পঞ্চায়েতের মুখে চমক, বলছে বিরোধীরা
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিতর্ক
নীষী পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম চালুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ঘিরে বিতর্ক দানা বাঁধল কোচবিহারে। রবিবার পুন্ডিবাড়িতে উত্তরবঙ্গ কৃষি বিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় কৃষক হস্টেল ভবনে অস্থায়ীভাবে ওই পাঠ্যক্রম চালুর উদ্বোধন করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, আগামী জুলাই মাসে অস্থায়ী ওই ভবনে ক্লাস শুরু করা হবে। পাশাপাশি জেলা কৃষি ফার্মের ২০ একর জমিতে স্থায়ী ভবন তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান নিয়ে কোচবিহারের রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক দেখা দিয়েছে।
বিরোধীদের অভিযোগ, পুরোদস্তুর পরিকাঠামো ছাড়াই পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে চমক দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম চালুর ঘোষণা করা হয়েছে। উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার ছাড়া অন্য পদে কর্মীও নিয়োগ করা হয়নি। স্থায়ী ভবনের আর্থিক বরাদ্দ মেলেনি। সেইসঙ্গে যাঁর নামাঙ্কিত এই বিশ্ববিদ্যালয়, সেই মনীষী পঞ্চানন বর্মার প্রতিকৃতিকে মঞ্চের নিচে রেখে তাঁর প্রতিও অসন্মান করা হয়েছে। একবার হাওয়ায় তা মাটিতে পরেও যায়। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতমবাবু অবশ্য বলেছেন, “মনীষী পঞ্চানন বর্মার প্রতিকৃতি মঞ্চের ওপরে রাখা উচিত ছিল। ওই প্রতিকৃতি মঞ্চের নিচে রাখার ঘটনায় ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। পুরো বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি।” মন্ত্রীর দাবি, “আমি একেবারে শেষ সময়ে ওই অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তারা তড়িঘড়ি অনুষ্ঠানের আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। কে ওই ছবি নিচে রাখল তা খোঁজ নিচ্ছি।”
রবিবার পুন্ডিবাড়িতে উত্তরবঙ্গ কৃষি বিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় কৃষক হস্টেল ভবনে
অস্থায়ীভাবে পাঠ্যক্রম চালুর উদ্বোধনে মন্ত্রী গৌতম দেব।—নিজস্ব চিত্র।
একই সঙ্গে বিরোধীদের নির্বাচনী চমকের অভিযোগকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উড়িয়ে দিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “ভারতে হাতেগোনা কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় মনীষীদের নামে রয়েছে। পঞ্চানন বর্মার প্রতি আমাদের সবার অপার শ্রদ্ধা রয়েছে বলে তাঁর নামে কোচবিহারের ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম চালুর সঙ্গে ভোটের যোগ নেই। যাঁরা পরিকাঠামো নিয়ে চিন্তা করছেন, অপেক্ষা করুন। জুলাইয়ের আগে পরিকাঠামোর ব্যবস্থা হয়ে যাবে।” অনুষ্ঠানে বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন, পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, উপাচার্য ইন্দ্রজিৎ রায় হাজির ছিলেন।
ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ বলেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে চমক দিতে পাঠ্যক্রম চালুর উদ্বোধন করা হল। বাস্তবে কবে ক্লাস চালু হবে তা নিয়ে সংশয় আছে। তাছাড়া তৃণমূল নেতারা এখন সবচেয়ে বড়। মনীষী পঞ্চানন বর্মার প্রতিকৃতি তাই মঞ্চের নিচে থেকেছে।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য অনন্ত রায়ের বক্তব্য, “কর্মী নিয়োগ হল না। স্থায়ী ভবন হলনা অথচ পাঠ্যক্রম চালুর উদ্বোধন হয়ে গেল। তার উপর পঞ্চানন বর্মার ছবি মঞ্চের নিচে রেখে উত্তরবঙ্গের মানুষের ভাবাবেগকে আঘাত দিলেন উদ্যোক্তারা।” রাষ্ট্রীয় পঞ্চানন স্মারক সমিতির সভাপতি গিরিন্দ্রনাথ বর্মন বলেন, “মনীষী পঞ্চানন বর্মার ছবি নিয়ে যা হয়েছে তা ক্ষমার অযোগ্য।” ঘটনায় পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। উপাচার্য ইন্দ্রজিৎবাবু বলেন, “পঞ্চানন বর্মাকে সামনে রেখে আমরা এগোতে চাইছি। স্থায়ী ভবনে তাঁর মূর্তি বসানো হবে। এদিন সবাই যাতে দেখতে পান তা ভেবে তাঁর প্রতিকৃতি নীচে রাখা হয়।” উপাচার্য জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ পরিচালনার জন্য প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ মিলেছে। স্থায়ী ভবনের জন্য ২০ কোটি টাকার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অস্থায়ী কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়াও দ্রুত শুরু হয়ে যাবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.