিন বিকালে সাড়ে চারটা নাগাদ পশ্চিমবঙ্গ ফেরিওয়ালা সমিতির উদ্যোগে কয়েকশত ফেরিওয়ালা ফেস্টুন ইত্যাদি লইয়া মনুমেন্টের পাদদেশ হইতে রাজ্য বিধানসভা অভিমুখে যাত্রা করেন। পুলিস রাজভবনের দক্ষিণদিকে ঐ মিছিলের গতিরোধ করিলে ফেরিওয়ালারা ঐখানেই বসিয়া পড়েন এবং ‘উচ্ছেদ করা চলিবে না?’ “বিকল্প ব্যবস্থা চাই’’ প্রভৃতি ধ্বনি তুলিতে থাকেন।

কিছুক্ষণ পরে উক্ত সমিতির সভাপতি শ্রীঅরবিন্দ বসু এম এল সি বিধানসভা ভবনের দিক হইতে বিধানসভা সদস্য শ্রীহেমন্ত বসু, শ্রীদেবেন সেন ও শ্রীরবীন মুখার্জীসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।

উক্ত নেতৃবৃন্দ তাঁহাদের ভাষণে এই আশ্বাস দেন যে, কলিকাতার পথঘাট হইতে ফেরিওয়ালা উচ্ছেদ বন্ধ করার উদ্দেশ্যে কলিকাতা পৌর আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা যাহাতে সংশোধন করা হয় সেজন্য তাঁহারা সরকারকে চাপ দিবেন। প্রয়োজন হইলে ঐ সম্পর্কে এক অর্ডিন্যান্স জারী করার জন্য তাঁহারা সরকারকে অনুরোধ জানাইবেন।

সমিতির সভাপতি শ্রীঅরবিন্দ বসু জানান যে, ইতিমধ্যে গত সোমবার দক্ষিণ কলিকাতার রাসবিহারী এভিনিউ অঞ্চলের বহু ফেরিওয়ালা ৪৮ ঘন্টার মধ্যে তাঁহাদের স্টল উঠাইয়া লওয়ার জন্য কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে নোটিশ পাইয়াছেন। বুধবার সেই নোটিশের কাল উত্তীর্ণ হইতেছে অথচ বিকল্প কোন ব্যবস্থাই এ পর্যন্ত হয় নাই। ফলে বহু ফেরিওয়ালা অনাহারের সম্মুখীন হইতেছেন। উহা প্রিরোধের জন্য বুধবারের মধ্যেই চেষ্টা করিতে হইবে।

শ্রীহেমন্ত বসু ও শ্রীদেবেন সেনও উপরোক্ত বক্তব্য সমর্থন করেন।

উক্ত নেতৃবৃন্দ আরও জানান যে, মুখ্যমন্ত্রীর সহিত সাক্ষাৎ করিয়া ঐ ধরণের উচ্ছেদ বন্ধ করার জন্য যাহাতে অবিলম্বে ব্যবস্থা করা হয় তাঁহারা সেই চেষ্টা করিবেন। এই আশ্বাসের পর প্রায় দুই ঘন্টা বাদে সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ মিছিলে অংশ গ্রহণকারীরা ফিরিয়া যান।


বিধানসভায় উল্লেখ

ফরোয়ার্ড ব্লক নেতা শ্রীহেমন্ত কুমার বসু ঐদিন বিধানসভার অধিবেশনে ফেরিওয়ালাদের সমস্যার কথা উল্লেখ করিয়া বলেন যে, শ্রীঅরবিন্দ বসু এম এল সি’র নেতৃত্বে একদল হকার শোভাযাত্রা করিয়া বিধানসভা ভবনের অদূরে আগমন করিয়াছেন। ইহাদের অধিকাংশই উদ্বাস্তু।

শ্রীদেবেন সেন (প্রজা সমাজতন্ত্রী) বলেন যে, একদল হকারের উপর এরূপ নোটিশ দেওয়া হইয়াছে যে, যদি ৪৮ ঘন্টার মধ্যে তাহারা উঠিয়া না যান তবে তাহাদিগকে বিতাড়িত করা হইবে। ঐ ৪৮ ঘন্টার মেয়াদ পরিবর্তন করিয়া এক সপ্তাহের সময় ধার্য করার অধিকার সরকারের আছে।

ডেপুটি স্পীকার শ্রীআশুতোষ মল্লিক। ইনি এই সময় সভার কাজ পরিচালনা করিতেছিলেন বলেন, আচ্ছা, হইয়াছে বসিয়া পড়ুন।




Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player



অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.