পিপিপি মডেলে হাসপাতাল চত্বরেই একটি ওষুধের দোকান খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জেলা স্বাস্থ্য দফতর। প্রাথমিক ভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, অক্টোবরের শুরুতেই সেই দোকান চালুও হয়ে যাবে। কিন্তু তা না হওয়ায় ক্ষুব্ধ মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন রোগী ও তাঁর পরিজনেরা। তাঁদের অভিযোগ, হাসপাতালে ওষুধের দোকান থাকলে কম দামে ওষুধ মিলবে। সাধারণ মানুষের সুবিধার কথা ভেবেই রাজ্য সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু হাসপাতালের গড়িমসিতে দোকান চালু হচ্ছে না। তবে হাসপাতাল সুপার যুগল কর বলেন, “এখন আর সমস্যা নেই। ওষুধ দোকানের জন্য ঘর দেওয়া হয়েছে। সেখানেই দোকানের পরিকাঠামো গড়ে উঠবে। যত দ্রুত সম্ভব দোকান চালু করার চেষ্টা চলছে।”
হাসপাতাল সূত্রে খবর, শুরুতে কোথায় দোকান হবে তা নিয়ে একটা সমস্যা দেখা দিয়েছিল। তাছাড়া যে সংস্থা দোকান করবে তারা দোকান খোলার জন্য ওই শুরুতে ১ হাজার বর্গফুট জায়গা চেয়েছিল। কিন্তু, একসঙ্গে এই পরিমান জায়গা মিলছিল না। তাই সমস্যা দেখা দেয়। পরে অবশ্য হাসপাতালের নতুন ভবনের একতলার একটি ৪০০ বর্গফুটের ঘর তাদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। এখানেই ওই সংস্থা দোকানের পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজ করবে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। এমনকী ইতিমধ্যে ওই সংস্থার প্রতিনিধিরা এসে সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখেছেন। আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। বরাদ্দ ঘরে দোকানের পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজও শুরু হচ্ছে। দোকান চালু হয়ে গেলে বাইরে ওষুধ কিনতে যেতে হবে না এবং পকেটেও টান পড়বে না। হাসপাতালের এক আধিকারিকের বক্তব্য, “কিছু ওষুধের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ ছাড় মিলবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ২৫-৩০ শতাংশ ছাড় মিলবে। অনেকেই উপকৃত হবেন।”
স্বাস্থ্য ব্যবস্থার হাল ফেরাতে এখন সরকারি-বেসরকারি (পিপিপি মডেল) উদ্যোগে জোর দিয়েছে রাজ্য সরকার। পিপিপি মডেলে হাসপাতালগুলিতে বিভিন্ন পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে। ‘পিছিয়ে পড়া’ পশ্চিম মেদিনীপুরেও এমনই উদ্যোগ করা হয়েছে। হাসপাতালগুলিতে যে সংখ্যক রোগী ভর্তি হন, তাঁদের অনেকেরই অভাব-অনটন রয়েছে। বাজারে অধিকাংশ ওষুধপত্রের দাম চড়া হওয়ায় ওষুধ কিনতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে পিপিপি মডেলে বেশ কয়েকটি হাসপাতালে ওষুধ দোকান খোলার পরিকল্পনা করে রাজ্য সরকার। সেই মতোই মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ওষুধ দোকান চালু হওয়ার কথা। যে সংস্থাগুলি ওই পরিকাঠামো গড়ে তুলছে, তারা সরকারি নির্দেশ মেনে কাজ করছেন। এ ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা থাকলে তা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতরও। পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সবিতেন্দ্র পাত্র বলেন, “হাসপাতালে পিপিপি মডেলেই একটি ওষুধ দোকান খোলা হবে। এতে রোগী ও তাঁদের পরিবারের লোকেরা উপকৃত হবেন।” মেদিনীপুর মেডিক্যালে ওষুধ দোকান খোলার জন্য এক বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের। চুক্তির কিছুদিন পরে এ নিয়ে স্বাস্থ্য ভবনে এক বৈঠকও হয়। বৈঠকে যত দ্রুত সম্ভব মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ওষুধ দোকান খোলা নিয়েই আলোচনা হয়। |