এক মাসের বেশি সময় ধরে মালদহে ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস খেলা বন্ধ হয়ে রয়েছে। তবে তা খেলোয়ারদের অভাবে নয়। সৌজন্যে-সাইকেল। প্রশাসন সংখ্যালঘু দফতরকে মালদহের সত্য চৌধুরী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সাইকেল রাখার অস্থায়ী গুদাম করায় অনুমতি দেওয়ায় ক্রীড়াপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তাঁরা জানাচ্ছেন, স্টেডিয়ামের ভিতরে সাত হাজারেরও বেশি সাইকেল রাখা হয়েছে। স্টেডিয়ামের ভিতরেই সাইকেল ফিটিংয়ের কাজ করছে ৭০জনের বেশি কর্মী। শুধু গুদামই নয়, সাইকেল রাখা ও ফিটিং করার জন্য ব্যাডমিন্টন কোর্টের মেঝেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ। বন্ধ সমস্ত প্রশিক্ষণ শিবির। |
সম্প্রতি মালদহের জেলাশাসক হয়ে এসেছেন গোদালা কিরণ কুমার। তিনি বলেন, “খেলা, প্রশিক্ষণ বন্ধ রয়েছে তা তো জানি না। আমি কেউ বিষয়টি জানায়নি। ব্লকগুলিতে দ্রুত সাইকেল পাঠিয়ে ইন্ডোর স্টেডিয়াম খালি করার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিচ্ছি।” মালদহ জেলা ক্রীড় সংস্থার সম্পাদক শুভাশিস দাস বলেন, “আমরা প্রশাসনকে বললেও আমাদের কথা শোনা হয়নি। সরকার খেলাধূলোর মান উন্নয়নের জন্য ক্লাবগুলিকে আর্থিক সাহায্য করছে। অথচ সরকারের একাংশ আধিকারিক খেলাধূলো বন্ধ করে স্টেডিয়ামে সাইকেল রাখার গুদাম করার অনুমতি দিচ্ছে।” ক্রীড়া সংস্থার ব্যাডমিন্টন সাব কমিটির সম্পাদক সোমেশ দাস বলেন, “ইন্ডোর স্টেডিয়ামে প্রশিক্ষণ শিবিরে ৪০ জনের বেশি ছেলেমেয়ে নিয়মিত প্র্যাকটিস করে। তাদের মধ্যে চারজন রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করেছে। ছেলেমেয়েগুলি ঘুরে বেড়াচ্ছে।”
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ৬৯টি মাদ্রাসার নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সমস্ত ছাত্রীদের সাইকেল বিলি করার জন্য জেলায় ২২ হাজার ৭৮৯ টি সাইকেল প্রায় ২ মাস আগে পঞ্জাবের লুধিয়ানা থেকে মালদহে এসেছে। ১১ হাজার সাইকেল বিলি করার পর ইংরেজবাজার উপনিবার্চনের জন্য সাইকেল বিলি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় জেলার সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতর। ওই সাইকেলগুলি দফতর থেকে স্টেডিয়ামের দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলা পরিকল্পনা আধিকারিকের কাছে আবেদন করে। সেই আবেদনের ভিত্তিতে জেলা পরিকল্পনা আধিকারিক ইন্ডোর স্টেডিয়ামটি সংখ্যালঘু বিষয়ক দফতরকে সাইকেল রাখার জন্য ভাড়া দেন। জেলা পরিকল্পনা আধিকারিক সন্দীপ দত্ত বলেন, “ইন্ডোর স্টেডিয়ামে যে সমস্ত খেলা বন্ধ হয়ে গিয়েছে তা জানি না। খেলা বন্ধ করে স্টেডিয়াম ভাড়া দেওয়া কখনই হবে না।
জেলা সংখ্যালঘু উন্নয়ন আধিকারিক কৃষ্ণাভ ঘোষ সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছে। তিনি বলেন, “আমাদেরও ভাল লাগছে না খেলা বন্ধ করে ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সাইকেল রাখতে। কিন্তু আমরা নিরুপায়। এই অবস্থায় অন্য কোথাও সাইকেলগুলি রাখাও সম্ভব নয়। ইন্ডোর স্টেডিয়ামের ভিতরের পাশাপাশি বাইরে ও পাশে সুইমিংপুলের ভিতরে সামিয়ানা টাঙিয়ে সাইকেল রাখা হয়েছে।” |