|
|
|
|
কৃষি দফতরের মনিটরিং বৈঠক |
দফতরে পড়ে অর্থ, এগোয়নি কাজ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
অর্থ রয়েছে। কিন্তু কাজ এগোচ্ছে না। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কৃষি দফতরের অবস্থাটা এমনই। অভিযোগ, কৃষি দফতরের উদাসীনতাতেই দফতরের হাল এমন।
এই পরিস্থিতিতে জেলার কোন দফতরে কেমন কাজ হচ্ছে, কোন কাজ মন্থর গতিতে চলছে তা খতিয়ে দেখতেই শুক্রবার সমস্ত দফতরকে নিয়ে বৈঠক করেন জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত, অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) সুমন ঘোষ। জেলার মনিটরিং কমিটির এই বৈঠকে সমস্ত প্রকল্পগুলি দ্রুত রূপায়নের জন্য কৃষি দফতরকে সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহনের কথা বলা হয়। এরই সঙ্গে জেলা সংখ্যালঘু ভবনের কাজটিও যাতে দ্রুত শেষ করা যায় সে ব্যাপারে পূর্ত দফতরের বিদ্যাসাগর ডিভিসনকে বলা হয়েছে। অন্যান্য দফতরের কাজগুলি ধীর গতিতে এগোলেও কৃষি দফতরের কাজে প্রশাসনিক কর্তারা একেবারেই সন্তুষ্ট হতে পারেননি। অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) বলেন, “জেলার কোন কাজ কেমন চলছে তা খতিয়ে দেখতেই বৈঠক ডাকা হয়েছিল। যে সব ক্ষেত্রে কাজের গতি মন্থর সেই সব জায়গায় দ্রুত প্রকল্প রূপায়নে জোর দিতে বলা হয়েছে। সেই কাজগুলি সত্যিই এগোচ্ছে কিনা সে ব্যাপারে আমরাও তীক্ষ্ন নজর রাখব।”
কৃষি দফতরের প্রধান দু’টি কাজের মধ্যে একটি হল কিষাণ ক্রেডিট কার্ড বিলি। কিন্তু সেই কাজে ততটা অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায়নি বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। ‘ন্যাশনাল ফুড সিকিওরিটি মিশন’ থেকে ২০১১-১২ সালে ৪ কোটি ৭৬ লক্ষ ৪১ হাজার টাকা পেয়েছিল জেলা কৃষি দফতর। এর আগে ২০১০-১১ আর্থিক বছরে ওই প্রকল্পেরই ৩ কোটি ৪৮ লক্ষ ৪৬ হাজার টাকা খরচ করতে পারেনি কৃষি দফতর। ফলে সব মিলিয়ে গত বছরে ওই প্রকল্পে খরচের লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় ৮ কোটি ২৫ লক্ষ ২৭ হাজার টাকা। যার মধ্যে খরচ হয়েছে মাত্র ২ কোটি ৪০ লক্ষ ১৮ হাজার টাকা। আর ‘কমিটেড এক্সপেণ্ডিচার’ অর্থাৎ প্রকল্পের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে, কাজও চলছে, কাজ শেষ না হওয়ায় টাকা দেওয়া হয়নি-এ ধরনের খরচ দেখানো হয়েছে আরও প্রায় ৪ কোটি টাকা।
রাষ্ট্রীয় কৃষি বিকাশ যোজনার ক্ষেত্রেও একই হাল কৃষি দফতরের। ২০১০-২০১১ আর্থিক বছরে এই প্রকল্পে কৃষি দফতরের বরাদ্দ ছিল ৫ কোটি ২৯ লক্ষ টাকা। তার মধ্যে পেয়েছিল ১ কোটি ৫৯ লক্ষ টাকা। ২০১১-১২ সালে এই প্রকল্পে বরাদ্দ ছিল ২ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা। তার মধ্যে পেয়েছিল ১ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা। যার কোনও টাকাই খরচ করতে পারেনি কৃষি দফতর। শুধু ২ বছরের ‘কমিটেড এক্সপেণ্ডিচার’ হিসাব দেখানো হয়েছে ২ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আগের বছরগুলিতেও একই ঘটনা ঘটেছে। এমনকী ২০০৯-১০ আর্থিক বছরে ২০ লক্ষ টাকা ও ২০০৮-০৯ আর্থিক বছরে ৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা ফেরতও দিতে হয়েছে। অভিযোগ, কৃষি দফতরের উদাসীনতাতেই জেলার জন্য বরাদ্দ কোটি কোটি টাকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে জেলা। ব্যাহত হচ্ছে কৃষির উন্নয়ন। অথচ, ওই টাকায় সহজেই মাটিতে অনুখাদ্য দিয়ে, কলিচুন দিয়ে মাটির স্বাস্থ্য ভাল করা যেত, ক্ষারত্ব কমানো যেত। বাড়ত ফলনও। এছাড়াও কৃষকদের বীজ, কৃষি সরঞ্জামও দেওয়া যেত কম খরচে। এরই পাশাপাশি ইন্টিগ্রেটেড অ্যাকশন প্ল্যান, অনগ্রসর শ্রেণি কল্যান দফতর, স্কুল হস্টেল, স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নয়ন সহ প্রভৃতি ক্ষেত্রে যাতে উন্নয়নের কাজে দ্রুত অগ্রগতি ঘটানো যায় সে ব্যাপারে প্রতিটি দফতরকে নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক। |
|
|
|
|
|