বলছেন বিজ্ঞানীরা আর্সেনিক ছাড়াও
নানা ধাতু জলে, শোধনের পরামর্শ
মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক শুধু নয়, পূর্বস্থলীর দু’টি ব্লকের বহু এলাকায় নলকূপের পানীয় জলে মিলছে ক্ষতিকর বিভিন্ন ধাতব উপাদান, এমনই দাবি কেন্দ্রীয় ভূমি ও জল বোর্ডের বিজ্ঞানীদের। পূর্বস্থলীতে ওই বোর্ডের (পূর্ব ক্ষেত্র) একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে এসে তাঁরা জানান, এলাকার পানীয় জলে মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে ম্যাঙ্গানিজ, ক্রোমিয়ামের মতো ধাতু মিলছে। ধারাবাহিক ভাবে ওই জল খেলে নানা রোগের শিকার হতে পারেন বাসিন্দারা। তাই ওই জল ব্যবহার করার ব্যাপারে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।
বিজ্ঞানীরা জানান, কৃষিকাজের জন্য বর্ধমানে প্রচুর ভূগর্ভস্থ জল তোলা হয়। সব থেকে বেশি জল তোলা হয় বোরো চাষের জন্য। যে পরিমাণ জল তোলা হচ্ছে, তার ঘাটতি পূরণ না হওয়ায় প্রতি বছর নামছে জলস্তর। বাড়ছে বিপদের সম্ভাবনাও। কেন্দ্রীয় ওই সংস্থার দাবি, সম্প্রতি কাটোয়া থেকে কালনা ২ ব্লক পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার এলাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে জলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সংস্থার তরফে জলের নমুনা পাঠানো হয়েছে জিওলজিক্যাল সার্ভে অফ্ ইন্ডিয়ার পরীক্ষাগারে। সাজিয়ারা, চাপাহাটি, ফলেয়া, ধরমপুর, নন্দীপুর-সহ বিভিন্ন এলাকার রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরেই একটি তালিকা তৈরি করেন বিজ্ঞানীরা। ওই তালিকায় কোন এলাকার কোন নলকূপ থেকে কতটা আর্সেনিক মিলেছে, সেখানকার জলে কতটা ধাতব উপাদান মিশে রয়েছে, তা পরীক্ষা নিরীক্ষা চালান তাঁরা।
সংস্থার বিজ্ঞানী সুপ্রিয় ব্রহ্ম বলেন, “নমুনা থেকে আমরা দেখেছি মাটির গভীরে ১০০ মিটারের মধ্যেই মিলছে আর্সেনিক ও অন্যান্য ধাতব উপাদান। তাই ১০০ মিটারের বেশি গভীরে জল এখানে নিরাপদ।” তিনি জানান, পূর্বস্থলীর দু’টি ব্লকের পাশাপাশি কালনা ১ ব্লকের ধাত্রীগ্রাম ও কালীনগর এলাকার জলে অতিরিক্ত ম্যাঙ্গানিজ মিলেছে। এই জল ব্যবহার করলে কিডনি ও স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি হতে পারে। এই জল যে ক্ষতিকারক, তা স্বীকার করেছেন রাজ্য কৃষি খামারের (বর্ধমান) আধিকারিক মানস মুখোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, মাটির তলা থেকে বেশি জল তোলাতেই ওই ধাতব উপাদান উঠে আসছে। গোড়াতেই সতর্ক না হলে পরে আমাদের মাসুল দিতে হবে।” খাতায় কলমে বর্ধমানের পূর্বস্থলী ১ ও পূর্বস্থলী ২ ব্লক আর্সেনিক এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হলেও কেন্দ্রীয় ভূমি জল বোর্ডের বিজ্ঞানীরা জানান, এলাকার পাঁচটি ব্লকে পানীয় জলে আর্সেনিক মাত্রারিক্ত পরিমাণে মিশে রয়েছে। বাকি তিনটি ব্লক হল কাটোয়া ১, ২ ও কালনা ২ ব্লক। সংস্থার বিজ্ঞানী সঞ্জীব চক্রবর্তীর দাবি, ভাগীরথী লাগোয়া এলাকাগুলিতে আর্সেনিকের প্রকোপ বেশি। দূষণমুক্ত জল পেতে তাঁদের পরামর্শ, মাটির উপরের অংশের জলকে শোধন করে পানের উপযোগী করা, দ্বিতীয়ত এলাকায় আরও বেশি করে কুয়ো তৈরি করা।
পূর্বস্থলী ১ ব্লকের আর্সেনিকোসিস রোগের প্রকোপের কারণ নিয়ে দেড় দশক আগে প্রথম আন্দোলনে নেমেছিলেন স্বপন দেবনাথ। রোগীদের নিয়ে বিক্ষোভ-সহ নানা কর্মসূচি নিয়েছিলেন তিনি। বর্তমানে তিনি রাজ্যের ক্ষুদ্র কুটির, ভূমি ও বস্ত্র দফতরের মন্ত্রী। তিনি বলেন, “বিষয়টি আমার জানা ছিল না। তবে গুরুত্ব দিয়ে খোঁজ নেব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.