আঁধার পেরিয়ে আশার আলো। প্রত্যাশা ছাপিয়ে নভেম্বরে সার্বিক মূল্যবৃদ্ধি অনেকটা নীচে নেমে আসায় সেটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞ ও শিল্পোদ্যোগীরা।
একগুঁয়ে মূল্যবৃদ্ধির হার বেশ কিছু দিন যাবৎ মানুষের দৈনন্দিন খরচের বোঝা বাড়িয়ে ও শিল্প বৃদ্ধিকে টেনে নামিয়ে এ বার কমার মুখ নিল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের ধারণা পাইকারি মূল্য সূচকের ভিত্তিতে হিসাব করা এই হার ৭.২৪ শতাংশে নামায় অন্তত জানুয়ারি থেকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ কমানোর পথেই হাঁটবে। প্রসঙ্গত, মূল্যবৃদ্ধি কমলেও, ১৮ ডিসেম্বরের ঋণনীতিতে সুদ কমানোর সম্ভাবনা যে প্রায় নেই, তা স্পষ্ট করে দিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তবে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা সি রঙ্গরাজন সম্প্রতি মন্তব্য করেন, মূল্যবৃদ্ধি কমতে থাকলে জানুয়ারির ঋণনীতিতে সুদ কমানোর পথেই হাঁটতে পারে শীর্ষ ব্যাঙ্ক। একই ভাবে রুপোলি রেখা দেখছে শিল্পমহল ও শেয়ার বাজার। |
সিঙ্গাপুরে ক্রেডিট সুইস আর্থিক সংস্থার অর্থনীতিবিদ রবার্ট প্রায়র-ওয়ান্ডসফোর্ড বলেছেন, “একই সপ্তাহে দ্বিতীয় বার (শিল্পোৎপাদন ৮.২% বাড়ার পর) অবাক করা ভাল খবর। অর্থনীতি যে মূল্যবৃদ্ধি কমার বৃত্তে প্রবেশ করতে চলেছে, এটাই তার প্রথম লক্ষণ। এর অপেক্ষাতেই ছিলাম। মনে হয় এই হার ফেব্রুয়ারিতে নামবে ৭ শতাংশের নীচে, ২০১৩-র মাঝামাঝি ৬ শতাংশের নীচে। ফলে শুধু জানুয়ারি নয়, দফায় দফায় সুদ কমাতে সম্ভবত অসুবিধা হবে না রিজার্ভ ব্যাঙ্কের।” ব্যাঙ্ক অফ বরোদার মুখ্য অর্থনীতিবিদ রূপা রেগে নিটসার অবশ্য বলেন, “মূল্যবৃদ্ধি কমার অন্যতম কারণ চাহিদায় মন্দা। আর, এই হার এখনও যথেষ্ট বেশি।” তবে ডিসেম্বরে না-কমালেও জানুয়ারিতে সুদ ছাঁটাইয়ের সম্ভাবনা আরও বাড়ল বলেই মনে করেন তিনি।
শীর্ষ ব্যাঙ্ক সুদ কমানোর সিদ্ধান্ত আরও একটু দেরিতে নেবে বলে মন্তব্য মুম্বইয়ে রয়্যাল ব্যাঙ্ক অফ স্কটল্যান্ডের অর্থনীতিবিদ গৌরব কপূরের। তিনি মনে করেন, “গত বারের চড়া হারের ভিত্তিতে হিসাব করায় মূল্যবৃদ্ধি এত নেমেছে। মাস দু’য়েক তা আর তেমন নামবে না। সুতরাং জানুয়ারির পরেই সুদ কমতে পারে।” তবে অক্টোবর পর্যন্ত মূল্যবৃদ্ধি নিম্নমুখী থাকবে বলে কপূর আশাবাদী। একই মত সিঙ্গাপুরে বার্কলে ক্যাপিটালের অর্থনীতিবিদ রাহুল বাজোরিয়ার। মার্চের মধ্যে মূল্যবৃদ্ধিকে ৬.৫-৬.৭৫ শতাংশে বেঁধে ফেলা যাবে বলে ইঙ্গিত কপূরের। মূল্যবৃদ্ধি স্বস্তিজনক পর্যায়ের খুব কাছে চলে এসেছে বলে মনে করছেন নয়াদিল্লিতে এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের মুখ্য অর্থনীতিবিদ অভীক বরুয়াও। |