ভাঙা হাতের অস্ত্রোপচারে গিয়ে প্রাণ গেল বালিকার
ভাঙা হাত সারাতে এসে মৃত্যু হল ১১ বছরের এক বালিকার।
চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন মৃতার পরিজনেরা। সেই অভিযোগ ঘিরে বুধবার তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয় মধ্য হাওড়ার নেতাজি সুভাষ রোডের এক নার্সিংহোমে। পুলিশ জানায়, মৃতার পরিজন ও এলাকার বাসিন্দারা নার্সিংহোমে ঢুকে অভিযুক্ত চিকিৎসককে মারধর করেন। ভাঙচুর হয় একটি মোটরবাইক। ভাঙচুরের চেষ্টা হয় নার্সিংহোমের ভিতরেও। দুপুর ১২টা থেকে চিকিৎসককে গ্রেফতারের দাবিতে দফায় দফায় রাস্তা অবরোধ হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে র্যাফ ও কমব্যাট ফোর্স নামাতে হয়। বিক্ষোভ চলে বিকেল পর্যন্ত। মৃতার বাড়ির লোকজন অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
তৃষ্ণা রায়
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছরের গোড়ার দিকে সাইকেল থেকে পড়ে বাঁ হাতের হাড় ভেঙে গিয়েছিল হাওড়ার সাঁতরাগাছির বাসিন্দা তৃষ্ণা রায় নামে ষষ্ঠ শ্রেণির ওই বালিকার। তার হাতে অস্ত্রোপচার করে স্টিলের প্লেট লাগিয়ে দেন অর্থোপেডিক চিকিৎসক শুভাশিস সাধুখা। ঠিক ছিল, বুধবার ফের অস্ত্রোপচার করে প্লেটটি বার করা হবে। তা করবেন ওই চিকিৎসকই। পুলিশ জানায়, এ দিন সকাল ৬টা থেকে অস্ত্রোপচার শুরু হয়। ৯টা নাগাদ ওই চিকিৎসক অপারেশন থিয়েটার থেকে বেরিয়ে রোগীর আত্মীয়দের জানান, তৃষ্ণাকে অজ্ঞান করার ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। তাকে অবিলম্বে আইসিসিইউ আছে, এমন কোনও নার্সিংহোমে নিতে হবে। কারণ, যে নার্সিংহোমে অপারেশন হচ্ছিল, সেখানে আইসিসিইউ ছিল না। পুলিশ জানায়, এর পরে ওই চিকিৎসকই নিজেই তৃষ্ণাকে মধ্য হাওড়ার একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যান। সেখানে পৌঁছনোর কিছুক্ষণ পরেই ওই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ বালিকাটিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এই খবর পেয়েই ক্ষোভে ফেটে পড়েন মৃতার বাড়ির লোকজন। নার্সিহোমটির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মোটারবাইক ভাঙচুর করা হয়। কিল-চড়-ঘুষি মারা হয় ওই চিকিৎসককে। এর পরে তাঁকে গ্রেফতারের দাবিতে শুরু হয় পথ অবরোধ। খবর পেয়ে বিশাল পুলিশবাহিনী আসে। এ দিন মধ্য হাওড়ার ওই নার্সিংহোমের সামনে দাঁড়িয়ে মৃত বালিকার বাবা দেবদাস রায় বলেন, “ওই চিকিৎসক ১২০০ টাকা বেশি আয় করবেন বলে অ্যানাস্থেটিস্ট না এনে নিজেই ইঞ্জেকশন দিয়ে অজ্ঞান করতে যান। এ ভাবেই আমার মেয়েকে মেরে ফেললেন।”
শুভাশিস সাধুখাঁ নামে অভিযুক্ত ওই চিকিৎসক স্বীকার করেন, তিনি নিজেই রোগীকে অজ্ঞান করতে যান। কোনও বিশেষজ্ঞকে সঙ্গে নেননি। তিনি বলেন, “অজ্ঞান করার ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরেই ও অসুস্থ হয়ে পড়ে। অন্য নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়ে বাঁচানোর চেষ্টা করি। কিন্তু বাঁচানো গেল না।”
হাওড়ার সিটি পুলিশের ডিসি (সদর) নিশাত পারভেজ বলেন, “ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। মৃতদেহটি ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.