শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতনের তথ্য এপ্রিল থেকে অনলাইনে
গামী অর্থবর্ষের শুরুতেই রাজ্যের সব মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীদের বেতন ব্যবস্থায় বদল হচ্ছে। ‘অনলাইন’ ব্যাঙ্কিং পরিষেবা ছাড়াও বেতন সংক্রান্ত বিশদ তথ্যও জানা যাবে। স্কুল সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য ‘অনলাইন’ রাজ্য শিক্ষা দফতরে জানানোর ব্যবস্থাও চালু হতে চলেছে।
স্কুল-শিক্ষা দফতরের যুগ্ম অধিকর্তা দেবাশিস সরকার বলেন, “এপ্রিল থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলগুলির শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মীদের নতুন ব্যবস্থায় বেতন দেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা করছি। এই ব্যবস্থায় কে, কত বেতন পান, বছরের বেতন স্টেটমেন্ট, প্রভিডেন্ট ফান্ডে কত টাকা রয়েছে, তার সুদ কত, কার কত টাকা কর হয়েছেসবই অনলাইনে জানা যাবে। প্রত্যেককে আলাদা ইউজার আইডি, পাসওয়ার্ড দেওয়া হবে। স্কুলের তথ্য অনলাইনে শিক্ষা দফতরে জানানোর ব্যবস্থাও চালু হবে।”
শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন থেকেই ই-গর্ভনেন্স ব্যবস্থায় শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মীদের বেতন এবং স্কুলের কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা হচ্ছিল। সে জন্য ‘কম্পিউটারাইজেশন অব স্যালারি অ্যাকাউন্টস’ (কোসা) পদ্ধতি ব্যবহারের চেষ্টা হয়। কিন্তু তাতে একটি বিশেষ কম্পিউটার থেকে ৪০/৫০ জনের বেতনের হিসাব রাখা বা কিছু কাজ করা সম্ভব হলেও রাজ্যের সব স্কুলে বিষয়টি অনলাইনে পরিচালনায় সমস্যা হচ্ছিল। সমস্যা কাটাতে শিক্ষা দফতর সফ্টওয়্যারে কিছু পরিবর্তন করে ‘অনলাইন স্যালারি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ (ওএসএমএস) গড়ে তোলে। ‘ওএসএমএস’ তৈরির প্রক্রিয়ায় জড়িত শিক্ষকরা জানান, ২০১১-র নভেম্বর-ডিসেম্বরে পরীক্ষামূলক ভাবে ওই সফ্টওয়্যারটি উত্তর ২৪ পরগনার কিছু স্কুলে চালু করা হয়। ভাল ফল মেলায় রাজ্য শিক্ষা দফতর কেন্দ্রীয় সংস্থা ‘ন্যাশনাল ইনফরম্যাটিক্স সেন্টার’-এর সাহায্য নিয়ে সফ্টওয়্যারটিকে সব স্কুলের ব্যবহারের উপযোগী করে তোলে। ২০১২-র মার্চে উত্তর ২৪ পরগনার স্কুলে-স্কুলে ওই ব্যবস্থা চালু করা হয়। পরে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া, হুগলি, উত্তর এবং দক্ষিণ দিনাজপুর, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, মুর্শিদাবাদ ও শিলিগুড়ি শিক্ষা জেলায় এই পদ্ধতিতে বেতন-প্রক্রিয়া চালু হয়েছে। তবে শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মীদের ‘ইউজার আইডি’, ‘পাসওয়ার্ড’ এখনও দেওয়া হয়নি। রাজ্যের অন্য জেলার স্কুলগুলিতেও ওই প্রক্রিয়া শুরু হলে, তা দেওয়া হবে। দার্জিলিং পাহাড়ে ‘জিটিএ-র অধীনে থাকা স্কুলগুলিকেও এই ব্যবস্থায় আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, ১০ হাজার মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসার প্রায় আড়াই লক্ষ শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী এই সুযোগ পাওয়ার পরে জুনিয়র হাই এবং প্রাথমিক স্কুলগুলিতেও এই ব্যবস্থা চালু করার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
পক্ষান্তরে, তথ্য জানানোর ‘অনলাইন’ ব্যবস্থায় উপকৃত হবেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকা স্কুল সংক্রান্ত তথ্য জানাতে আলাদা ‘ইউজার আইডি’, ‘পাসওয়ার্ড’ পাবেন। তাঁরা শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী নিয়োগ, মিড-ডে মিল, স্কুলের পড়ুয়ার সংখ্যা-সহ বিভিন্ন বিষয় সহজেই স্কুল পরিদর্শকের দফতরে বা শিক্ষা দফতরে পাঠাতে পারবেন। স্কুল পরিদর্শক তাঁর ‘ইউজার আইডি’, ‘পাসওয়ার্ড’ দিয়ে সংশ্লিষ্ট বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে পারবেন।
‘ন্যাশনাল ইনফরম্যাটিক্স সেন্টার’ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভবিষ্যতে ‘অনলাইন’ ব্যবস্থায় পেনশন, ‘সার্ভিস বুক’ তৈরির চেষ্টাও হচ্ছে। প্রক্রিয়া সফল হলে পেনশন দেওয়ার কাজে গতি আরও বাড়বে। তা ছাড়া, বিভিন্ন স্কুলের খালিপদ সংক্রান্ত তথ্য একত্র করে ‘ডেটা ব্যাঙ্ক’ বানানোর চিন্তাভাবনাও রয়েছে শিক্ষা দফতরের। শিক্ষক সংগঠন ‘পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতি’র রাজ্য সাধারণ সম্পাদক নবকুমার কর্মকার বলেন, “এই ব্যবস্থা চালু হয়ে গেলে শিক্ষক-শিক্ষিকা-শিক্ষাকর্মীরা এবং স্কুল কর্তৃপক্ষ উপকৃত হবেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.