সদ্যোজাতদের বিশেষ ইউনিটে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না নার্সিং কলেজের ছাত্রীদের। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে এই পরিস্থিতি চলছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। হাতেকলমে কাজ শিখতে ছাত্রীদের ওই ইউনিটে যাওয়ার কথা। তাঁরা যাচ্ছেনও। তবে, ইউনিটের বাইরে সময় কাটিয়ে ফের কলেজে ফিরে আসছেন। আগামী জুনে পরীক্ষা। তার আগে রীতিমতো সমস্যায় পড়েছেন ছাত্রীরা। কলেজ কর্তৃপক্ষ অবশ্য এ নিয়ে বিস্তারিত জানাতে নারাজ। নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষা অপর্ণা সাহা শুধু বলেন, “একটা সমস্যা রয়েছে। সমস্যার কথা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।” আর হাসপাতাল সুপার যুগল করের বক্তব্য, “সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।” মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ শুদ্ধদন বটব্যালের কথায়, “ছাত্রীদের ওই ইউনিটে ঢুকতে দেওয়া হবে না কেন? এটা ওঁদের সিলেবাসেই রয়েছে। সমস্যার কথা জানি না। সোমবার বিষয়টি দেখব।” |
২০১০ সালে মেদিনীপুর নার্সিং কলেজে পঠনপাঠন শুরু হয়। হাসপাতাল চত্বরেই রয়েছে কলেজ। প্রথম বছর যাঁরা কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন, এখন তাঁরা তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। নার্সিং কাউন্সিলের সিলেবাস অনুযায়ী, এই সময় বিভিন্ন বিভাগে গিয়ে হাতেকলমে কাজ শিখতে হয়। সেই মতো তৃতীয় বর্ষের ৫০ জন ছাত্রীকে সদ্যোজাতদের বিশেষ ইউনিট ‘সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট’ (এসএনসিইউ)-এ পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। গত বছর অগস্টে মেদিনীপুর মেডিক্যাসে এসএনসিইউ চালু হয়েছে। জানা গিয়েছে, ওই ইউনিটের কর্তৃপক্ষ হঠাত্ই জানান, ছাত্রীদের আর ঢুকতে দেওয়া হবে না। একসঙ্গে ৫০ জন ছাত্রীকে এখানে পাঠানো সম্ভব নয়। তাই নার্সিং কলেজ কর্তৃপক্ষ একসঙ্গে ৬ জন করে ছাত্রীকে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। ঠিক ছিল, ৬ জন ছাত্রী টানা দু’সপ্তাহ এই ইউনিটে এসে প্রয়োজনীয় সব কিছু শিখবেন। ইতিমধ্যে ৩৭ জন প্র্যাক্টিক্যাল করে গিয়েছেন। কিন্তু, এরপর আর ছাত্রীদের এখানে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
ছাত্রীদের যে আর ঢুকতে দেওয়া হবে না, তা নার্সিং কলেজ কর্তৃপক্ষকে আগে থেকে জানানোও হয়নি। ফলে, রুটিন মাফিক ছাত্রীরা সদ্যোজাতদের ওই ইউনিটে আসেন। ঢুকতে না পেয়ে ইউনিটের সামনে সময় কাটিয়ে ফের কলেজে ফিরে যান। গত এক সপ্তাহ ধরে এমনটা চলছে। কিন্তু কেন এই সমস্যা? হাসপাতালের এক সূত্রে খবর, সমস্যাটা আসলে অন্য জায়গায়। যে বিশেষ পোষাক পরে এসএনসিইউতে ঢুকতে হয়, তা শেষ হয়ে গিয়েছে। ওই ইউনিট কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ওই পোশাক ছাড়া কেউ এখানে ঢুকতে পারবে না। নার্সিং কলেজের ছাত্রীরাও নয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গত এক সপ্তাহে এই পোশাক কেনার ব্যবস্থা করে উঠতে পারেনি। কারন, কোন তহবিল থেকে পোশাক কেনা হবে, তা চূড়ান্ত হয়নি।
শুধু কি পোশাকের জন্যই সমস্যার সূত্রপাত? প্রশ্নের সদুত্তর এড়িয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, একটা সমস্যা রয়েছে। তার সমাধানে পদক্ষেপও করা হচ্ছে। |