|
|
|
|
বাবা জ্ঞান দিয়ো না |
|
কিক বক্সিং করতে পারেন আপনিও
দরকার নেই ট্রেডমিল, সাইক্লিং। একজোড়া গ্লাভস বা
খালি হাতেই হয়ে যাক গোটা দুই বক্স। সঙ্গে কিকও।
পরামর্শ দিচ্ছেন ফিটনেস বিশেষজ্ঞ চিন্ময় রায় |
|
অনেক মহিলা বা অল্পবয়সি মেয়ে জিমে গিয়ে ওজন নিয়ে এক্সারসাইজ করতে চান না। ভয় এই বুঝি ছেলেদের মতো পেশিবহুল চেহারা হয়ে গেল! আবার ট্রেডমিল বা সাইক্লিংয়ের মতো ওয়ার্কআউটেও উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন। কী করবেন এঁরা?
কিক বক্সিং হতে পারে সেই ওয়েলকামিং চেঞ্জ। তবে এটা যেন ভেবে বসবেন না যে জিমে যাওয়ার দরকার নেই। জিমে গিয়েও যেমন করতে পারেন, তেমনি বাড়িতেও করে ফেলতে পারেন কিক বক্সিং।
কিক বক্সিং-এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে হাজারো টেকনিক্যালিটিজ। সে সব নিয়ে নাই বা মাথা ঘামালেন। শারীরিক ফিটনেস যদি বজায় রাখতে চান, তা হলে করে ফেলুন কিক বক্সিং ড্রিল।
কিক করুন সুস্থ থাকুন
যে কোনও খেলার সরঞ্জামের দোকানে গিয়ে কিনে নিতে পারেন একজোড়া বক্সিং গ্লাভস আর একজোড়া মিটস (পাঞ্চিং ব্যাগ)। এ বার একবার বাঁ হাতে, আর একবার ডান হাতে আড়াআড়ি ভাবে ঘুসি মারুন মিটসে। এ বার বাঁ পা এবং ডান পা দিয়ে আড়াআড়ি ভাবে ওই মিটসেই চারটে লাথি মারুন। তবে মিটস থাকলে একজন সঙ্গী থাকাও দরকার। সেই সঙ্গী প্রয়োজন অনুযায়ী মিটসের উচ্চতাকে নিয়ন্ত্রণ করবেন।
এ তো গেল গ্লাভস বা মিটস যাঁদের কাছে আছে তাঁদের কথা। যাঁরা এখনও কেনেননি, তাঁরাও এই ড্রিল করতে পারেন। সেক্ষেত্রে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ঠিক আগের প্রক্রিয়াতেই লাথি-ঘুসি মারতে হবে। প্রথম দিকে এই ড্রিল ৩০ সেকেন্ড করলেই যথেষ্ট। একটু অভ্যস্ত হয়ে গেলে সপ্তাহখানেক পরে সময় বাড়িয়ে নিন এক মিনিটে। এক মিনিট করার পর এক মিনিট বিশ্রাম নিয়ে ৬ থেকে ৮ বার রিপিট করুন।
খেয়াল রাখবেন ড্রিলটা করতে গিয়ে ঘুসি মারার সময় মেরুদণ্ড আর শরীরের মধ্যাংশ যেন টানটান থাকে। আর বেশ এনার্জি নিয়ে ঘুসি চালাবেন। তবেই লাভ।
দৌড় যখন দাঁড়িয়ে
এই ড্রিলটা করার সময় আগের মতোই পর্যায়ক্রমে চারটে ঘুসি আর চারটে লাথি মারুন। এ বার যেখানে আপনি দাঁড়িয়ে আছেন, সেখানে করুন স্পট হাই-নি। ভাবছেন হয়তো এ আবার কী জিনিস! যে জায়গায় আপনি দাঁড়িয়ে, সেখানেই এমন ভঙ্গিমা করুন যেন এক জায়গায় দাঁড়িয়ে দৌড়চ্ছেন। চার বার করতে হবে এই স্পট হাই-নি।
এই ড্রিলটারও সময়সীমা রাখুন ৩০ সেকেন্ড। হয়ে গেলে পাঁচ বার রিপিটও করে নিন। সপ্তাহখানেক বাদে ড্রিলটার সময়সীমা বাড়িয়ে করতে পারেন এক মিনিট।
লাথিতেই ফিটনেস
এই ড্রিলটা করার সময় আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চকিতে বাঁ দিকে ঘুরে শূন্যে দু’টো ঘুসি মারুন। সঙ্গে সঙ্গেই ডান দিকে ঘুরে একই কায়দায় ঘুসি মারুন। পায়ের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা একই ভাবে করতে হবে। একবার বাঁ পা দিয়ে মারার পরেই ডান পা দিয়ে পাশাপাশি মোট চারটে লাথি মারতে হবে।
এই ড্রিলটা কিন্তু আগের ড্রিলের চেয়ে কিছুটা কঠিন কারণ এটা করতে গেলে কুঁচকির অংশের পেশির নমনীয়তা থাকাটা খুব দরকার। যদি সেই নমনীয়তা আপনার না থাকে তা হলে এড়িয়ে যান ড্রিলটা। আগেরগুলোর মতোই এই ড্রিলটাও ৩০ সেকেন্ড থেকে ১ মিনিট করলেই যথেষ্ট। একবার করার পর পাঁচ বার রিপিট করবেন।
ঘুসোঘুসি
এই ড্রিলটা করার সময় পর্যায়ক্রমে ডান এবং বাঁ হাত দিয়ে আড়াআড়ি ভাবে একনাগাড়ে ১০০টি ঘুসি ছোড়ার ভঙ্গি করুন। সপ্তাহদু’য়েক বাদে চেষ্টা করুন ১০০র জায়গায় ২০০টি ঘুসি ছুড়তে। ২ মিনিট বিশ্রাম নিয়ে রিপিট করুন ৩ বার। শুরুতে হয়তো বেশ কঠিন লাগবে। অভ্যেস হয়ে গেলে বেশ এনজয় করবেন ব্যাপারটা।
কিক বক্সিং ড্রিলগুলো করতে সপ্তাহে ৪ থেকে ৫ দিনই যথেষ্ট। তবে ১ দিনে ৩টের বেশি ড্রিল কখনওই করবেন না।
কেন করবেন
অনেকেই আছেন যাঁরা এখনও নিত্যদিনের দৌড়ঝাঁপের রুটিনের বাইরে নিজেদের বের করতে পারেননি। বা আরও নানা ধরনের ওয়ার্কআউট করে চেহারা বদলাতে চান, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান। এঁদের উদ্দেশে বলা যে দৌড়ঝাঁপের ব্যায়াম না করে কিক বক্সিং-এ বেশি মনোযোগ দিন। বেশি মাত্রায় ক্যালোরি ঝরাতে পারবেন।
রাগ বা ক্ষোভজনিত স্ট্রেস কাটাতে কিংবা মনোসংযোগ বাড়াতেও কিক বক্সিং-এর জুড়ি মেলা ভার। কিক করার সময় পায়ের হ্যামস্ট্রিং পেশি শুধু দীর্ঘায়িতই হয় না, নমনীয়তাও বাড়ে। আপনি যদি শরীরের নীচের অংশকে সবল করতে চান, কোর পেশিকেও মজবুত করতে চান, তা হলে তো আপনাকে কিক বক্সিং করতেই হবে।
কিক বক্সিং-এর সম্ভারে রয়েছে হাজারো বৈচিত্রময় ড্রিল। প্রত্যেকটা ড্রিল আলাদা আলাদা। তাই ওয়ার্কআউট করতে গিয়ে একঘেয়ে লাগার কোনও গল্পই নেই।
দেখলেন তো, কিক বক্সিং কত রকম ভাবে উপকার করতে পারে আপনার। একবার করেই দেখুন না! রেজাল্ট এক্কেবারে হাতের মুঠোয়।
|
|
|
|
|
|