শিলিগুড়ির মহাবীরস্থান উড়ালপুল সংস্কারে বাসিন্দা এবং ব্যবসায়ীদের মতামত নিল উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর। শিলিগুড়ির থানার সামনে থেকে উড়ালপুলে যে একমুখী রাস্তা উঠে উড়ালপুলে জুড়েছে, সেটিকে ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর। তার পরিবর্তে মহাবীরস্থান থেকে নতুন একটি দ্বিমুখী রাস্তা উড়ালপুলে যুক্ত করার প্রস্তাব রয়েছে। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে মতামত নিতেই বুধবার বিকেলে শিলিগুড়ির মিলনপল্লির সরকারি আবাসনে নাগরিক কনভেনশন হয়েছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব কনভেনশনে উপস্থিত ছিলেন।
কেন্দ্রীয় সরকারের রাইটস সম্প্রতি উড়ালপুল সংস্কারের প্রস্তাব নিয়ে সমীক্ষা করে। উড়ালপুলের নতুন চেহারা কী হতে পারে তা নিয়ে প্রজেক্টরে ছবিও দেখানো হয়েছে। কনভেনশনে জানানো হয়, নতুন যে রাস্তাটিকে উড়ালপুলের সঙ্গে যুক্ত করার প্রস্তাব রয়েছে তার দৈর্ঘ্য হবে ১ কিলোমিটারের কিছু বেশি। দুই মুখেই যান চলাচলের ব্যবস্থা থাকায় যানজটের সমস্যাও থাকবে না বলে জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে উড়ালপুলের নতুন বাহু তৈরি করতে চার মাস সময় লাগতে পারে বলে ব্যবসায়ীদের জানানো হয়।
|
সেই সময়ে ব্যবসায়ীদের পাশের কোনও এলাকায় পুর্নবাসন দেওয়া হবে। যার পরিকাঠামোও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর তৈরি করে দেবে বলে মন্ত্রী গৌতমবাবু জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “যতদিন নির্মাণ কাজ চলবে, ব্যবসায়ীদের অন্যত্র পুর্নবাসন দেওয়া হবে। উড়ালপুলের সংস্কার শেষ হয়ে গেলে, নীচে বাজার ভবন তৈরি করে ব্যবসায়ীদের স্থায়ী ঘর দেওয়া হয়। নতুন ব্যবসায়ীরাও সেই দোকানঘর পাওয়ার আবেদন করতে পারবেন।” উড়ালপুলের পাশের পুরোনো বাজারটিও সংস্কার করা হবে বলে মন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন।
মন্ত্রীর প্রস্তাবে কনভেনশনে উপস্থিত সিংহভাগ বাসিন্দারাই সহমত জানিয়েছেন। ব্যবসায়ীরাও পুর্নবাসনের প্রস্তাবে প্রাথমিক সম্মতি দিয়েছেন। তবে উড়ালপুলের নির্মাণ শুরু হওয়ার আগে রাইটসের আধিকারিকরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পৃথক ভাবে বৈঠক করবেন বলে এ দিন জানানো হয়েছে। শিলিগুড়ির মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ওমপ্রকাশ অগ্রবাল বলেন, “উড়ালপুলের ওই অংশটি যখন তৈরি হয়, তখনই আপত্তি করেছিলাম। সেটা তখন শোনা হয়নি। এখন ওই অংশটি ভেঙে ফেলে নতুন সংস্কারের উদ্যোগ শুরু হওয়ায় আমরা খুশি। সেই সঙ্গে মন্ত্রী পুনর্বাসনের যে প্রস্তাব দিয়েছেন, তাকেও সাধুবাদ জানাই।”
সংস্কার কাজ শুরু হতে আরও ৬ মাস সময় প্রয়োজন। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী জুলাই মাসের শেষের দিকে কাজ শুরু হতে চলেছে। তার আগে এলাকার ব্যবসায়ী সংগঠনগুলির সঙ্গে বৈঠক সেরে ফেলা হবে। কনভেনশনে এক বাসিন্দা যানজট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তাঁর প্রশ্ন ছিল, মহাবীরস্থান থেকে দু’মুখী রাস্তা উড়ালপুলে সংযুক্ত হলে, যান চলাচল বাড়বে। সে কারণে যেখানে উড়ালপুল এসে হিলকার্ট রোডে মিশেছে অর্থাৎ হাসমিচকে যানজটের আশঙ্কা রয়েছে। যার উত্তরে গৌতমবাবু বলেন, “উড়ালপুল সংস্কার হচ্ছে যানজট সমস্যা মেটাতেই। রাইটসের তরফে যানজট নিয়েও সমীক্ষা হয়েছে। কোনও সমস্যা হবে না।” কনভেনশনে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগ মোহন-সহ সরকারি আধিকারিকেরাও উপস্থিত ছিলেন। |