মাস চারেক আগে তিন শতক করে জমি মিলেছিল দুই গ্রামবাসীর দানে। হাবরা-১ ব্লকের পৃথিবা পঞ্চায়েতের আনোয়ারবেড়িয়া এবং আটুলিয়া এলাকায় সেই দানের জমিতেই দু’টি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু হল বৃহস্পতিবার।
হাবরা-১ পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র দু’টি তৈরি করতে খরচ হয়েছে ২২ লক্ষ টাকা। এর ফলে, আটুলিয়া, হিরাপোল, জিওলডাঙা, দক্ষিণ সরাইয়ের মতো কয়েকটি গ্রামের ৩০-৩৫ হাজার মানুষ উপকৃত হবেন। রবিবার বাদে সব দিনই কেন্দ্র দু’টি খোলা থাকবে। প্রসূতিদের পরীক্ষা, টিকাকরণ, রক্ত পরীক্ষা, রোগ নির্ণয়-সহ প্রাথমিক রোগের যাবতীয় চিকিৎসা পরিষেবা এখানে পাওয়া যাবে। দু’টি কেন্দ্রেই তিন জন করে স্বাস্থ্যকর্মী থাকবেন। বিএমওএইচ রোগী দেখবেন।
আনোয়ারবেড়িয়া এবং আটুলিয়া গ্রাম থেকে হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতালের দূরত্ব চার-পাঁচ কিলোমিটার। সাধারণ অসুখেও অতটা পথ ভাঙতে গ্রামবাসীরা কষ্ট পেতেন। অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদেরও নিয়ে যেতে সমস্যা হত। ওই সমস্যা দূর করতে প্রায় এক বছর আগে স্বাস্থ্য দফতর আনোয়ারবেড়িয়া এবং আটুলিয়ায় উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র দু’টি তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়। তার জন্য অর্থও বরাদ্দ হয়। কিন্তু মিলছিল না জমি। ফলে, উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র দু’টির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। কারণ, জমি কেনার টাকা সরকারি এই প্রকল্পে বরাদ্দ হয়নি। শেষমেশ মাস চারেক আগে আনোয়ারবেড়িয়া উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি তৈরির জন্য তিন শতক জমি দান করেন স্থানীয় বাসিন্দা তথা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আব্দুল হাই মণ্ডল। এই উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির জন্য অবশ্য কিছুটা জমি গ্রামবাসীরা চাঁদা তুলে কিনে দেন। আটুলিয়ার উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য জমি দান করেন ব্যবসায়ী রঞ্জিতকুমার দাস।
বৃহস্পতিবার কেন্দ্র দু’টির উদ্বোধন করেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জাকির হোসেন। উপস্থিত ছিলেন বিডিও চিত্তদীপ সেন, বিএমওএইচ প্রবীর বাগ প্রমুখ। জাকির বলেন, “ওঁরা জমি দান না করলে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র দু’টি তৈরি করা সম্ভব হত না। এখানে এক শতক জমির দাম এক লক্ষ টাকা। দু’জনের কাছেই আমরা কৃতজ্ঞ।” দুই জমিদাতাকেই পঞ্চায়েত সমিতির তরফে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
তাঁদের জমিতে দু’টি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে ওঠায় দুই জমিদাতাই খুশি। আব্দুল হাই বলেন, “মানুষের স্বার্থে জমিটা কাজে লাগল, এতেই আমি খুশি।” রঞ্জিতবাবু বলেন, “উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির খুবই প্রয়োজন ছিল। আমি তো এলাকারই এক জন। মানুষের প্রয়োজনে জমি দান করে খুবই ভাল লাগছে।” |