কৃষকসভার জেলা সম্মেলন
কিষাণ মান্ডি কোথায় হল, প্রশ্ন সূর্যকান্তের
তুন সরকার চাষিদের জন্য ১৯ মাসে কিছুই করেনি বলে অভিযোগ তুললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। শুক্রবার পানাগড়ে কৃষকসভার বর্ধমান জেলা সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় কৃষি থেকে শিল্প, সব ব্যাপারেই রাজ্য সরকারের নীতির সমালোচনা করেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, “খাদ্যের ব্যাপারে রাজ্য স্বয়ম্ভর হয়ে উঠেছিল। কিন্তু নতুন সরকার যে ভাবে এগোচ্ছে তাতে অচিরেই হয়তো আমাদের সেই জায়গা হারাতে হবে।”
শুক্রবার থেকে শুরু হল কৃষকসভার এই সম্মেলন। চলবে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এ দিন প্রকাশ্য সমাবেশে মুখ্য বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সূর্যকান্তবাবু। তিনি অভিযোগ করেন, বামফ্রন্ট সরকারের আমলে ১১ লক্ষ একর জমি বিলি করা হয়েছিল। কিন্তু এই সরকার ক্ষমতায় আসার পরে এক ছটাক জমিও বিলি করতে পারেনি। তাঁর কথায়, “কিষাণ মান্ডি করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত একটিও হয়নি। বারবার মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করার পরে জানলাম, টেন্ডার হয়েছে। কিন্তু তার পরে কী হল, কেউ জানে না।”
সূর্যকান্তবাবু জানান, বাম সরকারের আমলে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসলের ক্ষতি হলে চাষিদের জন্য শস্যবিমার ব্যবস্থা করেছিল। তিনি অভিযোগ করেন, নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পরে সেই বিমা বাতিল করে জানায়, শুধু প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তরেই নন, চাষি ফসলের সঠিক দাম না পেলেও তা পুষিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হবে নতুন বিমায়। কিন্তু তা আর চালু হয়নি। তাঁর দাবি, “এক দিকে কৃষকদের আত্মহত্যার মিছিল চলছে। অন্য দিকে বর্গাদার উচ্ছেদ, পাট্টা কেড়ে নেওয়ার চক্রান্ত চলছে। কৃষকদের ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে।”
শীতের দুপুরে সভার পথে।—নিজস্ব চিত্র।
শিল্পের জন্য জমির প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারের নীতির সমালোচনাও করেন সূর্যকান্তবাবু। তিনি জানান, সরকার চায়, সংস্থাকে সরাসরি জমি কিনতে হবে জমি মালিকদের কাছ থেকে। কিন্তু এর ফলে দালালদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে। আখেরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন চাষিরা। তাঁর কথায়, “বর্তমান সরকার বলছে চাষির ইচ্ছের বিরুদ্ধে এক ছটাক জমিও নেব না। এতে হাত শক্ত হচ্ছে দালালদের। নতুন সরকার শিল্প চায় না। তারা চায় চাষির ছেলে চাষিই থাকুক, কষ্টে থাকুক। কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নেই।”
মিত্র সঙ্ঘ মাঠে এ দিনের জনসভায় ভিড় দেখে সূর্যকান্তবাবুর মন্তব্য, “৪১ শতাংশ ভোট পেয়ে বামপন্থীরা বিরোধী আসনে বসেছে। সরকারে না থাকলেও মানুষ যে পাশে আছেন এই জমায়েতই তাঁর প্রমাণ।” সভায় ছিলেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক অমল হালদার, বিধানসভার প্রাক্তন মুখ্য সচেতক সিপিএমের মহম্মদ মসীহ, জেলা কৃষকসভার সভাপতি অচিন্ত্য মল্লিক প্রমুখ। জেলার নানা প্রান্ত থেকে বাস, ম্যাটাডরে করে সদস্য-সমর্থকেরা এসেছিলেন জনসভায়। এমনিতেই পানাগড়ে জাতীয় সড়কে যানজট নিত্যদিনের ব্যাপার। তার উপরে এ দিনের জনসভার জন্য সমস্যা আরও বাড়ে। পুলিশের পাশাপাশি যান নিয়ন্ত্রণে নেমেছিলেন কৃষকসভার স্বেচ্ছাসেবকরাও। কিন্তু তার পরেও কিছু সময়ের জন্য অ্যাম্বুল্যান্স আটকে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে বলে তৃণমূলের পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়েছে।
সূর্যকান্তবাবুর অভিযোগ প্রসঙ্গে রাজ্যের প্রদেশ তৃণমূল সদস্য, কাঁকসার বাসিন্দা দেবদাস বক্সীর বক্তব্য, “চাষিদের জন্য এই সরকার কিছু করছে কি না, তা মানুষ পঞ্চায়েত ভোটেই বুঝিয়ে দেবেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.