দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা কংগ্রেস সভাপতির গাড়িতে দুষ্কৃতী হামলার অভিযোগের ঘটনার নিন্দায় সরব হল ডান-বাম সব রাজনৈতিক দল। পাশাপাশি, ওই ঘটনায় গাড়ি আটকে ভাঙচুর, হামলা, হুমকি ও টাকা ছিনতাইয়ের মামলা রুজু হয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।” অভিযোগ, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৫ টা নাগাদ বালুরঘাট শহরের পুলিশ লাইনের কাছে রাজ্য সড়কের উপর জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলাঞ্জন রায়ের গাড়ি আটকে হামলা চালানো হয়। গাড়িতে নীলাঞ্জনবাবু ছিলেন না। চালক গাড়িটি নিয়ে স্টেশনে যাচ্ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের নেতা ওমপ্রকাশ মিশ্রকে আনতে। চালক সঞ্জয় দাসের অভিযোগ, “তিনটি বাইকে চেপে ৭-৮ জন দুষ্কৃতী সামনে এসে গাড়িটিকে রাস্তায় আটকে নীলাঞ্জনবাবুর খোঁজ করে তাঁকে খুনের হুমকি দেয়। প্রত্যেকের হাতে ছিল লোহার রড, পাইপগান ও রিভলবার গাড়িতে নীলাঞ্জনবাবু নেই জানালে দুষ্কৃতীরা গাড়ির দরজা খুলে পরীক্ষা করে তাকে টেনে নামিয়ে মাথায় রিভলবার ঠেকিয়ে গাড়ির উপর চড়াও হয়। রড দিয়ে গাড়ির জানলার কাচ ভেঙে ১ মাসের মধ্যে নীলাঞ্জনবাবুকে খুন করা হবে বলে শাসায়। পরে পেট্রল ভরার জন্য গাড়িতে থাকা ২ হাজার টাকা ছিনিয়ে পালিয়ে যায়।” দুষ্কৃতীরা হেলমেট পড়ে থাকায় কাউকে চিনতে পারেননি বলে চালক সঞ্জয়য়বাবু পুলিশকে জানিয়েছেন। প্রদেশ কংগ্রেস নেতা ওমপ্রকাশ মিশ্র অভিযোগ করেন, “দক্ষিণ দিনাজপুরে রাজনৈতিক মদতে পুষ্ট দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। দলের জেলা সভাপতির গাড়িতে হামলার ঘটনা বিচ্ছিন্ন নয়। মনে হচ্ছে পুলিশ ও প্রশাসন রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব করছে।” জেলা সভাপতি নীলাঞ্জন রায়ের হাত ধরে দক্ষিণ দিনাজপুরে কংগ্রেস ঘুরে দাঁড়ানোয় সুপরিকল্পিত চক্রান্ত করে এদিন হামলা করা হয়েছে বলে ওমপ্রকাশবাবু দাবি করেছেন। তিনি জানান, বিষয়টি প্রদেশ সভাপতিকে জানানো হয়েছে। কংগ্রেস ভবনে এক সাংবাদিক বৈঠক করে জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলাঞ্জন রায় বলেন, “ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত নই।” জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক প্রবীর রায় বলেন, “জেলা কংগ্রেস সভাপতির গাড়িতে হামলার ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। এটা কখনও কাম্য নয়। আমরা চাই পুলিশ তদন্ত করে দুষ্কৃতীদের ধরুক।” আরএসপির জেলা সম্পাদক বিশ্বনাথ চৌধুরী বলেন, “অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। অন্য মত ও দলের লোক বলে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে হামলার সংস্কৃতি জেলায় ছিল না। প্রকৃত অপরাধীদের ধরে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দিতে হবে।” জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদক মানবেশ চৌধুরীর এ দিন বলেছেন, “নতুন সরকার আসার পর যে ভাবে রাজনৈতিক সংস্কৃতি তছনছ হয়ে পড়ছে তা চিন্তার বিষয়।” |