সরিয়ে দেওয়া হল মেয়র পারিষদকে
বেআইনি বাণিজ্যিক নির্মাণ ভাঙা নিয়ে গড়িমসি ও লেনদেনের অভিযোগকে ঘিরে শহর জুড়ে যখন বিতর্ক চলছে, সেই সময়ে মেয়র পারিষদ (বিল্ডিং) সীমা সাহাকে সরিয়ে দেওয়া হল। শনিবার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত এক নির্দেশে সীমা দেবীকে তাঁর ট্রেড লাইসেন্স বিভাগে সরিয়ে দিয়েছেন।
বিল্ডিং বিভাগের দায়িত্ব পেয়েছেন সঞ্জয় পাঠক। তিনি ছিলেন বস্তি উন্নয়ন বিভাগের মেয়র পারিষদ। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন ট্রেড লাইসেন্স বিভাগের মেয়র পারিষদ দেবশঙ্কর সাহা। অবৈধ বাণিজ্যিক নির্মাণ নিয়ে ওঠা বিস্তর অভিযোগ আপাতত ধামাচাপা দিতেই ‘মুখরক্ষার উপায়’ হিসেবে ওই রদবদল করে হয়েছে বলে পুরসভার অন্দরেই অভিযোগ উঠেছে। সিপিএম তো বটেই, তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকেও মেয়র পারিষদ রদবদলের ‘প্রকৃত উদ্দেশ্য’ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে।
যেমন পূর্ত বিভাগের মেয়র পারিষদ তথা তৃণমূল কংগ্রেসের দার্জিলিং জেলার মহাসচিব কৃষ্ণ পাল দাবি করেছেন, “বিল্ডিং বিভাগের দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগ যে সত্যি তা রদবদলে প্রমাণিত হল।” তাঁর অভিযোগ, “কংগ্রেসের ওই মেয়র পারিষদরা নিজেদের দফতর সামলাতে পারেননি বলে অনেক অভিযোগ রয়েছে। এখন ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে তাঁদেরই দায়িত্ব দেওয়া হল। এর প্রকৃত উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। তবে মেয়র পারিষদরা কাজ করে দেখালে রদবদল বিশ্বাসযোগ্য হবে।”
সিপিএমের বিরোধী দলনেতা মুন্সি নুরুল ইসলামের অভিযোগ, অবৈধ বাণিজ্যিক নির্মাণ নিয়ে হইচই থেকে দৃষ্টি ঘোরাতেই এই রদবদল। তাঁর অভিযোগ, “শুধু বিল্ডিং বিভাগের মেয়র পারিষদ নন, পুরবোর্ড সামগ্রিক ভাবে কাজ করতে পারছে না। মেয়র পারিষদ, বোর্ড মিটিংয়েই তো অবৈধ নির্মাণের নকশা অনুমোদন হচ্ছে। বাসিন্দারা সবই বুঝতে পারছেন। পুরবোর্ড মুখরক্ষার উপায় খুঁজলেও বাসিন্দারা অনেকেই তা ধরে ফেলেছেন। আগামী দিনে বাসিন্দারা এর যোগ্য জবাব দিতে তৈরি হচ্ছেন।”
তবে মেয়র অবশ্য মনে করেন, তিনি সব দিক ভেবেই রদবদল করেছেন। তিনি বলেন, “আমি প্রয়োজন মনে করলে মেয়র পারিষদদের দায়িত্ব বদল করতে পারি। দলের সঙ্গে আলোচনা করে ওই পরিবর্তন করেছি। ওই দফতরগুলির কাজ যাতে আরও ভাল হয় সে জন্যই এই পরিবর্তন করা হল।” তা হলে দলের কাউন্সিলরদের একাংশ, খোদ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব পর্যন্ত বিল্ডিং বিভাগের দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছিলেন। সে জন্যই মেয়র পারিষদকে সরাতে বাধ্য হল কংগ্রেস? এ ব্যাপারে দলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি শঙ্কর মালাকার বলেন, “বিল্ডিং বিভাগ নিয়ে নানা ধরনের প্রশ্ন ওঠায় সীমা দেবীও ওই পদে থাকতে চাইছিলেন না। দলও পরিবর্তন চাইছিল। তাই মেয়র পরিবর্তন করেছেন।”
পক্ষান্তরে, সীমা দেবী বলেছেন, “আমি ওই বিভাগে কাজ করছিলাম। বেআইনি বাণিজ্যিক নির্মাণ ভাঙার কাজও শুরু করেছিলাম। যেগুলো ভাঙা হয়নি তা ভেঙে দেব বলে অনড় ছিলাম। তবে দলের নির্দেস মেনে নতুন দায়িত্ব নিচ্ছি।” পাশাপাশি, সীমা দেবী জানিয়েছেন, বিনা নকশায় শেঠ শ্রীলাল মার্কেটে আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের ভবনে বাণিজ্যিক কেন্দ্র তৈরি সহ ১১টি নির্মাণ কাজ নিয়ে অভিযোগ প্রাথমিক ভাবে প্রমাণিত হয়েছে। বিল্ডিং বিভাগের নতুন মেয়র পারিষদ সঞ্জয় পাঠক দ্রুত সেই কাজ করবেন বলে সীমা দেবীর আশা। ঘটনা হল, সঞ্জয়বাবু জানিয়েছেন, তিনি বস্তি উন্নয়ন বিভাগে থাকতে চেয়েছিলেন। সঞ্জয়বাবু বলেন, “আগামী ১৫ দিন পুরনো বিভাগেই থাকব। দেবশঙ্করবাবুকে বস্তি উন্নয়ন বিভাগের কাজকর্ম বুঝিয়ে দেব।” অর্থাৎ আপাতত বেআইনি নির্মাণ ভাঙার ফাইল ‘ঠাণ্ডাঘরে’ যাচ্ছে বলে পুরকর্মীদের একাংশ মনে করছেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.