বাড়ছে দুষ্কৃতী-আনাগোনা, ডাকাতি, গরু পাচার, আগ্নেয়াস্ত্রর রমরমা
নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বসিরহাট
নুপ্রবেশের হাত ধরে অপরাধ বাড়ছে বসিরহাটে। পাচার ও অনুপ্রবেশের কারণে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে এই সীমান্ত এলাকা বার বারই উঠে এসেছে শিরোনামে। পুলিশ এবং বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত এক মাসে বসিরহাট সীমান্ত দিয়ে অবৈধ ভাবে অনুপ্রবেশের জন্য শতাধিক বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র ও মাদক। গ্রেফতার হয়েছে বেশ কিছু গরু পাচারকারী। আটক করা হয়েছে প্রচুর গরু। কিন্তু তার পরেও অপরাধমূলক কাজকর্ম কমার লক্ষণ নেই।
সম্প্রতি বসিরহাটের গোপালপুর মোড়ের কাছে রাহারহাটিতে একটি পেট্রোল পাম্পে ডাকাতি হয়। ডাকাতির সময় পাম্পের কর্মী দেবব্রত বসুর মাথায় ভোজালির কোপ মারা হয়। দুষ্কৃতীদের ছোড়া বোমায় আহত হন দু’জন। তদন্তে নেমে পুলিশ দেগঙ্গার হাদিপুর থেকে এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে। ট্যাঁটরার মুনলাইটপাড়ায় নারায়ণ সিংহ নামে এক স্বর্ণব্যবসায়ীর বাড়িতে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। জখম হন নারায়ণবাবু ও তাঁর ছেলে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে ফের পিঁফা বাজারে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর দোকানে বড় সড় ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি নেপালের জেল থেকে পালানো বাংলাদেশি দুষ্কৃতী সুব্রত বাইনকে কলকাতার বৌবাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সুব্রতকে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, হাড়োয়ার ভবানীপুরে এক ব্যক্তির বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল সে। তদন্তে নেমে হাড়োয়ার একটি মেছোভেড়ি থেকে ওই ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, জেরায় প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগে বাংলাদেশ থেকে এ দেশে এসে কলকাতার লেকটাউনে আশ্রয় নিয়েছিল সুব্রত ওরফে মহম্মদ আলি। ২০০৫- ’০৬ সালে জাল নোট-সহ একবার পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিল সুব্রত। ওই সময় স্বামীকে ছাড়াতে সুব্রতর স্ত্রী হাড়োয়ার ওই ব্যক্তির সাহায্য নিয়েছিল বলে পুলিশের দাবি।
বিভিন্ন ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা দেশে অপরাধমূলক কাজ করে এ দেশে পালিয়ে এসে হাড়োয়া-সহ বসিরহাট মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকায় ঘাঁটি গেড়েছে। মাঝেমধ্যে তারাই ডাকাতি-সহ ব্যবসায়ীদের ভয় দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা তোলা আদায় করছে। পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, “গরু পাচারকারীদের সঙ্গে বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা এ পারে চলে আসছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। তাদের ধরতে বিশেষ একটি দল সীমান্ত এলাকায় তল্লাশি শুরু করেছে।” তবে মহকুমায় গরু পাচার-সহ অন্যান্য অপরাধ বাড়ার প্রসঙ্গে পুলিশের বক্তব্য, প্রায় ২৬৭ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে বসিরহাট থানা। সাড়ে চার লাখের উপর জনসংখ্যা। ১৬টি পঞ্চায়েত এবং একটি পুরসভা ছাড়াও রয়েছে বাংলাদেশ সীমান্ত। এই অবস্থায় দিন দিন অপরাধের ধরন বদলে যাওয়া এবং দুষ্কৃতীদের সংখ্যা বাড়লেও সেই অনুপাতে বাড়েনি পুলিশকর্মীর সংখ্যা। ঘাটতি রয়েছে পরিকাঠামোয়।
আধুনিক প্রযুক্তি ছাড়া মাত্র তিনটি গাড়ি ও ২৫ জন পুলিশকর্মী নিয়ে এই বিশাল এলাকায় অপরাধ সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে বসিরহাট থানার কার্যত যে ‘ঢাল তরোয়ালহীন নিধিরাম সর্দার’-এর অবস্থা, এলাকায় বাড়তে থাকা অপরাধই তার প্রমাণ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.