৫ পৌষ ১৪১৮ বুধবার ২১ ডিসেম্বর ২০১১





শ্রীমতী সরলাবালা সরকার পরলোকে
দুই শতকের মধ্যবর্তী আরও একটি যোগসূত্র ছিন্ন




বাঙলা সাহিত্যের একনিষ্ঠ সেবিকা শ্রীমতী সরলাবালা সরকার শুক্রবার বিকালে কলিকাতার বাসভবনে সজ্ঞানে পরলোকগমন করেন। মৃত্যুকালে তাঁহার বয়স হয় ৮৬ বছর।

শ্রীমতী সরকারের মৃত্যুতে বাঙলাদেশের সাহিত্য, রাজনীতি ও সমাজ জীবনে ঊনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীর মধ্যে যোগাযোগের আর একটি সেতু বিলুপ্ত হইয়া গেল।

ঐদিন বিকালে বাগবাজারের মদনমোহনতলা এলাকার বাসভবনে বিকাল পৌনে পাঁচটায় সহসা তাঁহার মৃত্যু হয়।

গত শনিবার হইতে তিনি অসুস্থ হইয়া পড়িলেও শেষ বিদায়ের ক্ষণ যে এত আকস্মিকভাবে আসিবে ঐদিন সকালে তাহা বুঝা যায় নাই, দুপুরে চিকিৎসক তাঁহাকে পরীক্ষা করিয়া ফিরিয়া যান কিন্তু বিকালের দিকে তাঁহার অস্বস্তি ও অসুস্থতা বৃদ্ধি পাইতেছে দেখিয়া আবার চিকিৎসককে খবর দেওয়া হয়। চিকিৎসক আসিয়া ইঞ্জেকশন প্রস্তুত করিতে থাকেন, কিন্তু তাহা দিবার আর সুযোগ হইল না। দেবতার চরণামৃত পান করিয়া তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

ঐ রাত্রে নিমতলা শ্মশানঘাটে তাঁহার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। মুখাগ্নি করেনদৌহিত্র শ্রীঅশোককুমার সরকার।
শ্রীমতী সরকারের মৃত্যু সংবাদ পাইয়া যাঁহারা বাসভবনে এবং শ্মশানে গিয়া শেষ শ্রদ্ধা জানান তাঁহাদের মধ্যে সাহিত্যিক, সাংবাদিক, প্রকাশক প্রভৃতি শহরের বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।
মৃত্যুকালে তিনি একমাত্র কন্যা শ্রীমতী নির্ঝরিণী সরকার, দৌহিত্র শ্রীঅশোককুমার সরকার, দুই দৌহিত্রী এবং বহু আরও আত্মীয়পরিজন রাখিয়া গিয়াছেন।

গত প্রায় এক বছর ধরিয়া বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় তিনি একরূপ শয্যাশায়ী ছিলেন। একেবারে শেষের দিকে নিজে ভাল করিয়া লিখিতে বা পড়িতে পারিতেন না, কিন্তু সংবাদপত্র ও সাহিত্যের টাট্কা খবর জানিতে সর্বদাই আগ্রহী ছিলেন। দৈনিক কাগজ, সাময়িক পত্রিকা এবং বিভিন্ন পুস্তক হইতে তাঁহাকে পড়িয়া শুনাইতে হইত। শুধু সাহিত্য নয়, বিজ্ঞানের নানা দিকেও তিনি খবর রাখিতেন।

মাত্র ১২ বছর বয়সে তাঁহার রচনা প্রথম মুদ্রিত হয় এবং মৃত্যুর মাত্র মাস দেড়েক পূর্বে আনন্দবাজারের গত পূজাসংখ্যায় তাঁহার রচনা প্রকাশিত হইয়াছে। কয়েকমাস পূর্বে রবীন্দ্র শতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে তাঁহার রবীন্দ্র স্মৃতিকথা আকাশবাণী কলিকাতা হইতে প্রকাশিত হয়।

যাঁহারা শ্রদ্ধা জানাইতে যান তাঁহাদের মধ্যে ছিলেনস্বামী ত্রিপুরানন্দ, সর্বশ্রী তুষারকান্তি ঘোষ, সুধীরচন্দ্র সরকার, মনোজ বসু, সজনী দাস, নির্মলকুমার বসু, হেমন্ত বসু, বামাচরণ চক্রবর্তী, নিবেদিতা বিদ্যালয়ের সন্ন্যাসিনীরা, আনন্দবাজার পত্রিকা, দেশ ও হিন্দুস্থান স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকার কর্মচারীবৃন্দ।

নিম্নোক্ত প্রতিষ্ঠানের পক্ষ হইতে মাল্য দান করা হয়বঙ্গীয় সাহিত্যে পরিষদ, আনন্দবাজার পত্রিকা দেশ ও হিন্দুস্থান স্ট্যান্ডার্ড, কথাসাহিত্য, নিবেদিতা বিদ্যালয় গ্লোব নার্শারী।



Content on this page requires a newer version of Adobe Flash Player.

Get Adobe Flash player



অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.