বাড়িতে আগুন ধরিয়ে স্ত্রীকে মারার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। বুধবার রাতে শিলিগুড়ির রাঙাপানি এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। অভিযুক্ত স্বামী এবং তাঁর পরিবারের লোকদের বিরুদ্ধে আগুন লাগানোর অভিযোগ তুলেছেন স্ত্রী কল্পনা রায়। সেই সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, এলাকার এক মহিলার সঙ্গে স্বামীর অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। ওই মহিলা এবং তাঁর পরিবারের লোক আগুন লাগানোর সময় ছিলেন। তাদের সামনে দিয়ে পালাতে গেলে মেরে ফেলতে পারে দেখে কাঠের দোতলার জানলা দিয়ে তিনি পাশের ডোবার মধ্যে ঝাঁপ দেন। হইচই শুনে এলাকার বাসিন্দারা এসে দমকল ডেকে আগুন নেভানোর সময় ডোবার মধ্যে তাঁকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। কল্পনা দেবী উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। পুলিশ কল্পনার শাশুড়িকে ধরে। বাগডোগরা থানার ওসি বাসুদেব সরকার বলেন, “এক জনকে ধরা হয়। বাকিরা পলাতক।” পুলিশ জানায়, কল্পনাদেবীর বাড়ি খড়িবাড়ির খল্টাবাজারে। অভিযুক্ত স্বামী কোয়াক ডাক্তার। ফাঁসিদেওয়ার কামারগছে তাঁর বাড়ি রয়েছে। মা এবং অন্যান্যরা সেখানেই থাকেন। রাঙাপানির বাড়িতে তিনি কল্পনাকে নিয়ে থাকতেন। কল্পনাদেবী পুলিশকে জানিয়েছেন, বিয়ের পর থেকে স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাঁর উপর অত্যাচার চালাতেন। তবে স্বামীর অবৈধ সম্পর্ক নিয়ে প্রতিবাদ করায় দু জনের মধ্যে অশান্তি চলছিল। মাস সাতেক আগে স্বামী তাঁকে ফাঁসি দিয়ে মারার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। তিনি পুলিশে অভিযোগ জানানোয় এ ব্যাপারে মামলাও চলছে। ওই ঘটনার পর কল্পনা দেবী একাই রাঙাপানির বাড়িতে থাকতেন। তাঁর অভিযোগ, মামলা প্রত্যাহারের জন্য তাঁকে চাপ দিচ্ছিলেন স্বামী এবং শ্বশুর বাড়ির লোকেরা। বুধবার সন্ধ্যাতেও স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি, দুই দেওর, তাঁদের স্ত্রী, ভাসুর এই বাড়িতে আসেন। যে মহিলার সঙ্গে স্বামীর অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে তিনি এবং তার বাবা, মা এবং আরও কিছু লোকজন-ও এসেছিলেন। তাঁরা মামলা প্রত্যাহার করতে বলে ধমকি দিয়ে যান। রাতে তাঁরা বাড়িতে এসে মেরে ফেলার হুমকিও দিয়ে যান। রাঙাপানি ফাঁড়ির পুলিশকে কল্পনাদেবী বিষয়টি জানিয়েও ছিলেন। পুলিশ আশ্বাস দেওয়ায় তিনি রাতে একাই বাড়িতে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। আশঙ্কা মতো রাতে স্বামী এবং বাকিরা এসে বাড়িতে আগুন ধরান বলে অভিযোগ। অভিযোগ জানা সত্ত্বেও পুলিশ কেন আগাম ব্যবস্থা নেয়নি তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দারা। তাদের অভিযোগ, অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। কল্পনাদেবীর কপাল এবং শরীরের কয়েক জায়গা পুড়ে গিয়েছে। তাঁর চিকিৎসা চলছে। |