বিষাক্ত রাসায়নিকের জেরে ত্রিপুরার ডেও নদীর জল বিষাক্ত হয়ে গিয়েছে। দূষিত জলে নদীর ছোট-বড় অসংখ্য মাছ মৃত অবস্থায় ভেসে উঠছে। বিষক্রিয়ায় মরা মাছ ধরতে নদীর পাড়ে গ্রামবাসীরা ভিড় করছেন। অভিযোগ উঠেছে, উত্তর ত্রিপুরার কাঞ্চনপুর এবং দশদা এলাকায় এই মাছ বাজারে বিক্রি করছে স্থানীয় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। বিষক্রিয়ায় ফলে মরা মাছ খেয়ে ইতিমধ্যে অসুস্থও হয়ে পড়েছেন এলাকার কিছু মানুষ। নদীর জল ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ায় মহকুমার জল সম্পদ বিভাগের নির্দেশে পানীয় জলের স্থানীয় পরিশোধন প্ল্যান্টটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দশদার মহকুমা শাসক মিল্টন রিয়াং জানান, ‘‘বিষক্রিয়ায় নদীর জল দূষিত হওয়ার খবর সংশ্লিষ্ট সমস্ত দফতরকে জানানো হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে স্থানীয় ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট থেকে জল সরবরাহ। পুনরায় পানীয় জল সরবারহের ব্যবস্থা করার জন্য জরুরির ভিত্তিতে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট দূষণমুক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’ কিন্তু দূষিত নদীর জল ব্যবহার করে কত জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন সে বিষয়ে কোনও তথ্য তিনি এখনই দিতে পারেননি।
নদীর জল দূষিত হয়ে পড়ায় কাঞ্চনপুর এলাকায় পানীয় জলের যে সংকট দেখা দিয়েছে, মহকুমা শাসক মিল্টন রিয়াং তা স্বীকার করেছেন। কিন্তু কাঞ্চনপুর, গছিরামপাড়া, পেথারচল এলাকায় পানীয় জল সরবাহের বিকল্প কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে তিনি অবহিত নন। দশদার বিডিও অসিত দাস অবশ্য জানান, ‘‘দুষ্কৃতীরা প্রায় প্রতি বছরই উত্তর ত্রিপুরার ডেও এবং ধলাইয়ের মনু নদীতে বিষাক্ত রাসায়নিক ঢেলে দিয়ে মাছ ধরার চেষ্টা করে।’’ ‘দারিদ্র এবং অশিক্ষার’ কারণেই গ্রামবাসীদের এই অভ্যাস দূর করা যাচ্ছে না, এ কথা জানান জেলার আর এক উচ্চপদস্থ কর্তা। তাঁর মতে, রাজ্যে জনস্বাস্থ্য বিভাগের পরিকাঠামোগত উন্নয়নে বহু ঘাটতি রয়ে গিয়েছে। বিষক্রিয়ায় মৃত মাছ খেয়ে বা নদীর দূষিত জল ব্যবহার করে এলাকার কত জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন সেটা জানার কোনও উপায় নেই। রাজ্য সরকারের তরফে গ্রামীণ এলাকায়, বিশেষ করে উত্তর ত্রিপুরার ধলাই জেলায় গ্রামবাসীদের মধ্যে, ‘সচেতনতা’ বাড়ানোর সে রকম কার্যকর উদ্যোগও নেই। |