বাড়ির সামনে দুষ্কৃতী-হামলায় গুলিবিদ্ধ হলেন ব্লক কংগ্রেসের এক নেতা। বুধবার দুপুর একটা নাগাদ বালুরঘাট লাগোয়া হোসেনপুরের ভিডিও হল পাড়া এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানায়, গুলিতে জখম যুবকের নাম লিটন মোহান্ত। তিনি বালুরঘাট ব্লক মফসসল কংগ্রেসে সাধারণ সম্পাদক। গত পঞ্চায়েত ভোটে তিনি কংগ্রেসের প্রার্থী ছিলেন। তবে জিততে পারেননি তিনি। লিটনবাবুকে গুরুতর জখম অবস্থায় প্রথমে বালুরঘাট হাসপাতাল এবং পরে মালদহের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ওই নেতার পেটে দু’টি ও হাতে দু’টি গুলি লাগে। একটি গুলি পেট ফুঁড়ে বেরিয়ে গিয়েছে। তবে তাঁর জ্ঞান রয়েছে।
এ দিন বালুরঘাট হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে জখম লিটন পুলিশের সামনে সংবাদমাধ্যমে অভিযোগ করে বলেন, “এলাকার তৃণমূল নেতা তথা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান লগিন দাসের মদতে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছে। শীঘ্রই লিখিত অভিযোগ করা হবে।” |
অভিযুক্ত লগিনবাবুর দাবি, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হচ্ছে। লগিনবাবুর যুক্তি, “কয়েক মাস আগে আমাকে লক্ষ করে গুলি করা হয়েছিল। সেই থেকে আমি অসুস্থ হয়ে রয়েছি। বাড়িতেই থাকি। তা ছাড়া লিটনের সঙ্গে আমার শত্রুতা নেই। লোকসভা ভোটের আগে সহানুভূতির বাতাস কাড়তে ঘটনায় রাজনীতির রং দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।” প্রসঙ্গত, মাস তিনেক আগে লগিনবাবুকে লক্ষ করে কে বা কারা গুলি চালায়। গুলি তাঁর শরীর ছুঁয়ে বেরিয়ে যায়। ওই ঘটনায় কেউ ধরা পড়েনি ঘটনাচক্রে, লগিন ও লিটন দু’জনেই ঠিকাদারি করেন।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস সালভে মুরুগন বলেন, “ছোট গাড়িতে ৫-৬ জন দুষ্কৃতী এসেছিল। ২ জন লিটন মোহান্ত নামে ওই যুবকের উপর কয়েক রাউন্ড গুলি চালায় বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। ব্লক কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে।”
এ দিন কী ঘটেছিল?
বালুরঘাট-হিলি রাজ্য সড়কের ধারে এ দিন বাড়ির সামনের রাস্তার ধারে বসে লিটন আড্ডা দিচ্ছিলেন। সে সময় গাড়ি থামিয়ে দুষ্কৃতীরা তাকে লক্ষ করে এলোপাথারি গুলি চালায়। জখম নেতার স্ত্রী ময়ূরীদেবী বলেন, “চিৎকার ও গুলির শব্দ শুনে ঘর থেকে বেরিয়ে দেখি ও রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। দুষ্কৃতীরা আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে গাড়িতে উঠে হিলির দিকে পালিয়ে যায়।” পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সেভেন এম এম পিস্তলের ৭টি খোল এবং একটি থ্রি নট থ্রি গুলি উদ্ধার করেছে। দেহে আটকে থাকা ৪টি গুলি বের করতে রাতে মালদহের ওই বেসরকারি হাসপাতালে লিটনের অস্ত্রোপচার হয়। জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলাঞ্জন রায় বলেন, “লোকসভা নির্বাচনের আগে আতঙ্ক ছড়াতে চাইছে তৃণমূল।” জেলা তৃণমূল সাধারণ সম্পাদক প্রবীর রায় বলেন, “এ ঘটনায় তৃণমূল জড়িত নয়। পুলিশ দোষীদের গ্রেফতার করুক।” |