শীত পড়তেই দুপুর থেকে প্রতিদিন দুপুর থেকে জমে উঠছে রানিগঞ্জ বইমেলা। ২৪ ডিসেম্বর মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সাহিত্যিক আবুল বাশার। মেলা চলবে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। উদ্যোক্তারা জানান, এ বার তেইশ বছরে পা রাখল মেলা। প্রায় তেত্রিশটি স্টল নিয়ে মেলায় বই বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।
রানিগঞ্জ সাংস্কৃতিক সমন্বয় কমিটির উদ্যোগে তেইশ বছর আগে সীতারামজি ভবনে পা দিল রানিগঞ্জ মেলা। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সঙ্ঘ, রানিগঞ্জ পুরসভা ও পঞ্চায়েত সমিতি।
গত বছর তৃণমূলের বিধায়ক সোহরাব আলির নেতৃত্বে গঠিত মেলা কমিটির উদ্যোগে চিনকুড়ি মাঠে এই মেলা হয়। সাহায্য করেছিল ‘মাল্টি-ল্যাঙ্গুয়াল কালচারাল ফোরাম’। তবে এক বছর পরে নতুন তৈরি হওয়া বইমেলা কমিটির উদ্যোগে মেলা শুরু হয়েছে রেলের মাঠে। পাশে রয়েছে রানিগঞ্জ পুরসভা। সিপিএমের পুরপ্রধান অনুপ মিত্র জানান, ২৩ বছর আগে সীতারামজি ভবন, তার পর রেল ময়দান, পরে বাসস্ট্যান্ডে মেলা হয়েছে। পরে বেশ কয়েক বছর মেলা হয়েছে চিনকুড়ি ময়দানে। তবে অন্য এলাকার মানুষজনকে বেশি করে সামিল করার উদ্দেশ্যেই এ বারের মেলা হচ্ছে রেল মাঠে।
এ বারের মেলায় ঢেলে বিকোচ্ছে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতার বই ও কিশোর সমগ্র। বিক্রেতারা জানান, ফেলুদা-ব্যোমকেশও ভাল বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজার বেশি রমরমা কাকাবাবুর। এমনই দাবি, স্থানীয় লেখক বিপ্রদাস চট্টোপাধ্যায়ের। সুনীলের বইয়ের পাশাপাশি চাহিদা রয়েছে শঙ্কর ও আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের গল্পের। |
এক প্রকাশনা সংস্থার কর্মী চন্দ্রিকা রায় আবার জানাচ্ছেন, ছোটদের গল্প, কার্টুন বা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার বই বিক্রির সংখ্যাই তুলনায় বেশি। বিক্রি দেখে খুশি তাঁরা। এই মেলার যুগ্ম সম্পাদক বরুণ দত্ত জানান, টিকিট কেটে বইমেলায় আসছেন মানুষ। প্রতিদিনের ভিড় দেখে তাঁদের উৎসাহ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে।
শুধু বই কেনাকাটা নয়, প্রতি দিন দুপুরেই মেলায় আয়োজন করা হচ্ছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। গানবাজনা থেকে শুরু করে প্রতিযোগিতাতেও যোগ দিচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এবং বিকালে স্থানীয় শিল্পীদের গান ও সন্ধ্যায় প্রখ্যাত শিল্পীদের নৃত্য বা গানের আসর বসছে। প্রথম দু’দিন রবীন্দ্রনৃত্য, নজরুলগীতি ও আঁকা প্রতিযোগিতার সঙ্গে সঙ্গে গান গেয়েছেন স্থানীয় শিল্পীরা। পরের তিন দিন অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করেন দেবেশ ঠাকুর, ও সঙ্গীত পরিবেশন করেন শুভপ্রসাদ নন্দী মজুমদার, অনল চট্টোপাধ্যায় এবং অভিজিৎ ঘোষ। আজ, ২৯ ডিসেম্বর দুপুরে রয়েছে ঊর্দু ভাষার প্রতিযোগিতা। প্রতিদিন বিকেলে থাকছে মালদহের পুতুল নাচ। শেষ দিন, রবিবার দুপুরে হিন্দি এবং ইংরেজি ও আদিবাসী ভাষা মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা হবে। অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ পুরুলিয়ার ছৌ নাচ। |