কিটের অভাবে রক্তদান শিবির হল না আসানসোলে। রবিবার আসানসোল পশ্চিম বাজারে ডিওয়াইএফয়ের উদ্যোগে একটি রক্তদান শিবির হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মহকুমা হাসপাতাল থেকে কিট পাওয়া যায়নি। তাই বাতিল করতে হয়েছে সেই শিবির। এ নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সংগঠনের সদস্য-সমর্থকেরা। সংগঠনের রাজ্য সভাপতি আভাস রায়চৌধুরীর অভিযোগ, মাসখানেক আগেই তাঁরা এই রক্তদান শিবির করার কর্মসূচি নিয়েছিলেন। কিন্তু কিট না থাকায় রক্ত নেওয়া যাবে না বলে জানিয়েছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সম্প্রতি কালনা হাসপাতাল কিটের অভাবে বিপাকে পড়েছে। কিছু দিন আগে একই সমস্যায় দুর্গাপুরে একই দিনে বন্ধ হয়ে যায় তিনটি রক্তদান শিবির। রবিবার আসানসোল হাসপাতালে সুপার নিখিলচন্দ্র দাস বলেন, “ব্লাড কিট না থাকায় আমরা এদিন রক্তদান শিবির করতে পারিনি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।” তিনি আরও জানান, মাত্র ২০ কিট রক্ত মজুত আছে। সরাসরি রক্তদাতার শরীর থেকে রক্ত টেনে পরীক্ষা করে দেওয়া হচ্ছে। দিন সাতেকের মধ্যেই কিটের সমস্যা মিটবে বলে তাঁর আশা। এ দিকে, কিটের অভাবে জেরবার হচ্ছেন হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত নিতে আসা রোগীর পরিবার।
বর্ধমানের রিজিওনাল ব্লাড ট্রান্সমিশন সেন্টারের (আরবিটিসি) অধীনে রয়েছে বর্ধমান, কালনা, কাটোয়া, দুর্গাপুর, সিউড়ি, রামপুরহাট, বোলপুর এবং আসানসোল জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক। এই দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ১২ মার্চ স্বাস্থ্য দফতর থেকে ১৮০টি এবং ১৩ মার্চ ৩২০টি কিট পাওয়া গিয়েছিল। ৮টি ব্লাড ব্যাঙ্কের মধ্যে তা ভাগ করে দেওয়া হয়। আসানসোল জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১২ মার্চ তাঁরা আরবিটিসি থেকে ৬০টি কিট পেয়েছিলেন। ১৪ মার্চ আসানসোল আদালত ল’ক্লার্কের রক্তদান শিবির থেকে ১৩ কিট রক্ত নেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু এর পরেই কিটের অভাবে রবিবার আসানসোল পশ্চিম বাজারে ডিওয়াইএফয়ের উদ্যোগে শিবির বাতিল করা হয়। বর্ধমান জেলা ব্লাড অর্গানাইজেশন কোঅর্ডিনেশন কমিটির প্রধান উপদেষ্টা প্রবীর ধর জানান, ১৯ মার্চ রানিগঞ্জের সিহারশোলে, ২২ মার্চ কুলটিতে, ২৩ মার্চ ভগৎ সিংহের জন্মদিনে আসানসোলে ও ২৪ ও ২৫ মার্চ ধ্রুবডাঙা ও বার্নপুরে রক্তদান শিবির হওয়ার কথা। কিন্তু কিট না এলে শিবিরগুলি অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। প্রদীপবাবু আরও জানান, মাস খানেক আগে ইসিএলের কাল্লা হাসপাতাল থেকে ১০০টি ও ইস্কোর বার্নপুর হাসপাতাল থেকে ২০০টি কিট ধার করেছিল আসানসোল জেলা হাসপাতাল। সেগুলিও তাদের ফেরত দিতে হবে।
প্রবীরবাবু বলেন, “আমরা হাসপাতাল সুপারকে লিখিত আবেদন জানিয়ে ওই দুই হাসপাতাল থেকে কিট আনিয়ে আপাতত সংকট মেটানোর অনুরোধ জানিয়েছি।” আরবিটিসির ডিরেক্টর সোমা দত্ত বলেন, “১২ মার্চের পর স্বাস্থ্য দফতর থেকে আমরা আর কিট পাইনি। নির্দেশ পেলেই আমরা তা নিয়ে আসব।” |