পুলিশ লেখা গাড়ির ধাক্কায় মৃত বালক, রণক্ষেত্র দুর্গাপুর
পুলিশের বোর্ড টাঙানো গাড়ির ধাক্কায় এক বালকের মৃত্যুতে ধুন্ধুমার হল দুর্গাপুরে। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বাধল পুলিশের। পুলিশকে লক্ষ করে জনতা ইট-পাটকেল ছোড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়। রবার বুলেট ছোড়া ও লাঠি চালানোর অভিযোগও উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
পুলিশ অবশ্য রবার বুলেট ছোড়া ও লাঠি চালানোর কথা মানেনি। রবিবার রাত পর্যন্ত মৃত বালকের পরিচয় মেলেনি। পুলিশের দাবি, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, গাড়িটি বীরভূম পুলিশ লাইনের। এ ব্যাপারে সবিস্তার খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। যোগাযোগ করা হচ্ছে বীরভূম পুলিশের সঙ্গেও।
দুর্গাপুরে আমরাই গ্রামে পুলিশের এই গাড়িটিই ভাঙচুর করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বিকেল ৩টে নাগাদ ইস্পাতনগরী থেকে পাকা রাস্তা ধরে আমরাই গ্রামে ঢুকছিল গাড়িটি। হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেটি রাস্তার পাশে একটি বন্ধ দোকানে ধাক্কা মারে। তার পাশেই দাঁড়িয়েছিল বছর এগারোর ওই বালক। তার উপর দিয়ে গাড়ির চাকা চলে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার। চালক গাড়ি ঘুরিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে আশপাশের বাসিন্দারা ধাওয়া করেন। বেগতিক বুঝে গাড়ি ফেলে চালক ও অন্য সওয়ারিরা চম্পট দেন।
জনতাকে হঠাতে পুলিশের হাতে কাঁদানে গ্যাসের শেল, বন্দুকও।
খবর ছড়াতেই কয়েকশো মানুষ জড়ো হন। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ‘পুলিশ’ লেখা একটি বোর্ড সাঁটানো ওই গাড়ির চালককে দেখে মনে হয়েছে, তিনি অপ্রকৃতিস্থ অবস্থায় ছিলেন। ক্ষিপ্ত জনতা মৃতদেহ রাস্তায় রেখে বিক্ষোভ শুরু করে। পুলিশের গাড়িই এ ভাবে দুর্ঘটনা ঘটালে নিরাপত্তা কোথায়, এই প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। গাড়িটি ভাঙচুর করে উল্টে দেওয়া হয়। দুর্গাপুর থানা থেকে পুলিশ গেলে গাড়ির চালককে তখনই গ্রেফতারের দাবি জানায় জনতা। এ নিয়ে বচসা বেধে যায়। পুলিশকর্মীরা বাসিন্দাদের বুঝিয়ে মৃতদেহ তোলার চেষ্টা করেন। হঠাৎই জনতার একাংশ পুলিশের উপরে ইট-পাটকেল ছুড়তে শুরু করে। তাতে এ কে চট্টোপাধ্যায় নামে এক পুলিশকর্মী পায়ে চোট পান। এর পরেই লাঠি উঁচিয়ে বিক্ষোভকারীদের তাড়া করে পুলিশ। জনতা খানিকটা ছত্রভঙ্গ হতে দেহ তুলে দুর্গাপুর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
গাড়ি ঘিরে চলছে বিক্ষোভ।
কিন্তু খানিক পরে রিকভারি ভ্যান নিয়ে পুলিশ দুর্ঘটনা ঘটানো গাড়িটি আনতে যেতেই আবার রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় এলাকা। পুলিশের দিকে দফায় দফায় ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের এসিপি এস সিলভান মুরুগানের নেতৃত্বে পুলিশের বড় বাহিনী বিক্ষোভকারীদের তাড়া করে। কাঁদানে গ্যাস, রবার বুলেট ছোড়ে পুলিশ। শেষ পর্যন্ত বিক্ষোভকারীরা এলাকা ছেড়ে পালালে গাড়িটি দুর্গাপুর থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
কমিশনারেটের এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদব অবশ্য বলেন, “বিক্ষোভকারীদের হঠাতে একটি কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানো হয়। তাতেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।” আমরাই এলাকার বাসিন্দা জরিনা বিবি, শেখ সৈয়দদের ক্ষোভ, “মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর জন্য এ ভাবে একটি ছেলেকে মরতে হবে, তা মানা যায় না।” বিক্ষোভকারীদের দাবি, পুলিশের লাঠিতে জনা তিনেক জখম হয়েছেন। পুলিশ জানায়, মৃত বালকের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। পুলিশের উপরে হামলায় রবিবার রাত পর্যন্ত কেউ ধরা পড়েনি।
রবিবার বিকেলে ছবিগুলি তুলেছেন বিশ্বনাথ মশান।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.