|
|
|
|
মোরামের বাসস্ট্যান্ডে নেই ছাউনি, শৌচালয় |
দেবমাল্য বাগচি • হলদিয়া |
খোলা আকাশ। গ্রীষ্মে ঝাঁ ঝা রোদ্দুর আর বর্ষায় কাদামাটিতে চলা দায়। পথবাতি নেই। ঝুপড়ি দোকানগুলো বন্ধ হয়ে গেলেই গাঢ় অন্ধকারে ঢেকে যায় চারদিক। গত ৩০ বছর ধরে এমনই দশা হলদিয়া বাসস্ট্যান্ডের। অথচ, শিল্পশহরে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম বাস। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে আড়াইশোর মতো বাস চলাচল করে এই স্ট্যান্ডে। রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা বাম পরিচালিত হলদিয়া পুরসভা পরিকাঠামোর উন্নয়নে আগ্রহ দেখায়নি কোনও দিন। এখন পীতম্বরচকে নতুন করে বাসস্ট্যান্ড তৈরির কথা বলছেন পুর-কর্তৃপক্ষ। কিন্তু গত পাঁচ বছর ধরে পরিকল্পনার স্তরেই আটকে নতুন বাসস্ট্যান্ড। কবে তা বাস্তব রূপ পাবে জানা নেই কারও।
পুরসভার ২৬ নম্বর ওয়ার্ড সংলগ্ন প্রায় পাঁচ হাজার পাঁচশো বর্গমিটার জায়গায় হলদিয়া বাসস্ট্যান্ড। নামেই বাসস্ট্যান্ড। আলোকবাতি, শৌচালয়, যাত্রী প্রতীক্ষালয়, নিদেনপক্ষে ছাউনিকিছুই নেই। এ দিকে টাউনশিপ পর্যন্ত কোনও রেলের লাইন না পৌঁছনোয় (হলদিয়া স্টেশন হাতিবেড়্যায়) বাস পরিষেবা একমাত্র ভরসা এলাকাবাসীর। প্রতি দিন গড়ে প্রায় ৭ হাজার মানুষ যাতায়াত করেন এই বাসস্ট্যান্ড থেকে। |
|
বেহাল হলদিয়া বাসস্ট্যান্ড। ছবি: আরিফ ইকবাল খান। |
পুরনো এই বাসস্ট্যান্ড এখনও মোরামের। খানাখন্দে ভর্তি। স্থানীয় বধূ আলপনা বেরা বলেন, “গরমটা তবু সহ্য করা যায়। কিন্তু বর্ষায় চারিদিকে জলকাদা মাখামাখি হয়ে দুর্বিষহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পথবাতি না থাকায় রাতেও খুব সমস্যা হয়। বিশেষ করে মহিলাদের।” স্থানীয় শিক্ষক সুজন মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “এতগুলো বছরে কোনও কাজ হতে দেখলাম না বাসস্ট্যান্ডে। শৌচাগার নেই, অপেক্ষা করার জায়গা নেই। শিল্পশহর তকমায় বাসস্ট্যান্ডের এই অবস্থা মানায় না।”
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বাসস্ট্যান্ডের জমি বন্দরের। পুরসভা যখন বাসস্ট্যান্ডের দায়িত্ব নেয়, তখন বন্দরের সঙ্গে প্রতি বছর তিন লক্ষ টাকা দেওয়ার চুক্তি করেছিল। উপপুরপ্রধান নারায়ণ প্রামাণিক জানান, পুরসভার গাঁট থেকেই ওই টাকা যায়। পীতাম্বরচকে নতুন বাসস্ট্যান্ড তৈরির পরিকল্পনা করার পর বন্দরকে পুরনো চুক্তি খারিজ করতে বলেছিল পুরসভা। সে কথা আর এগোয়নি। উপপুরপ্রধান নারায়ণবাবু বলেন, “চুক্তি মেনে টাকা দিতে হচ্ছে আমাদের। আবার চুক্তি অনুযায়ী আমরা চাইলেও এই বাসস্ট্যান্ডে কোনও নির্মাণকাজ করতে পারব না। সব দিকেই সমস্যা।”
বন্দরের প্রশাসনিক আধিকারিক অমল দত্তের অবশ্য দাবি, “আমাদের চুক্তিতে লেখা রয়েছে কোনও বড় নির্মাণ করা যাবে না। তবে ন্যূনতম পরিষেবা প্রদানে পরিকাঠামোর উন্নয়নে বাধা নেই। আর আমাদের কাছে পুরসভা কখনও এই বিষয়ে আবেদনও করেননি।” পুরপ্রধান তমালিকা পণ্ডা শেঠ চুক্তির বিতর্কে না গিয়ে বলেন, “আমরা তো মাল্টি-স্পেশালিটি বাসস্ট্যান্ড করতে চেয়েছিলাম। তা না-পারায় চুক্তিটাই খারিজ করতে বলেছি। আর কাজ হবে না। নতুন বাসস্ট্যান্ড হবে পীতম্বরচকে।” |
|
|
|
|
|