গৃহবধূকে গায়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগে স্বামী-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপাড়ার মাখলায়। ঝুম্পা দে সরকার নামে ওই বধূ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা কষছেন। তাঁর শরীরের ৭০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
পুলিশ জানায়, তিন বছর আগে ডানকুনির রঘুনাথপুরের ঝুম্পার সঙ্গে মাখলার গভর্নমেন্ট কলোনির বাসিন্দা সোমনাথ দে সরকারের বিয়ে হয়। ওই যুবক রিষড়া স্টেশনের অদূরে একটি টেক্সটাইল কারখানায় চাকরি করেন। দম্পতির একটি বছর দেড়েকের ছেলে আছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অগ্নিদগ্ধ হন ঝুম্পা। তাঁকে উত্তরপাড়ায় জিটি রোড-সংলগ্ন একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে।
ওই বধূর বাপের বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, বিয়ের বছর খানেক কাটতে না কাটতেই ঝুম্পার উপর অত্যাচার শুরু করেন শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। ঝুম্পার বাবা সনাতন বাগ বলেন, “মঙ্গলবার রাত ৮টা নাগাদ জামাইয়ের এক বন্ধু ফোন করে বলে, মেয়ে পুড়ে গিয়েছে। আমরা যেন হাসপাতালে চলে যাই। মেয়ের উপরে ওর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা খুব অত্যাচার করত। আমরা নিশ্চিত, ওরাই মেয়ের গায়ে আগুন দিয়ে দেয়।” ঝুম্পার মা ঝর্ণাদেবী বলেন, “মেয়ের মাধ্যমে মাঝেমধ্যে জামাই টাকা চেয়ে পাঠাত। আমরা সাধ্যমতো দিতাম। তা-ও মেয়ের উপর অত্যাচার করত ওরা। কিন্তু এমনটা করবে, ভাবতে পারিনি।” বুধবার দুপুরে মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন সনাতনবাবু। যার ভিত্তিতে এ দিনই ঝুম্পার স্বামী সোমনাথ, সোমনাথের দিদি মিঠু এবং জামাইবাবু শ্যামল সুরকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ঝুম্পার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা অবশ্য অভিযোগ মানেননি। পুলিশকে তাঁরা জানিয়েছেন, রান্না করার সময় নেহাতই দুর্ঘটনাবশত ঝুম্পার গায়ে আগুন লেগে যায়। ঝুম্পাকে বাঁচাতে গিয়ে তাঁর দেওরও অগ্নিদগ্ধ হন। তিনিও উত্তরপাড়ার ওই নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন। জেলা পুলিশের এক অফিসার বলেন, “সব দিক খোলা রেখে তদন্ত চলছে। বধূটি এতটাই জখম হয়েছেন যে, কথা বলতে পারছেন না। কথা বলার মতো অবস্থায় এলেই তাঁর বয়ান নেওয়া হবে।” |