মিড-ডে মিলের ধোঁওয়া নিয়ে বিষম ঝগড়া দুই স্কুলের। তারই জেরে বুধবার কান্দির রাজা মণীন্দ্র চন্দ্র প্রাথমিক স্কুলের কিছু ক্লাস হল রাস্তায়। খুদেদের পঠন-পাঠনের জন্য বুধবার সকাল সাতটা থেকে বেলা দশটা পর্যন্ত পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের একটি রাস্তায় যান চলাচল থমকে যায়। ধীরে ধীরে সেই যানজট ছড়িয়ে পড়ে গোটা শহরেই। বড়দের বিবাদের জেরে রাস্তায় ছোটদের বসানো কতটা জরুরি ছিল, তা নিয়ে অবশ্য বিতর্ক দানা বেঁধেছে। মুর্শিদাবাদ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক বিমল পাণ্ডে বলেন, “এমনটা হওয়া ঠিক নয়। খুদেদের রাস্তায় বসিয়ে ক্লাস নেওয়া ঠিক হয়নি। আমি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।”
কান্দির রাজা মণীন্দ্র চন্দ্র প্রাথমিক স্কুলে ৩৭৮ জন পড়ুয়া। রাজা মণীন্দ্র চন্দ্র উচ্চতর বালিকা বিদ্যালয়ে নীচের চারটি ঘর ও দোতলায় তিনটি ঘরে তাদের ক্লাস হয়। উচ্চ বিদ্যালয়ের মিড-ডে মিল রান্নার জন্য সকাল ৯টার মধ্যে উনুনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ওই ধোঁয়ায় খুদে পড়ুয়াদের অসুবিধা হয় বলে দাবি প্রাথমিক স্কুল কর্তৃপক্ষের। সকাল ৯টার পরিবর্তে বেলা ১০টায় রান্না শুরু করার কথা বলেন তাঁরা। কিন্তু উচ্চ বিদ্যালয়ের তরফে জানানো হয়, ২২০০ ছাত্রীর মধ্যে প্রায় আটশো ছাত্রী মিড-ডে-র খাবার খায়। ৯টার মধ্যে রান্না শুরু না করলে দুপুর দু’টোর মধ্যে তাদের খাবার দেওয়া সম্ভব নয়। এই নিয়ে দুই স্কুলের মধ্যে ঝামেলা চলছিল।
প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক অরুণকুমার সাহার অভিযোগ, “হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকার নিষেধে বুধবার দোতলার তালা খোলেনি ওদের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। এরপর অভিভাবকদের কথা মতো রাস্তাতেই তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ক্লাস বসে।” উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষিকা বুলবুল রায় অবশ্য বলেন, “আমি তালা খুলতে নিষেধ কেন করব? আমাদের কর্মী তালা খুলতে এসেছিল। ওরাই বাধা দিয়েছে। পরিকল্পিত ভাবে ওই কাজ করেছেন প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষক।”
হাইস্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদক তৃণমূলের গৌরাঙ্গ সাহা আবার স্থানীয় সিপিএমের মদতে পুরো ঘটনাটি ঘটেছে বলে অভিযোগ করছেন। ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিপিএমের বলাই চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমরা এই ধরনের নিচু মনের রাজনীতি করি না। আমি যখন স্কুলে যাই, ততক্ষণে পড়ুয়ারা রাস্তায় বসে পড়েছিল।” |