নয়া কমিটি সম্পর্কে জেনে তবে যাবেন সৌগত
উপিএ সরকারের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের পর পদত্যাগী ছয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে এ বারে রাজ্যের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক উন্নয়ন সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির সদস্য মনোনীত করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রে ক্ষমতা প্রত্যাহারের পরপরই গত বছর ২৯ সেপ্টেম্বর ওই ছয় জনকে মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য হিসেবে নিয়োগ করা হয়। তার মধ্যেই গত ৩০ এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টামণ্ডলী ভেঙে দিয়ে ছয় প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে এই নতুন কমিটিতে তাঁদের মনোনীত করার কথা জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র। আর তার পরেই এই নতুন কমিটির উদ্দেশ্য এবং কার্যকরী ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়।
সৌগতবাবুকে রাজ্যের নবগঠিত কমিটির শিল্প এবং তথ্য প্রযুক্তি দফতরের উপদেষ্টা হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছে। তিনি পাল্টা চিঠিতে মুখ্যসচিবকে লিখেছেন, বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে সরকারের এমন সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা প্রয়োজন। সেই ব্যাখ্যা পাওয়ার পরেই তিনি ওই পদ নিতে রাজি হবেন।
কিন্তু কেন এমন অবস্থান সৌগতবাবুর? দমদমের তৃণমূল সাংসদের ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, কেন্দ্রে সমর্থন প্রত্যাহারের পর মুখ্যমন্ত্রীর যে উপদেষ্টামণ্ডলী গড়া হয়েছিল, সেখানে সৌগতবাবুকে শিল্প ও তথ্য প্রযুক্তি দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেই কাজ তিনি সক্রিয় ভাবে করার চেষ্টাও করছিলেন। কিন্তু তখন দলের অন্দরেই অভিযোগ ওঠে, সৌগতবাবু মুখ্যমন্ত্রীর শিল্প উপদেষ্টা হিসেবে প্যাড ছাপিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম ভাঙাচ্ছেন। দমদমের তৃণমূল সাংসদ তখন সরকারকে জানিয়েছিলেন, তাঁকে তো মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য হিসেবেই নিয়োগ করে হয়েছে। তা হলে সমস্যা কোথায়? সৌগতবাবুর এই যুক্তি অবশ্য দলের কাছে সে ভাবে গ্রহণযোগ্য হয়নি হয়নি বলেই সূত্রের খবর। তবে ওই ঘটনার পরে সৌগতবাবু আর সে ভাবে উপদেষ্টার কাজ করছিলেন না বলেই জানা গিয়েছে।
গোটা বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক শুরু হওয়ায় সরকার বেশ অস্বস্তিতে পড়ে। শেষ পর্যন্ত সাত মাস আগে তৈরি হওয়া মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টামণ্ডলী সরকারি ভাবেই ভেঙে দিয়ে নয়া কমিটি গড়া হয় গত ৩০ এপ্রিল। ওই ছয় প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে রেখেই অর্থনৈতিক এবং সামাজিক উন্নয়ন সংক্রান্ত কমিটি তৈরি হয়। তাতে এক-এক জনকে এক বা একাধিক দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট দফতরের এক জন করে নোডাল অফিসার উপদেষ্টাদের যাবতীয় সহযোগিতা (যেমন অফিসের ব্যবস্থা, গাড়ি দেওয়া-সহ অন্যান্য কাজকর্ম) করবেন। নয়া কমিটিতে নিয়োগের এই চিঠি পেয়েই পাল্টা ব্যাখ্যা চেয়েছেন সৌগতবাবু।
সোমবার মুখ্যসচিবকে চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘নতুন কমিটি তৈরির কথা জানলাম। কিন্তু এই কমিটির চেয়ারম্যান কে? সদস্য-সচিবই বা কে হয়েছেন? কে কমিটির বৈঠক ডাকবেন? কমিটির নিয়মিত বৈঠক হবে তো? আর যে উপদেষ্টাদের নিয়োগ করা হয়েছে, তাঁরা কার কাছে তাঁদের উপদেশ পাঠাবেন?’ চিঠির ব্যাপারে সৌগতবাবুকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমি তো ঢাক-ঢোল পিটিয়ে এই চিঠি দিইনি! তবে কিছু বিষয় আগাম জানতে চেয়েছি। কে চেয়ারম্যান হবেন, কে বৈঠক ডাকবেন, আদৌ বৈঠক হবে কি না, কাকে উপদেশ দেওয়া হবে, এ সব না জানলে তো কমিটির মূল্য থাকে না। সেই কারণেই মুখ্যসচিবের কাছে তা জানতে চেয়েছি। আশা করি, উত্তর পাব।”
সৌগতবাবুর এই চিঠি সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়েছে। প্রশাসনিক মহলের অনেকেই মনে করছেন, সৌগতবাবুকে নিয়ে সে সময় যে ভাবে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল, তাতে তিনি অপমানিত বোধ করেছিলেন। এখন আবার যখন অন্য কমিটি তৈরি হয়েছে, সেখানে দায়িত্ব গ্রহণ করার আগে তিনি সব কিছু যাচাই করে দেখে নিতে চাইছেন। আসলে শিল্প এবং তথ্য প্রযুক্তি দফতরের উপদেষ্টা হিসাবে তিনি বুঝে নিতে চাইছেন, তাঁর আদৌ কোনও কাজ থাকবে কি না। একই সঙ্গে কমিটির কোনও উপযোগিতা আছে কি না, সেটাও তিনি জানতে চেয়েছেন। তবে এই চিঠি পেয়ে রীতিমতো ফাঁপড়ে পড়েছেন মুখ্যসচিব। এক শীর্ষ আমলার কথায়, মুখ্যসচিবকে শুধু উপদেষ্টা কমিটি তৈরি করতে বলা হয়েছে। তিনি তা করে দিয়েছেন। এখন সৌগতবাবু যে সব প্রশ্ন তুলেছেন, তা মুখ্যসচিবেরও জানা আছে তো?

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.