নেই মেয়র পারিষদেরা
কাজ থমকে পুরসভায়, অভিযোগ
মেয়র পারিষদরা না-থাকাতে শিলিগুড়ি পুরসভার বিভিন্ন বিভাগে কাজের গতি থমকে পড়েছে বলে অভিযোগ। সাফাইয়ের মতো জরুরি পরিষেবার কাজ প্রতিদিন সকালে সংশ্লিষ্ট মেয়র পারিষদ বিভিন্ন বরোতে গিয়ে দেখভাল করতেন। কোথাও কোনও সমস্যা হলে চটজলদি সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি সেখানে কর্মীদের পাঠাতেন। এখন মেয়র পারিষদ না থাকায় সে সব কাজ অনেক ক্ষেত্রে পড়ে থাকছে। রবিবার কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে সাই কেন্দ্র থেকে তাদের জায়গায় কয়েকদিন ধরে আবর্জনা জমে রয়েছে জানিয়ে পুর কর্তৃপক্ষকে ফোন করে জানানো হয়। এ দিনও তা সাফাই হয়নি। সমস্যা হচ্ছে ট্রেড লাইসেন্স, বিল্ডিং বিভাগের কাজেও।
বিশেষ করে পুরসভার এই ডামাডোলের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এই সময়ে অবৈধ নির্মাণ কাজে একাংশ সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ। এ দিন ৮ এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডে দুটি অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ ওঠে। পুরকর্মীদের একাংশের মদতেই ওই কাজ হচ্ছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ ওঠায় ৮ নম্বর ওয়ার্ডে নির্মাণ কাজ এ দিন বন্ধ করে দেন নির্মাতারাই। তাঁরা জানিয়েছেন, সমস্ত বৈধ নথি রয়েছে। মেয়রকে তা দেখিয়েই তাঁরা নির্মাণ কাজ করবেন। ৯ নম্বর ওয়ার্ডে নেহেরু রোডে একটি গুদাম অবৈধ ভাবে নির্মাণের অভিযোগ ওঠে। পাশাপাশি সেখানে নির্মাণ কাজে ভাঙাচোরা আবর্জনা ফেলার ক্ষেত্রে নিয়ম মাফিক ফি জমা না-করেই পুরসভার গাড়ি ব্যবস্থার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। অভিযুক্ত গোবিন্দ অগ্রবাল বলেন, “অভিযোগ ঠিক নয়। আমার এক বন্ধু নেহেরু রোডে বাড়িটি কিনে সেখানে নিয়ম মেনেই গুদাম তৈরি করছেন। ফি দিয়েই তিনি পুরসভার গাড়িতে অবর্জনা সরাচ্ছেন।” শিলিগুড়ির খালপাড়া, ঋষিঅরবিন্দ রোড বাইলেন-সহ কয়েকটি জায়গা থেকেও অবৈধ নির্মাণে অভিযোগ পৌঁছেছে। তবে পুরসভার তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এমনকী কয়েকটি ক্ষেত্রে পুরকর্মীরা অভিযোগ খতিয়ে দেখে এলেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও নির্দেশ না মেলায় তাঁরাও হাত গুটিয়ে রয়েছেন।
মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত অবশ্য দাবি করেছেন, “পুর পরিষেবা স্বাভাবিক রয়েছে। কোথাও কোনও সমস্যা হলে সংশ্লিষ্ট বিভাগের আধিকারিকদের জানাতে বলা হয়েছে। সেই মতো সমস্ত ক্ষেত্রেই ব্যবস্থাই নেওয়া হচ্ছে।” নির্দিষ্ট করে কোনও অভিযোগ থাকলে তা পুরসভায় জানাতে বলেছেন তিনি।
তবে বিভিন্ন দফতরগুলির মেয়র পারিষদরা না থাকায় একা মেয়রের পক্ষে সব দিক সামলানো যে সম্ভব নয় কর্মীদের একাংশই তা মনে করছেন। পূর্ত দফতরের তরফে বেশ কিছু কাজের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। মেয়র পারিষদ না থাকায় সে সব কাজ ঝুলে থাকবে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। পুরসভারই একটি সূত্র জানিয়েছে, রথখোলা, ফুলেশ্বরী বাজারে এবং মাতৃসদন লাগোয়া এলাকায় পুরসভার তরফে বাজারের জন্য নতুন ভবন তৈরির দরপত্র ডাকা হয়েছে। ওয়ার্ক অর্ডারও দেওয়া হয়েছে দু’ একটি ক্ষেত্রে। ব্যবসায়ীদের মধ্যে দোকান বিলি করতে ফর্ম বিলিও হয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে দোকানের জন্য অগ্রিম টাকা জমা নিয়ে কাজ শুরু কথা ছিল। সেই প্রক্রিয়া থমকে পড়েছে বলে অভিযোগ। কোর্ট মোড় থেকে আশিঘর এবং উড়ালপুল থেকে নিউ জলপাইগুড়ি যাতায়াতের রাস্তা সংস্কার কাজ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর থেকে করার কথা জানানো হয়েছিল। সে ব্যাপারকে সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরকে পুরসভার তরফে কিছু জানানো হয়নি।
ট্রেড লাইসেন্স বিভাগে কর্মী আধিকারিকরা প্রতিদিনই বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। মেয়র পারিষদ না থাকায় তাদের মেয়রের দফতরে যেতে হচ্ছে। মেয়র অন্য কাজে ব্যস্ত থাকলে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে। একই সমস্যা রয়েছে বস্তি উন্নয়ন বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগের কাজেও। বিশেষ করে বাজেটের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরের মেয়র পারিষদদের সঙ্গে নানা আলোচনা করেন মেয়র। আগামী ২৩ মার্চ বাজেট পেশের কথা। অথচ এই গুরুপত্বপূর্ণ সময়ে মেয়র পারিষদরা না থাকায় দফতরের কাজকর্মের কোনও দিকগুলি বাজেটে গুরুত্ব দেওয়া হবে তা নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। কেন না মেয়র সার্বিক ভাবে সমস্ত কিছু দেখলেও বছরভর মেয়র পারিষরাই নিজেদের বিভাগের সমস্যাগুলির খুঁটিনাটি জানেন।
১৩ মার্চ দলত্যাগী নান্টু পালকে চেয়ারম্যান করার ঘটনায় মেয়র সমস্ত মেয়র পারিষদের পদ খারিজ করে দেন। শিলিগুড়ি পুরসভায় জোটের পুরবোর্ডে দুই শরিক কংগ্রেস এবং তৃণমূলের বিরোধ তাতে তুঙ্গে ওঠে। যদিও দুই পক্ষই সমাধান সূত্রের খোঁজে রয়েছে। বেশি দিন এই পরিস্থিতি চললে পরিষেবার কাজ ব্যহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন বামেরাও। তাদের তরফে মেয়র এবং পুরকমিশনারের সঙ্গে দেখা করে পানীয় জল-সহ বিভিন্ন জরুরি পরিষেবার কাজে যাতে কোনও বিঘ্ন না ঘটে সে ব্যাপারে আবেদন করা হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.