পাহাড়ে মোতায়েন র্যাফ, আইআরবি, সিআরপি |
ফের সক্রিয় হচ্ছে জিএনএলএফ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
দার্জিলিং পাহাড়ে সিআরপি, র্যাফ মোতায়েন হতেই ফের সক্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করেছে জিএনএলএফ। ছোট ছোট মিটিং করে নতুন কমিটি তৈরি করার পাশাপাশি মোর্চা সমর্থকদের সংগঠনে টেনে এনে শক্তিশালী হওয়ার চেষ্টা শুরু করেছে জিএনএলফ। রবিবার কার্শিয়াংয়ের চিলাউনিধারা, গাড়িধুরার লংভিউ চা বাগান ও সুকনা এলাকায় মিটিং করে জিএনএলএফ। দলের নেতাদের দাবি, শতাধিক মোর্চা সমর্থক জিএনএলএফে যোগ দিয়েছে। সম্প্রতি শিমূলবাড়ি চা বাগানে কিছু মোর্চা সমর্থক জিএনএলএফে যোগ দেয়। ডুয়ার্সে মোর্চার একটি বড় অংশ তৃণমূল ও কংগ্রেসে যোগ দিয়েছে। এ বার পাহাড়ে সংগঠন ভাঙনে অস্বস্তিতে মোর্চা।
মোর্চার সহ-সভাপতি প্রদীপ প্রধান বলেন, “আমি কার্শিয়াংয়ের বাইরে রয়েছি। দলের কোনও সদস্য ‘জিএনএলএফ’-এ যোগ দিয়েছে বলে আমার কাছে কোনও খবর নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব। তবে এটুকু বলতে পারি, পাহাড়ের বাসিন্দারা মোর্চার সঙ্গেই আছেন।” তবে মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতা জানান, কার্শিয়াং মহকুমায় জিএনএলএফের সংগঠন রয়েছে। র্যাফ, আইআরবি, সিআরপি পাহাড়ে মোতায়েন হতেই তাঁরা ফের দলের কাজকর্ম শুরু করেছে। দলীয় সূত্রের খবর, জিএনএলএফ নেত্রী ছিরিং দাহালের বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় সুকনায় এ দিন বেলা দুপুরে জিএনলএফের প্রথম বৈঠক শুরু হয়। সেখানে ‘গোর্খা ন্যাশনাল উইম্যানস অর্গানাইজেশন’ গড়ে তোলা হয়। আপাতত ২৫ জনের একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছে। মণিকা দাহালকে সংগঠনের সম্পাদক করা হয়। সেখানেই ২৫ জন মোর্চা সমর্থক জিএনএলএফে যোগ দেন বলে দাবি করা হয়েছে। ছিরিং জানান, সুবাস ঘিসিংয়ের নির্দেশ মেনে পাহাড়ে সংগঠনের কাজ শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, “২০০৭ সালের পর থেকে দলের সমস্ত কমিটি কাজ করা বন্ধ করে দেয়। এবারে নতুন করে ফের কমিটি তৈরি করছি। জিএনএলএফের শাখা সংগঠন হিসেবে মহিলাদের ওই সংগঠন কাজ করবে। প্রত্যেকটি জায়গায় নতুন করে সংগঠন তৈরি করা হবে।”
এর পরেই গাড়িধূরার লেবং চা বাগান এবং চিলাউনিধারাতে দুটি সভা করে জিএনএলএফ নেতানেত্রীরা। গাড়িধূরা থেকে সাত কিলোমিটার উপরে চিলাউনিধারার কোঠিডারা প্রাথমিক স্কুলে জিএনএলএফ নেতা নিমা লামার নেতৃত্বে মিটিং হয়। সেখানে মোর্চার চা বাগান কর্মী ইউনিয়নের নেতা সরণ খাওয়াসের নেতৃত্বে ৩১ জন মোর্চা সমর্থক জিনএলএফে যোগ দেয় বলে দাবি করা হয়েছে। সভা নিয়ে মোর্চা সমর্থকদের ব্যপক ক্ষোভ তৈরি হয়। সভা লাগোয়া এলাকায় মোর্চা সমর্থকরা জড়ো হতে শুরু করলে উত্তেজনা ছড়ায়। তবে র্যাফ ও পুলিশ গোটা এলাকা ঘিরে থাকায় কোনও গণ্ডগোলের ঘটনা ঘটেনি।
বিকালে লংভিউ চা বাগান এলাকায় ফের একটি বৈঠক করে জিএনএলএফ নেতারা। পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন দুপুর ১টা নাগাদ ওই এলাকাতে সভা করার কথা ছিল। কিন্তু গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার পক্ষ থেকে সেখানে পাল্টা সভার প্রস্তুতি শুরু হওয়ায় পুলিশের আবেদনে সাড়া দিয়ে জিএনএলএফ নেতারা বৈঠকের সময় পিছিয়ে দেন। নিমা লামা’র দাবি, গাড়িধূরাতে এদিন মোর্চার ৬১ জন সমর্থক জিএনএলএফে যোগ দিয়েছেন। তিনি বলেন, “মোর্চা নেতৃত্বের দিশাহীন কাজকর্মে সবাই বিভ্রান্ত। পাহাড়ে উন্নয়নের কাজ স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। তাই মোর্চা সমর্থকরা দলে দলে জিএনএলএফে যোগ দিচ্ছেন।” সরণ খাওয়াস বলেন, “মোর্চায় কোনও গণতন্ত্র নেই। নেতারাই সব। তাই জিএনএলএফে যোগ দিয়েছি।”কার্শিয়াংয়ের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক নিমা নরবু ভুটিয়া বলেন, “সব জায়গায় পুলিশের টহল চলছে। কোথাও যাতে গণ্ডগোল না হয়, সে দিকে নজর রাখা হচ্ছে।” |