লালুর ওপর অভিমান, পাসোয়ান বিজেপি-মুখীই

২৬ ফেব্রুয়ারি
ন্ধু লালুর জন্য দরজা বন্ধ করে বিজেপির সঙ্গে জোট বাঁধার ঘোষণা এক রকম করেই ফেললেন রামবিলাস পাসোয়ান।
আজ দিল্লিতে নিজের বাসভবনে সাংবাদিকদের ডেকে পাসোয়ান বলেন, কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও দিনই তাঁদের সমঝোতা ছিল না। তা সত্ত্বেও দু’বার সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। লালু প্রসাদের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা হলেও লোকজনশক্তি পার্টির সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়ে আগ্রহ তিনি দেখাননি। ফলে সে দরজা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আজ দলের সংসদীয় বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে, পাসোয়ান এ বারে বিকল্প জোটের সন্ধান করবে। পাসোয়ান স্পষ্ট করে দেন, তাঁর কাছে তৃতীয় মোর্চা আদৌ কোনও বিকল্প নয়। কারণ, সেখানে বাম-তৃণমূল, লালু-নীতীশ, মুলায়ম-মায়াবতী একসঙ্গে থাকবেন না। ফলে তার কোনও অস্তিত্বই নেই। এই পরিস্থিতিতে বিজেপিও একটি বিকল্প হতে পারে।
কিন্তু সাংবাদিক সম্মেলন করে লালুর জন্য দরজা বন্ধের কথা বললেও বিজেপির সঙ্গে জোট গড়ার কথা খোলসা করছেন না কেন পাসোয়ান?
দলীয় সূত্রের মতে, এর কারণ তিনটি। এক, এখনও পর্যন্ত বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে পাসোয়ানের শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক হয়নি। এ বারে তা শুরু হবে। আগামিকাল নরেন্দ্র মোদী দিল্লি এলে তাঁর সঙ্গেও একটি বৈঠক করার চেষ্টা চলছে। দুই, বিজেপির বিহারের নেতাদের মধ্যে ক্ষোভ এখনও মেটেনি। বিজেপির শীর্ষ নেতারা জোটের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেও এখনও পর্যন্ত রাজ্যের নেতাদের রোষ কমানোর জন্য কিছু দিন সময় লাগবে। পাসোয়ানের মতে, বড়জোর তিন-চার দিন। তিন, কংগ্রেস শুধু সিবিআইয়ের জুজুই দেখাচ্ছে না। পাসোয়ানকে ধরে রাখার জন্য এখনও একটি শেষ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কংগ্রেসের নেতারাও বলছেন, দিল্লিতে সনিয়া ও পাসোয়ানের বাড়ি পাশাপাশি। দশ ও বারো জনপথ। যদি ধর্মনিরপেক্ষ জোটকে ধরে রাখতে সনিয়া নিজে উগ্যোগী হন? যদি তিনি পাসোয়ানের সঙ্গে বৈঠক করতে চলে যান?
লোকজনশক্তি পার্টিকে নতুন দিশা দিতে সব থেকে বেশি সক্রিয় হয়েছেন রামবিলাসের ছেলে চিরাগ পাসোয়ান। বাবাকে তিনি বুঝিয়েছেন, এখন বিজেপির সঙ্গেই যাওয়া উচিত। কিন্তু রামবিলাসের এই নতুন অবস্থানে ক্ষুব্ধ লোকজনশক্তি নেতৃত্বের একটা অংশ। ২০১০-এর বিধানসভা নির্বাচনে দলের যে তিন বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন, তাঁদের দু’জন আগেই নীতীশ কুমারের দলে ভিড়েছেন। আরারিয়া থেকে এলজেপি-র একমাত্র বিধায়ক জাকির হুসেন খান আজ জানিয়েছেন, ‘সাম্প্রদায়িক’ বিজেপির শরিক কোনও দলের সঙ্গে তিনি থাকবেন না। দলের সহ-সভাপতির পদ থেকে ইস্তফার চিঠি ইতিমধ্যেই তিনি ফ্যাক্স করে নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন। খান জানিয়েছেন, বিজেপি-বিরোধী কোনও ‘অসাম্প্রদায়িক’ দলে তিনি যোগ দেবেন। বিজেপির সঙ্গে সম্ভাব্য জোটে কড়া আপত্তি জানিয়েছেন লোকজনশক্তির সর্বভারতীয় মহাসচিব বিজেন্দ্র চৌধুরিও। রামবিলাস তেমন সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করলে তিনিও দল ছাড়বেন বলে জানিয়েছেন। তবে লোকজনশক্তি নেতৃত্বের আশা, ঘরোয়া এই সব ঝামেলা তাঁরা অল্প দিনেই মিটিয়ে ফেলতে পারবেন। তবে নীতীশ কুমার জানিয়ে দিয়েছেন, অন্য দল ছেড়ে আসা নেতা-কর্মীদের জন্য তাঁদের দলের দরজা সব সময় খোলা।
রামবিলাসকে এনডিএ-তে নেওয়ার ব্যাপারেও বিহার বিজেপির অনেক নেতার আপত্তি রয়েছে। সি পি ঠাকুর, অশ্বিনী চৌবের মতো বিজেপি নেতাদের অনেকে বলছেন, এমন সুবিধাবাদী দলকে কাছে টানার কী অর্থ? পাসোয়ান আগে নরেন্দ্র মোদীর নাম করে জোট ছেড়েছিলেন। ভবিষ্যতেও ছাড়তে পারেন। কিন্তু বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাঁদের বোঝাচ্ছেন, সেই আশঙ্কা সত্ত্বেও পাসোয়ানকে সঙ্গে নিলে ভোটে বাড়তি সুবিধা হতে পারে।
দলের এক কেন্দ্রীয় নেতা আজ বলেন, ছত্তীসগঢ়ে মাত্র এক শতাংশ ভোটের ব্যবধানে জিতে বিজেপি সরকার গড়েছে। বিহারে পাসোয়ানের ভোট রয়েছে প্রায় পাঁচ শতাংশ। পাসোয়ান, উপেন্দ্র কুশওয়াহা জোটে এলে বিজেপির উচ্চবর্ণ ভোটের পাশাপাশি নীতীশের পিছড়ে বর্গের ভোটেও থাবা বসানো যাবে। তার ওপর আগামী মাস থেকে বিহারে লাগাতার প্রচারে নামছেন নরেন্দ্র মোদী। অনগ্রসর শ্রেণির তাসও খেলছেন। তারও ফায়দা মিলবে সে রাজ্যে। ফলে পাসোয়ানকে সঙ্গে নিলে তেমন কোনও ক্ষতি নেই। আর জাতীয় স্তরে লাভ ততোধিক। ধর্মনিরেক্ষ জোট থেকে এক জনকে তুলে নিলে জাতীয় স্তরে বাকি দলগুলির কাছে যেমন বার্তা যাবে, কংগ্রেসের মোদী-বিরোধী অভিযানও ধাক্কা খাবে।

বিঁধলেন লালু
জাতীয় রাজনীতিতে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অণ্ণা হজারের নতুন অক্ষকে আজ কটাক্ষ করলেন আরজেডি-প্রধান লালুপ্রসাদ যাদব। ক’দিন ধরে নিজের দলে ভাঙন নিয়ে ব্যতিব্যস্ত লালু এ দিন এবিপি নিউজ চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজে থেকেই এই বিষয়টি নিয়ে সরব হন। সারদা-কাণ্ডের নাম না-করেও তৃণমূল নেত্রীর সততা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির নায়ক। লালুর কথায়, “মমতা এখন পুতুলের মত শান্ত হয়ে বসে রয়েছেন, আর অণ্ণা হজারে তাঁকে সততার সার্টিফিকেট দিচ্ছেন! হায় এমন দৃশ্যও আমাকে দেখতে হল!”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.