|
|
|
|
বিষের প্রভাব কাটেনি তিস্তায় |
নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
৩৬ ঘণ্টা কেটে গেলেও বিষের প্রভাব কমেনি তিস্তা নদীতে। বুধবার সকাল, দুপুর এবং বিকেলেও তিস্তার জলে মৃত মাছ ভেসে উঠেছে। কিছু মাছ খাবি খেয়ে পাড়ে আছড়ে পড়েছে। অবশ্য মঙ্গলবারের তুলনায় মৃত মাছের পরিমাণ অনেক কম ছিল। কিছু মাছ তুলে নিয়ে নদীর অন্য অংশে ছেড়ে দিয়েছে মৎস্য দফতর। নদীতে বিষের প্রভাব থেকে যাওয়ায় আগামী কিছু দিনও স্থানীয় বাজারে বিক্রি হওয়া মাছ কেনার সময় সর্তক থাকার পরামর্শ দিয়েছে মৎস্য দফতর। মঙ্গল এবং বুধবার দু’দিনই তিস্তা নদীতে মাছ ধরেছে স্থানীয় মৎস্যজীবীরা। সে মাছেও বিষের প্রভাব থাকতেই পারে বলে মনে করছে মৎস্য দফতর। মাছ রান্নার আগে ভাল করে একাধিকবার নুন জলে ধুয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে দফতর। |
তিস্তার জল পরীক্ষা করছে বিশেষজ্ঞ দল। ছবি: সন্দীপ পাল।
|
এদিন সকালে মৎস্য দফতরের আধিকারিক এবং কর্মীরা এসে তিস্তার জলের নমুনা পরীক্ষা করে জানতে পেরেছেন, ১ নম্বর ‘স্পার’ ঘেঁষা যে এলাকায় গত মঙ্গলবার সকাল থেকে মৃত মাছ ভেসে ওঠা শুরু হয়েছে। সেখানে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ নদীর অন্য অংশের তুলনায় অনেকটাই কম। তিস্তা নদীতে বিষকাণ্ডের পরে মৎস্য মন্ত্রীর নির্দেশে এদিন জলপাইগুড়িতে এসেছেন দফতরের যুগ্ম অধিকর্তা তিমিরবরণ মণ্ডল। তিনি বলেন, “যে এলাকায় মৃত মাছ ভেসে উঠেছিল, বিষের প্রভাব পুরোপুরি কাটেনি বলেই অক্সিজেনের পরিমাণ বুধবারেও কম ছিল। এ দিনও বেশ কিছু মাছকে নিস্তেজ হয়ে ভেসে বেড়াতে দেখা গিয়েছে।” শীতের সময় তিস্তা নদীর বেশির ভাগ অংশেই চড়া পড়ে গিয়েছে। নদী সরু হয়ে পাড়ের কাছে সরে এসেছে। নদীতে যেখানে জল রয়েছে, সেখানে স্রোত প্রায় নেই বললেই চলে। এই বিষের প্রভাব কাটতে আরও সময় লাগবে বলে করছে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদও। মঙ্গলবারই পর্ষদের তরফেও মৃত মাছ এবং জলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে পর্ষদ জানিয়েছে, বেশি বিষ প্রয়োগ করার কারণে মাছের মড়ক হয়েছে। পর্ষদের চেয়ারম্যান বিনয়কান্তি দত্ত বলেন, “কী ধরনের বিষ তিস্তায় মেশানো হয়েছিল, তা পরীক্ষা করে জানা সম্ভব হবে। বিষ প্রয়োগ করে মাছ ধরার প্রবণতা বন্ধ করা না গেলে এমন ঘটনা ঘটতে থাকবে।”
নদীতে বিষ ঢালল কে? প্রাথমিক তদন্তে প্রশাসনের সন্দেহ, জলপাইগুড়ি লাগোয়া এলাকার কিছু ব্যক্তি ওই ঘটনায় জড়িত। কারণ, মৃত মাছের বেশির ভাগই শহর লাগোয়া ওই বাজারে গিয়েছিল বলে জানতে পেরেছে মৎস্য দফতরও। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মঙ্গলবার ট্রেকারে কিছু লোক এক নম্বর স্পার এলাকায় ঘোরাঘুরি করেন। সেই সময়ে বিষ ঢেলে মাছ ধরে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। জেলা মৎস্য আধিকারিক পার্থপ্রতিম দাস বলেন, “শীতকালে বিষ দিয়ে মাছ মারার ঘটনা জেলায় প্রায় রুটিন। এ বারে বিষের মাত্রা বেশি হওয়ায় মড়ক শুরু হয়ে যায়।”
|
পাঁচ পরামর্শ
• মাছের কানকো তুলে চকচকে লাল বা স্বাভাবিক ঔজ্জ্বল্য আছে কি না দেখুন।
• রান্নার আগে মাছের ফুলকা ফেলে দিন।
• মাছের চোখ ফ্যাকাশে থাকলে মাছ কিনবেন না।
• পাখনার অংশ ভাঙা থাকলে মাছ না কেনাই ভাল।
• সাধারণ নুন জলে গুলে তাতে ভাল ভাবে অন্তত দু’বার ধুয়ে মাছ রান্না করুন। |
|
|
|
|
|
|