তোলা আদায়ের প্রতিবাদ করায় জমজমাট বাজারে মধ্যেই এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে, গুলি করে খুন করেছিল দুষ্কৃতীরা। ২০১১ সালের ৮ মে-র ওই ঘটনায় ধৃত পাঁচ জনের শনিবার যাবজ্জীবন কারাদন্ডে র কায় দিয়েছেন মালদহ জেলা ও দায়রা বিচারক সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায়।
ওই ঘটনায় অভিযুক্ত কার্তিক দাস, বিল্টু ভট্টাচার্য, শিবু কাহার, রাজু রবিদাস ও গৌতম জোয়ারদারের যাবজ্জীবন হলেও অন্য অভিযুক্ত বাবুন সরকার বেকসুর খালাস পেয়েছেন। এ দিন রায় শুনে আদালতের মধ্যেই কান্নায় ভেঙে পড়েন সাজাপ্রাপ্তদের বাড়ির লোক। অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবি অবনী দত্ত বলেন, “ওই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন করা হবে।” |
গত মে মাসে, স্থানীয় মাছের আড়তদার পরিতোষ দে ভরা বাজারের মধ্যেই খুন হয়েছিলেন। এলাকায় প্রতিবাদী চরিত্র হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। এলাকায় তোলাবাজির বিরুদ্ধে কিছু দিন ধরেই সরব হয়েছিলেন তিনি। ওই খুনের পরে ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা সম্মিলিত প্রতিবাদে নামেন। চার দিন বালুরঘাটে ব্যবসা বন্ধ পালিত হয়। পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকায় বাসিন্দাদের ক্ষোভের কথা মহাকরণেও পৌঁছয়। পুলিশ অভিযুক্ত ৮ জনকে গ্রেফতার করে তিন মাসের মধ্যেই চার্জশিট দিয়েছিল। কিন্তু, কোনও আইনজীবী পাওয়া যায়নি। এ কথা জানিয়ে অভিযুক্তরা মামলা স্থানান্তরের জন্য কলকাতার উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন। মামলাটি শেষ পর্যন্ত মালদহ জেলা আদালতে পাঠায় উচ্চ আদালত।
শুক্রবার বিচারক ওই ৫ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে ছিলেন। সে খবর চাউর হতেই এ দিন বালুরঘাটের ওই বাজার এলাকায় উত্তেজনা ছড়ানোর আশঙ্কায় কমব্যাট ফোর্স মোতায়েন করা হয়। বালুরঘাটের অনেক কৌতুহলী বাসিন্দাকে মালদহ আদালতেও ভিড় করতে দেখা যায়।
পাশাপাশি, বালুরঘাটে পরিতোষবাবুর বাড়িতেও সকাল থেকে ছিল ভিড়। দুপুরে রায় ঘোষণার খবর পান নিহত ব্যবসায়ীর স্ত্রী সুপর্ণাদেবী। আবেগে, ছেলেকে জড়িয়ে ধরে তিনি বলেন, “মানুষ আমাদের পাশে ছিল।” বালুরঘাট ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক হরেরাম সাহাও রায় শোনার পরে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, “এই রায়ে আদালতের উপর মানুষের আস্থা বাড়ল।” |