|
|
|
|
তেহট্ট-কাণ্ড |
তেহট্টে তৃণমূলের নেতাদের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ রাজ্য নেতৃত্ব |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ তেহট্টের খাস হাউলিয়া মোড়ে তৃণমূলের মিছিলে হেঁটেছেন দলের স্থানীয় সব গোষ্ঠীর নেতারাই। বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ তেহট্ট থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে কৃষ্ণনগরের কাছে জাভাতেই প্রশাসন আটকে দিল কংগ্রেসের প্রতিমন্ত্রী
দীপা দাশমুন্সিকে।
|
তেহট্টে তৃণমূলের মিছিল। |
দু’টি দলের জন্য কেন প্রশাসনের এমন দু’রকম ব্যবহার? প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তেহট্ট সদরেই যে তৃণমূলের মিছিল হচ্ছে, সে কথা প্রথমে জানতেনই না কেউ। মিছিলের খবর আসা মাত্রই এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট পদমর্যাদার এক অফিসারকে পাঠিয়ে মিছিল বন্ধ করে দেওয়া হয়। কোনও জমায়েত করতেও নিষেধ
করা হয় তখন।
কিন্তু ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা তো জারি ছিল সকাল থেকেই। তারপরেও কেন মিছিল করলেন তৃণমূল নেতারা? তেহট্ট ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিলীপ পোদ্দারের কথায়, “আমরা জানতামই না, প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে। প্রশাসনের উচিত ছিল, সে কথা আমাদের জানানো।” প্রশাসনের তরফে জবাব, সকালে ১৪৪ ধারা জারি করা হলেও তা সকলকে জানাতে জানাতে একটু বেলা হয়ে গিয়েছিল।
তবে তেহট্টের মানুষ অবাক হয়েই এই দিন ওই মিছিল দেখেছেন। মিছিলে পাশাপাশি হাঁটছিলেন তেহট্টে ‘বিবদমান’ তিন তৃণমূল নেতা সঞ্জয় দত্ত, জুলফিকার শেখ ও তাপস সাহা। কলকাতার তৃণমূল ভবন থেকে নির্দেশ ছিল, তেহট্টে দলীয় নেতৃত্বকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। কলকাতার তৃণমূল ভবনে দলের নেতারা তেহট্ট কাণ্ডের কাটাছেঁড়া করতে গিয়ে বারবার এই তিন নেতার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় বলেন, “আমাদের দলীয় স্তরে কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে ঠিকই। তবে তা সংবাদ মাধ্যমে বলা যাবে না। তেহট্টে দলীয় নেতৃত্বকে এক সঙ্গে কাজ করতে বলা হয়েছে।” |
বনধ সিপিএমের। |
রুদ্ধ পথ। জাভায় ক্ষুব্ধ মন্ত্রী দীপা দাশমুন্সি। |
|
বস্তুত, তেহট্টের স্থানীয় নেতৃত্বের ভূমিকায় রীতিমত ক্ষুব্ধ তৃণমূল ভবন। দলীয় সভানেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোটা বিষয়টি দেখার জন্য মুকুলবাবুকে নির্দেশ দিয়েছেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এমন ঘটনায় দলের ভাবমূর্তিতে প্রভাব পড়ার আশঙ্কাও করেছে তৃণমূল। দলীয় নেত্রীর নির্দেশেই মুকুলবাবু এবং রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি বিষয়টি নিয়ে নদিয়া জেলা নেতৃত্ব ও তেহট্ট ব্লক নেতৃত্বকে ‘ভর্ৎসনা’ও করেছেন। প্রশ্ন উঠেছে নদিয়া জেলা নেতৃত্বের ভুমিকা নিয়েও। দলের জেলা সভাপতি পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা নবদ্বীপের বিধায়ক। তিনি সাধারণত কৃষ্ণনগরে থেকে দলীয় সংগঠন চালান। কিন্তু পলাশিপাড়া, তেহট্ট ও করিমপুর কেন্দ্রে দলের টিকিটে যাঁরা দাঁড়িয়েছিলেন এলাকায় তাঁদের ‘প্রভাব নেই’। ভোটে হেরে যাওয়ার পর থেকে এলাকায় তাঁরা কার্যত যাননি। এর ফলে ওই এলাকার তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা কার্যত ‘নেতৃত্বহীনতায় ভুগছেন’। তাপসবাবু জেলা যুব সভাপতি থাকায় কিছুটা কাজ হলেও বর্তমান যুব সভাপতি দেবব্রত মিত্রের ভূমিকা নিয়েও ‘প্রশ্ন’ রয়েছে দলের মধ্যেই।
এর প্রেক্ষিতেই তৃণমূল ভবন থেকে সোজাসুজি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তেহট্টে। এক সঙ্গে মিছিল করতে বলা হয়েছে তাপস, জুলফিকার ও সঞ্জয়কে। দলীয় নেতৃত্বের বক্তব্য, কোনও ভাবে উপদলীয় কাজে যদি তৃণমূলের ক্ষতি হয় তবে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। |
—নিজস্ব চিত্র |
|
|
|
|
|