পাশ-ফেল না-ই থাক। প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বছরে তিনটি পরীক্ষা নেওয়ার সুপারিশ করল স্কুলশিক্ষা দফতরের তৈরি বিশেষজ্ঞ কমিটি। ধারাবাহিক মূল্যায়নও চালিয়ে যেতে চায় তারা। সরকারি সূত্রের খবর, আগামী শিক্ষাবর্ষেই মূল্যায়নের নতুন পদ্ধতি চালু করার কথা ভাবা হচ্ছে। কিন্তু এই ব্যবস্থার সারবত্তা নিয়ে অনেক অভিজ্ঞ শিক্ষকেরই সংশয় আছে। তাঁরা বলছেন, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাশ-ফেল না-থাকলে পরীক্ষা যত বারই হোক, তা গুরুত্বহীন হয়ে পড়তে বাধ্য।
এখন প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রতি বছর তিনটি পর্বে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা হয়। তিনটি পর্বের শেষে ফল বেরোয় তিন বার। আর ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাঁচটি ইউনিট টেস্ট এবং একটি বার্ষিক পরীক্ষা চালু আছে। নতুন ব্যবস্থায় প্রথম থেকে একেবারে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ফি-বছর সাকুল্যে তিনটিই পরীক্ষার কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা বাড়তি তিনটি পরীক্ষা থেকে রেহাই পেতে চলেছে।
স্কুল স্তরে পড়ুয়াদের মূল্যায়নের নতুন পদ্ধতি কী হবে, সেই ব্যাপারে সুপারিশ করার ভার দেওয়া হয়েছিল বিশেষজ্ঞ কমিটিকে। শুক্রবার সরকারের কাছে জমা দেওয়া প্রস্তাবে ওই কমিটি জানিয়েছে, প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণিতে তিনটি পর্বে লিখিত পরীক্ষা হোক। বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান অভীক মজুমদার বলেন, “পার্বিক পরীক্ষা তো থাকছেই। সেই সঙ্গে ক্লাসরুমে পড়ুয়ার যোগদানের ভিত্তিতে ধারাবাহিক নিরবচ্ছিন্ন মূল্যায়নের ব্যবস্থাও থাকবে। বিভিন্ন বিষয়ে ধারণা এবং সেগুলির প্রয়োগ, ক্লাসের পঠনপাঠনে অংশগ্রহণ ইত্যাদির নিরিখেও মূল্যায়ন করা হবে ছাত্রছাত্রীদের।” কী ভাবে এই মূল্যায়ন হবে, কর্মশালায় তা শেখানো হবে শিক্ষকদের। অভীকবাবু জানান, তিনটি পর্বের পরীক্ষার শেষে ফল প্রকাশ করা হবে। তাঁর আশা, এর ফলে বছরভর মন দিয়ে পড়াশোনা করবে ছাত্রছাত্রীরা। যদিও অভিজ্ঞ শিক্ষকদের অনেকেই এই ব্যবস্থার কার্যকারিতা সম্পর্কে সংশয় প্রকাশ করেছেন। বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুনন্দ সান্যাল বলেন, “পাশ-ফেল না-থাকলে মূল্যায়নের গুরুত্বই থাকে না। তা সে পরীক্ষা যে-ভাবেই হোক না কেন!” শিক্ষার অধিকার সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় আইন অনুযায়ী প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত কাউকে ফেল করানো যাবে না। রাজ্যও কেন্দ্রের এই আইন মেনে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাশ-ফেল তুলে দিয়েছে। |